ফ্রান্সে এক কৃষ্ণাঙ্গকে মারধর করায় তিন পুলিশকে বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। প্যারিসের কেন্দ্রে থাকা ওই ব্যক্তি একজন সঙ্গীত প্রযোজক। সম্প্রতি তাকে পুলিশ মারধর করছে এমন একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরই ওই সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
Advertisement
গত শনিবার ওই কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে মারধর করা হয়। এরপর সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই বেসামরিক নাগরিকের বিরুদ্ধে ফরাসি নিরাপত্তা বাহিনীর আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এ নিয়ে বেশ উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে, গত সোমবার প্যারিসের একটি অস্থায়ী শরণার্থী শিবির ভেঙে দেয় পুলিশ। সেসময় পুলিশের বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা কোনো ঘটনায় বিচারের মুখোমুখি হলে তা গণমাধ্যমে প্রচার নিষিদ্ধের বিষয়ে সম্প্রতি একটি আইন আনার চেষ্টা করছে ফ্রান্স। এমন সময়ই নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের ঘটনা সামনে আসছে।
সমালোচকরা বলছেন, এমন কিছু না ঘটলে আগের সময়গুলোতে যেসব ঘটনা ঘটেছে সেগুলো সামনে আসত না। বৃহস্পতিবার ফরাসি ফুটবল তারকা কিলিয়ান ম্যাপে কৃষ্ণাঙ্গ নির্যাতনের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি নিজেও একজন কৃষ্ণাঙ্গ।
Advertisement
শনিবারের ওই ঘটনায় নির্যাতনের শিকার কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির একটি রক্তাক্ত ছবি টুইট করে তিনি লিখেছেন, এমন ঘটনা সহ্য করা যায় না, এই সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়, বর্ণবাদকে না বলুন। ওই কৃষ্ণাঙ্গ প্রযোজকের পুরো পরিচয় জানা যায়নি। শুধুমাত্র এতটুকুই জানা গেছে যে, তার নাম মাইকেল।
অনলাইন নিউজ সাইট লুপসাইডারে বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যামেরায় ধারণকৃত ওই ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, তিন পুলিশ কর্মকর্তা এক কৃষ্ণাঙ্গকে লাথি মারছে, মারধর করছে। ওই ব্যক্তির অপরাধ ছিল তিনি মাস্ক পরেননি।
মাইকেল নামের ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাকে প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে মারধর করা হয়েছে। তিনি এই ঘটনাকে বর্ণবাদী আচরণ বলে উল্লেখ করেছেন। তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল এবং তার বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু প্রসিকিউটর এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার নিজের আইনজীবীকে নিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করতে পুলিশের সদর দফতরে যান মাইকের। সেখানে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, যেসব লোকজনের আমাকে রক্ষা করার কথা ছিল তারাই আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। আমি এমন কিছু করিনি যার কারণে আমার সঙ্গে এমন আচরণ করা যায়। তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী আমি এই তিন পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি চাই।
Advertisement
এদিকে প্যারিসের মেয়র অ্যানি হিদালগো বলেন, তিনি এমন অসহনীয় ঘটনায় তিনি গভীরভাবে আহত হয়েছেন। অপরদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেরাল্ড ডারমানিন ফরাসি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, তিনি ওই কর্মকর্তাদের বরখাস্তের জন্য চাপ দেবেন। তিনি বলেছেন, তারা নিরাপত্তা বাহিনীর পোশাকের অসম্মান করেছে।
টিটিএন/এমএস