জাতীয় সংসদ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশকে-(টিআইবি) তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস বিফ্রিং তিনি এ আল্টিমেটাম দেন। তিনি প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্যে বলেন, যে যার সীমানার মধ্যে কথা বলতে হবে। এনজিও কি আরেকটি বিকল্প সরকার?আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আরো বলেন, আমি সংসদেও বলেছি, আজও বলছি- তিন দিন সময় দেওয়া হয়েছে, এরমধ্যে টিআইবি ভুল স্বীকার করে ক্ষমা না চাইলে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে সম্মত হবে কমিটি।তিনি বলেন, বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম) রেগুলেশন বিল-২০১৫ কমিটিতে রয়েছে, বিলও চূড়ান্ত হয়ে রয়েছে, এখন পাস হবে। তাই তিন দিন সময় দিয়েছি ড. ইফতেখারকে, তিনি যদি তার ভুল স্বীকার করে ক্ষমা না চান তাহলে এই আইনের ধারা সংযুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া সরকার চাইলে তাদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনেই ব্যবস্থা নিতে পারবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে এক সময় এনজিওরা বিদেশ থেকে পয়সা এনে গরীবদের মাঝে ওষুধ বিতরণ করতো। এ এনজিও এখন ফুলে ফেঁপে এমন নমুনা ধরছে যেন আমার ঘরের ছাও আমারে খেতে চায়। এখন তারা সরকারের প্যারলাল হয়ে গেছে, দেশের প্যারলাল হয়ে গেছে। সুরঞ্জিত বলেন, আমাদের অন্যকোনো এনজিওর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। কেবল মাত্র টিআইবির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ। টিআইবির ড. ইফতেখার সাম্প্রতিককালে কিছু কথা বলেছেন। যেটা গ্রহণযোগ্য না। দেশের সংসদকে এ ধরণের নিয়ে তামশা করা, মজা করা বিশ্বের কোথাও নেই। তিনি বলেন, গণতন্ত্র একদিনে হয়নি। বৃটিশ গণতন্ত্রও ৫শ` বছরের পুরানো। আমরাও চেষ্টা করছি। এর বিরুদ্ধে মতবিরোধ থাকতে পারে। যেমন নির্বাচন বিএনপি করতে পারে নাই। বিষয়টি বিএনপি-আওয়ামী লীগ বুঝবে। কিন্তু সংসদ আছে। এর বিষয়ে তারা কথা বলছে। সেটা রাজনৈতিক দলের বিষয়। কিন্তু তা নিয়ে এনজিও কোনো কথা বলতে পারে না। তার দেশসেবার কোনো কাজ নেই। তারা যদি দেশসেবা করতে চায় এখানে এসে নিবন্ধিত হয়ে রাজনীতি করতে পারেন। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং অশালীন ভাষায় তারা কথা বলতে পারবেন না। তিনি বলেন, ইফতেখার সাহেব সংসদ নিয়ে তামাশা করেছেন। উনি কে? উনি এনজিও। বাহির থেকে টাকা আসে তাই সংসদ নিয়ে তার কথা অশালীন। সংসদ ‘পুতুল নাচের নাট্যশালা’ এটা কোনো প্রাতিষ্ঠানিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ভাষা না, এটা একটা অশালীন ভাষা। সংসদ সংবিধানের অংশ, জনগণ এটা নির্বাচিত করে। তাই তিনি তার মন্তব্যের মাধ্যমে সীমা অতিক্রম করেছেন। তারা গবেষণা করবেন। কিন্তু কাউকে অপমান করার অধিকার তাদের কেউ দেয় নাই। আমাদের যে সংশোধনী আসছে কেউ যদি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বা সরকারে বিরুদ্ধে কোন সাংর্ঘষিক মন্তব্য করে সরকার চাইলে যেকোনো সময় ব্যবস্থা নিতে পারবে। তিনি বলেন, তারা যদি রাজনীতি করতে চায়, রাজনৈতিক দলে যোগদান করুক। আমরাওতো জেলজুলুম খাটছি। এরপর এখানে আসছি। গাছের টাও খাবেন তলের টাও কুড়াবেন। দুইটাতো একসাথে চলবে না। তিনি বলেন, এখন অন্যান্য এনজিওদেরকে দায়িত্ব নিতে হবে। বলতে হবে ইফতেখার তাদের মুখপাত্র কি না? তারা যদি বলে সে আমাদের মুখপাত্র না। তাহলে তাদেরটা আমরা একভাবে দেখবো। উল্লেখ্য, সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে সার্বিক বিবেচনায় জাতীয় সংসদকে ‘পুতুল নাচের নাট্যশালা’ ও বিরোধী দলকে ‘কথিত বিরোধী দল’ বলে মন্তব্য করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ- টিআইবি।এইচএস/এসকেডি/আরআইপি
Advertisement