জাগো জবস

কর্মক্ষেত্রে দ্রুত উন্নতি করবেন যেভাবে

জিএম সাইদুর রহমান মিন্টু। মারস স্পোর্টস ওয়্যার লিমিটেডের প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা (এইচআর, অ্যাডমিন অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স)। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মিন্টু আরএমজি সেক্টরেই মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগে ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০০৭ সালের শুরুতে। ক্যারিয়ার ও সফলতা নিয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বেনজির আবরার—

Advertisement

প্রথমেই নিজের সম্পর্কে বলুন—সাইদুর রহমান মিন্টু: প্রায় ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে মানবসম্পদ উন্নয়ন পেশাজীবী হিসেবে কাজ করেছি অনেক প্রতিষ্ঠানে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছি। এরপর প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগে এমবিএ ও সরকারি ইনস্টিটিউট বিআইএম থেকে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর একবছর মেয়াদী ডিপ্লোমা আর বিজিএমইএ থেকে সোশ্যাল কমপ্লায়েন্সের ওপর ডিপ্লোমা লাভ করি। এ ছাড়াও আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছি। মানবসম্পদ উন্নয়ন, কমপ্লায়েন্স ও শ্রম আইন বিষয়ে অর্ধশত প্রশিক্ষণ ও কর্মশালায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি।

তরুণদের জন্য আইটি দক্ষতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ? সাইদুর রহমান মিন্টু: তরুণরা যদি পড়াশোনার পাশাপাশি কম্পিউটারে বিভিন্ন দক্ষতা যেমন- ভিডিও এডিটিং, ফটোগ্রাফি ও আইটি কোর্স করে, তবে চাকরির বাজারে অন্য দশজনের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকবে! বর্তমানে অনেক সফটওয়্যার তৈরি হয়েছে, যা মানুষের কাজ কমিয়ে দিয়েছে। মানবসম্পদ বিভাগেই বর্তমানে এইচআরআইএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে কর্মীদের ডাটা নির্ভুলভাবে সংরক্ষণ করা হয়। সব ক্ষেত্রেই উৎপাদন ব্যবস্থাপনা, সাপ্লাইচেইন ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান, অর্থবিজ্ঞান প্রতিটি জায়গায়ই প্রযুক্তি ছাড়া কাজ অসম্ভব!

এখন কেউ ঘণ্টার পর ঘণ্টা ম্যানুয়ালি রিপোর্ট তৈরি করে না; রোবট তৈরি করার জন্য সফটওয়্যার আছে এখন! একজন তরুণ যদি স্বাভাবিক প্রযুক্তি জ্ঞান না রাখে, তাহলে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপকের পক্ষে তাকে খুব অল্প সময়ে একটি বিষয়ের সফটওয়্যার প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার হবে! আগামীর পৃথিবীতে তথ্যপ্রযুক্তির ওপর জ্ঞান না থাকা মানে এ যুগের বর্ণমালা না জানার মতই! তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ কর্মী অন্য কর্মীদের পেছনে ফেলে কর্মক্ষেত্রে দ্রুত উন্নতি করবে। এককথায় আইসিটির কারণে বিশ্ব আজ হাতের মুঠোয়। সুতরাং আইটি দক্ষতা তরুণদের জন্য খুব জরুরি।

Advertisement

সামাজিক কী কী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন?সাইদুর রহমান মিন্টু: আমার বাবা চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজে পড়ার সময় কক্সবাজার জেলা ছাত্র ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আমিও স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজে এইচএসসি পড়ার সময় কক্সবাজার জেলা ছাত্র ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে আমাদের সেশনের কয়েকজনের উদ্যোগে গঠিত হয় কক্সবাজার জেলা স্টুডেন্টস ফোরাম। যেখানে সর্বসম্মতিক্রমে আহ্বায়ক ছিলাম। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চকরিয়া-পেকুয়া ছাত্র ফোরামের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম সভাপতি ছিলাম।

বর্তমানে পদাধিকার বলে (সাবেক সভাপতি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চকরিয়া-পেকুয়া ছাত্র ফোরামের উপদেষ্টা, চট্টগ্রামের চকরিয়া সমিতির লাইফ মেম্বার, চট্টগ্রামের কক্সবাজার সমিতি, বাংলাদেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন পেশাজীবীদের সরকার অনুমোদিত প্রথম ও সর্ববৃহৎ সংগঠন বিএসএইচআরএম- চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের প্রথম নির্বাচনে নির্বাচিত ইসি মেম্বার ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (চলমান), চট্টগ্রাম কমপ্লায়েন্স সোসাইটির একমাত্র উপদেষ্টা, সরকারিভাবে মানবসম্পদ পেশাজীবীদের একমাত্র ইনস্টিটিউট বিআইএম অ্যালামনাই সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ইসি মেম্বার ও বর্তমানে লাইফ মেম্বার, সহ-সভাপতি, লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগং ব্লু স্কাই আর বর্তমান ইয়ুথ ক্যারিয়ার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের উপদেষ্টাসহ অসংখ্য সামাজিক কাজে যুক্ত আছি।

একজন তরুণ কিভাবে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য নিজেকে তৈরি করতে পারে? সাইদুর রহমান মিন্টু: তরুণদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য কিছু অত্যাবশ্যকীয় দক্ষতা অনেক প্রয়োজন। যা হলো- চিন্তা; সৃজনশীলতা; খাপ-খাওয়ানোর জ্ঞান; আবেগীয় বুদ্ধি; বিচার এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা। আর শুধু ভালো সিজিপিএ দিয়ে ভবিষ্যতে ভালো চাকরি পাওয়া দুষ্কর হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের শুরুর দিকে এখন পৃথিবী। তাই একটি দেশের তরুণরা যত বেশি তথ্যপ্রযুক্তিতে নিজেকে যুক্ত করবে; সেই দেশের ভবিষ্যৎ তত বেশি উজ্জ্বল হবে।

যার জ্বলন্ত উদাহরণ চীন। আমাদের চোখের সামনেই গড়ে উঠেছে। নিয়মিত পড়ালেখার পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তির উপর ভালো জ্ঞান অর্জন করতে হলে আপনাকে খুঁজে নিতে হবে, নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। এ ছাড়াও গ্রামে কৃষি কাজে ও মৎস্য চাষে মনোনিবেশ করতে হবে। পড়াশোনা করলে যে শুধু চাকরি করতে হবে, তা নয়। নিজে উদ্যোক্তা হয়ে অন্য দশ জনকে চাকরি দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কোনোভাবেই হতাশ হয়ে মাদকের নেশায় হারিয়ে যাওয়া যাবে না। কোনো কাজ একবার না পারলে দশবার চেষ্টা করতে হবে। তবেই সফলতা আসবে।

Advertisement

এসইউ/জেআইএম