বোমা ফাটানোর মতো এক অভিযোগ। যে অভিযোগে উড়ে যেতে বসেছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের সভাপতি খোদ সৌরভ গাঙ্গুলি।
Advertisement
অভিযোগের মূল বক্তব্য, ‘সৌরভ গাঙ্গুলি নন, বিসিসিআই পরিচালনা করছেন ভারতের বর্তমান সময়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ। তিনি অবশ্য সহযোগিতা নেন সাবেক বিসিসিআই সভাপতি ও সাবেক আইসিসি চেয়ারম্যান এন শ্রীনিবাসনের।’
বোমাটা ফাটিয়েছেন এমন এক ব্যক্তি, যিনি বিসিসিআইয়ের ভেতরের অনেক খবরই জানেন। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশিত লোধা কমিশনের সুপারিশে যে অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি বিসিসিআই পরিচালনা করেছিল, সেই কমিটিকে বলা হতো ‘কমিটি অব এবডিমিনিস্ট্রেটর (সিওএ)।’ সেই সিওএ’রই অন্যতম সদস্য ছিলেন রামচন্দ্র গুহা। তিনিই বিসিসিআইয়ের ভেতরের এ খবর ফাঁস করে দিলেন।
অর্থাৎ সৌরভ গাঙ্গুলি বিসিসিআইয়ের সভাপতির চেয়ারে বসে আছেন একজন পাপেট হিসেবে। পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছেন অমিত শাহ এবং এন শ্রীনিবাসন। প্রসঙ্গত অমিত শাহের ছেলে জয় শাহ আবার সৌরভ গাঙ্গুলি কমিটির সেক্রেটারিও বটে।
Advertisement
রামচন্দ্র গুহা একই সঙ্গে এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, ভারতীয় ক্রিকেটে স্বজনপ্রীতিই হচ্ছে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয়। এই স্বজনপ্রীতির কারণে বিসিসিআইয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে পারে।
২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের আদেশে সিওএ সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান রামচন্দ্র গুহা। তার কাজ ছিল বিসিসিআইয়ের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। যদিও শেষ পর্যন্ত ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি এই পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন।
রামচন্দ্র গুহা একটি বই লিখেছেন। যেটা সম্প্রতি প্রকাশ হয়। ‘দ্য কমনওয়েলথ অব ক্রিকেট : অ্যা লাইফলং লাভ অ্যাফেয়ার উইথ দ্য মোস্ট সাবটল অ্যান্ড সফিস্টিকেটেড গেম নোন টু হিউম্যানকাইন্ড’- নামে বইটি প্রকাশিত হয়। যেখানে তার নিজের সময়ে ভারতীয় ক্রিকেট কিংবা বিশ্ব ক্রিকেটে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনারই বর্ণনা দেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি মুম্বাই মিররের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে গুহা অভিযোগ করেন, সাবেক বিসিসিআই সভাপতি এন শ্রীনিবাসন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’ই ভারতীয় ক্রিকেটকে পরিচালনা করেন। একই সঙ্গে তিনি বিসিসিআইয়ের সিস্টেমের সমালোচনা করেন, রঞ্জি ট্রফিতে খেলা ক্রিকেটারদের সময় মতো পারিশ্রমিক পরিশোধ করতে না পারার জন্য।
Advertisement
গুহা বলেন, ‘এন শ্রীনিবাসন এবং অমিত শাহই মূলত বর্তমান সময়ে বিসিসিআইকে পরিচালনা করছেন। আর রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাগুলো পরিচালিত হচ্ছে কারো ছেলে, কারো মেয়ে দ্বারা। বোর্ডের মধ্যে যে কারণে ষড়যন্ত্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। স্বজনপ্রীতি ব্যাপকহারে বেড়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে খারাপ লাগার বিষয় হচ্ছে, রঞ্জি ট্রফিতে খেলা ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক পরিশোধে দীর্ঘ সময় লাগানো। যে কারণে সংস্কার চালানো হয়েছিল, তার ছিটেফোটাও ঘটলো না ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে।’
আইএইচএস/এমকেএইচ