মোংলায় ধান চাষে নারী কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছেন লজিক (লোকাল গভর্নমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ)। লজিকের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ, সার, বীজ বিতরণ, সার্বক্ষণিক তদারকি ও পরামর্শেই নারী কৃষকেরা তাদের বর্গা নেয়া জমিতে ধানের বাম্পার ফলন ফলিয়েছেন।
Advertisement
মাঠ জুড়ে পাকা সোনালি ধান কাটা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে মাঠে উপস্থিত হয়ে সেই ধান কাটার উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকারের (বাগেরহাট) উপ-পরিচালক দেব প্রসাদ পাল। সেই সাথে মাঠে উপস্থিত নারী কৃষকেরাও এক সাথে কাটতে শুরু করেন ধান।
ধান কাটা নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ওই নারী কৃষকেরা। পাকা ধান কেটে ঘরে তুলবেন তাই আনন্দের শেষ নেই তাদের মাঝে। তারা বললেন, লজিক আমাদেরকে নগদ টাকা দিয়ে অন্যের জমি বগার নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
সেই জমিতে চাষাবাদ করে আমরা ধানের বাম্পার ফলন পেয়েছি। এখন কেটে তা কাড়াই করে ঘরে তুলবো। নতুন ধানের চালে পায়েস, পিঠা খাবো। লজিক আমাদের পাশে না দাঁড়ালে কোনোভাবেই আমরা এভাবে ফসল ফলিয়ে লাভবান হতে পারতাম না। কখন চিন্তাও করিনি এই লবণ পানি ও মাটিতে এত সুন্দর ধান হবে।
Advertisement
লজিকের সার্বিক সহায়তার কারণেই এবার আমরা প্রথম নারীরা মাঠে চাষ করে ধান ফলিয়ে সেগুলো নিজেরাই কেটে ঘরে নিচ্ছি। আগামীতে লজিক আমাদের পাশে থাকবে এবং আমরা যাতে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্যদিয়ে জীবনযাপন করতে পারি সেই দাবিই জানাচ্ছি লজিকের কাছে।
লজিক প্রকল্পের আওতায় মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের ৪৫ জন নারী দলীয় কার্যক্রমমে মাধ্যমে জমি লিজ নিয়ে ৪৩ বিঘা জমিতে লবণাক্ত সহনশীল ধান চাষের মাধ্যমে জলবায়ু সহনশীল জীবিকা উপার্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। লজিকের কর্মকতা-কর্মচারীরা যাচাই বাছাই করেই জলবায়ু জনিত বিপদাপন্ন এ সকল নারী পরিবারদেরকে চিহ্নিত করে দলে দলে বিভক্ত করে কার্যক্ষম করে তুলেছেন।
৪৩ বিঘা জমিতে ধান চাষের জন্য ৪৫ জন নারীর প্রত্যেককে ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২৯ হাজার ৪৮০ টাকা করে দিয়েছেন লজিক। সেই টাকা দিয়েই জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করে তারা সোনার ফসল ফলিয়েছেন।
লজিকের সহায়তায় ধান চাষাবাদ শেষে পাকা ধান কাটা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লজিক প্রকল্পের ডিস্ট্রিক ক্লাইমেট চেঞ্জ কো-আরডিনেটর মো. মজিবর রহমান, ডিস্ট্রিক গ্রান্ট মনিটর এন্ড ফ্যাসিলিটেটর ফেরদৌসী শারমিন ও উপজেলা কৃষি অফিসার অনিমেষ কুমার বালা।
Advertisement
লজিক মুলত স্থানীয় সরকার, ইউএনডিপি, ইউএনসিডিএফ, ইইউ ও সিডার সহযোগীতামূলক সমন্বিত প্রকল্প। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো জলবায়ু জনিত বিপদাপন্ন ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী, স্থানীয় সরকার ও সুশীল সমাজ সংগঠন সমূহের জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানো বিষয়ক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং অর্থায়নে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। আর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন স্থানীয় সরকার বিভাগ।
মো. এরশাদ হোসেন রনি/এমএমএফ/পিআর