কুরআনুল কারিমের ঘোষণায় তাওবাহ-ইসতেগফার অনেক উত্তম ইবাদত। ইসতেগফার কবুলের জন্য নিজের খাবার হালাল হওয়া জরুরি তেমনি তাওবাহকারীর পোশাকও হতে হবে হালাল। তবেই দৃঢ় বিশ্বাস রাখা যায় যে, বান্দার তাওবাহ-ইসতেগফার কবুল হবে। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-
Advertisement
- প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন, যে ব্যক্তি নিজ আমল দেখে খুশি হতে চায়, সে যেন বেশি বেশি ইসতেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করে।’ (সহিহুল জামে)
- ‘প্রত্যেক আদম সন্তানই গোনাহগার। আর গোনাহগারদের মধ্যে তাওবাহকারীরাই সর্বোত্তম।’ (ইবনে মাজাহ)
- অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘সুসংবাদ তার জন্য, যে তার আমলনামায় অনেক বেশি ইসতেগফার পেয়েছে।’ (সহিহুল জামে)
Advertisement
তাই মুমিন বান্দা হাদিসের অনুসরণ ও অনুকরণে নিজেকে গোনাহমুক্ত রাখতে ৩টি উপায়ে বেশি বেশি তাওবাহ-ইসতেগফারে নিয়োজিত রাখবে। তাহলো-
> মুখের তাওবাহ-ইসতেগফারশুধু জিহ্বার মাধ্যমে তথা মুখে মুখে ইসতেগফার করা। আমলের ক্ষেত্রে এটি মর্যাদা কম। তবে তা ইসতেগফার হিসেবে গণ্য হবে।
> অন্তরের তাওবাহ-ইসতেগফারআল্লাহর কাছে উঁচু মর্যাদার ক্ষশা প্রার্থনা বা ইসতেগফার হচ্ছে মানুষের অন্তরের ইসতেগফার। মন থেকে ইসতেগফার করলে আল্লাহ তাআলা খুশি হন এবং কবুল করেন।
> মুখ ও মনের তাওবাহ-ইসতেগফারসবচেয়ে মর্যাদার, ফজিলতপূর্ণ সর্বোত্তম এবং শ্রেষ্ঠ ইসতেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা হচ্ছে মুখ ও মনের সমন্বয়ে করা ইসতেগফার। এতে গোনাহ থেকে মুক্তি লাভে অন্তরে অনুশোচনা করা হয় আর সে অভিব্যক্তি মুখ থেকে বের হতে থাকে। উভয়টি যখন একসঙ্গে প্রকাশ হয় তখন তা শ্রেষ্ঠ ইসতেগফারে রূপ নেয়।
Advertisement
ইসতেগফারের সময় মনে অনুভূতি যেমন হবেইসতেগফার করার সময় ৩টি বিষয় বেশি বিশ স্মরণ রাখাও হৃদয়ে অনুভূতি জাগ্রত রাখা জরুরি। আর তাতে যথাযথ তাওবাহ বা ইসতেগফার হয়ে থাকে। তাহলো-
> হে আল্লাহ! আপনি মহাশক্তিশালী। আপনার সঙ্গে আমরা অবাধ্যতা করেছি; অথচ আমরা আপনার এক অতি ক্ষুদ্র সৃষ্টি। সুতরাং আমাদের ক্ষমা করে দিন।
> হে আল্লাহ! আমরা আপনার দেয়া নেয়ামত- চোখ, কান, হাত, পা ইত্যাদি ব্যবহার করছি। অথচ আপনারই অবাধ্যতা নিয়োজিত হয়ে অকৃতজ্ঞ বান্দায় পরিণত হয়েছি। সুতরাং আপনার রহমত কামনায় ক্ষমা চাই হে আল্লাহ!- হে আল্লাহ! আপনার নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আপনার ভয় ও লজ্জাকে উপেক্ষা করে গোনাহ করছি। অথচ গোনাহ করার ক্ষেত্রে মানুষকে ভয় ও লজ্জায় করছি। হে আল্লাহ! এটা অনেক বড় অবাধ্যতা। আমাদের ক্ষমা করুন; হে আল্লাহ!
যখনই এ তিনটি উপায় ও অনুভূতি নিয়ে মানুষ তাওবাহ-ইসতেগফার করবে, তাওবাহ-ইসতেগফারে ক্ষমা লাভে ব্যাকুলতা থাকবে তবেই আল্লাহর কাছে ক্ষমা লাভের সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, ক্ষমা লাভে উল্লেখিত ৩টি উপায় ও অনুভূতি অনুসরণ করেই আল্লাহর কাছে তাওবাহ-ইসতেগফার করা জরুরি। আশা করায় মহান আল্লাহ বান্দার তাওবাহ-ইসতেগফার কবুল করে নেবেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত উপায় ও অনুভূতির সঙ্গে তাওবাহ-ইসতেগফার করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস