বিশেষ প্রতিবেদন

সক্ষমতার শেষ সীমায় চট্টগ্রাম বন্দর, মাতারবাড়ীতে নতুন স্বপ্ন

দেশের আমদানি-রফতানির ৯২ ভাগ পরিচালিত হয় চট্টগ্রাম বন্দর ঘিরে। আজ বাংলাদেশের যত সমৃদ্ধি, যত অর্জন সবটুকু চট্টগ্রাম বন্দরের অবদান। সময়ে সঙ্গে সঙ্গে এই বন্দরের সক্ষমতাও বাড়ানোর চেষ্টা হয়েছে বারবার। কিন্তু কর্ণফুলী নদী ঘিরে গড়ে ওঠা এই বন্দরের সেবা দেয়ার চূড়ান্ত সীমা যেন ফুরিয়ে এসেছে।

Advertisement

বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দর তার সক্ষমতার শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছে। কিন্তু দেশের অর্থনীতি যেভাবে বিকশিত হচ্ছে, তার সঙ্গে তাল মেলাতে নতুন বন্দরের প্রয়োজন। জাতির আগামীর সেই স্বপ্ন পূরণ করবে ‘মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর’।

বিষয়টি স্পষ্ট করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর এখন আমাদের সময়ের দাবি। চট্টগ্রাম বন্দর আমাদের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি। আমাদের আমদানি-রফতানির ৯২ ভাগই এই বন্দর দিয়ে হয়ে থাকে। কিন্তু দেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের এগিয়ে চলা সম্ভব হচ্ছে না। এর সক্ষমতা একেবারে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দরের বিকল্প হিসেবে আরও বন্দর গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয়া হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর ও পতেঙ্গা বে-টার্মিনাল নিয়ে আমাদের কার্যক্রম চলছে।’

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের মাস্টারপ্ল্যান

Advertisement

আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর প্রকল্প একটি সময়োচিত পদক্ষেপ। বঙ্গোপসাগর ভারত মহাসাগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখন আমাদের অর্থনীতির যে গতি, আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যেভাবে হচ্ছে, এ অবস্থায় কর্ণফুলী নদীভিত্তিক চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর নির্ভর করার অবস্থায় আমরা আর নেই। গভীর সমুদ্রবন্দর আমাদের সময়ের দাবি ছিল। অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য আমাদের এই বন্দরের প্রয়োজন ছিল। এটি একটি অবশ্যম্ভাবী দাবি। এটি ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা আর বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর এবারের লয়েড তালিকায় (শিপিং বিষয়ে বিশ্বের প্রাচীনতম জার্নাল লয়েড'স লিস্ট) ৫৮তম বন্দর হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। আমাদের গড় প্রবৃদ্ধি হচ্ছে ৮ থেকে ১০ শতাংশ। যেখানে সারাবিশ্বের প্রথম ১০০টি বন্দরের প্রবৃদ্ধি হচ্ছে গড়ে ৪ শতাংশ। সে হিসাবে আমরা (চট্টগ্রাম বন্দর) তাদের চেয়ে দ্বিগুণ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ভারত ও মিয়ানমার ছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের প্রায় পুরোটাই সম্পন্ন হয় বঙ্গোপসাগর দিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গোপসাগর উপকূলে একটি গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ভূ-রাজনীতির কারণে তা এতদিন সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

জাপানি সংবাদপত্র ‘নাইকি’র এশিয়ান রিভিউতে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রকল্প এলাকা

Advertisement

ভারত মহাসাগরের উত্তরপ্রান্তে অবস্থিত বঙ্গোপসাগরের সামগ্রিক আয়তন প্রায় ২২ লাখ বর্গকিলোমিটার। শ্রীলঙ্কার উপকূলবর্তী এলাকা ধরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বাঁক ঘুরে এর বিস্তার থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার মানচিত্র বরাবর দক্ষিণে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা অবধি। বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ লোক বাস করছে এ উপসাগর ঘিরে থাকা দেশগুলোতে। এছাড়া বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ দুটি অর্থনৈতিক জোটের মেলবন্ধন তৈরি করেছে বঙ্গোপসাগর।

মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক এবং চট্টগ্রাম বন্দর সদস্য (প্রশাসন) মো. জাফর আলম বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর এখন তার সক্ষমতার সবটুকু ব্যবহার করছে। এটিকে আরও সম্প্রসারিত করার কোনো সুযোগ নেই। তাই চট্টগ্রাম বন্দরের অংশ হিসেবেই মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরকে উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যে উপকূলের উত্তরে মীরসরাই থেকে দক্ষিণে মহেশখালি-কুতুবদিয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরের সীমানা বৃদ্ধি করেছি।’

তিনি বলেন, ‘মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরে ৩০০ ও ৪৬০ মিটার দীর্ঘ দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। আট থেকে ১০ হাজার কনটেইনার পরিবহনের উপযোগী জাহাজ ভেড়ানো যাবে এই বন্দরে। ফলে বাংলাদেশ ছাড়াও আমাদের প্রতিবেশী যেসব দেশের বন্দর সুবিধা নেই তারাও মাতারবাড়ী বন্দর ব্যবহার করতে পারবে। এছাড়া কলকাতা ও সেভেন সিস্টার খ্যাত ভারতের রাজ্যগুলো আমাদের বন্দর ব্যবহারে দীর্ঘদিন ধরে আগ্রহ দেখাচ্ছে।’

মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রিভিউ

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের ধারণা যেভাবে এলো

বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে এ যাবত জাপানের সবচেয়ে বড় উদ্যোগ বিগ-বি— বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট। এর আওতায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) মাতারবাড়ীতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কোল জেটি করতে গিয়ে সেখানে একটি বাণিজ্যিক বন্দর নির্মাণের সম্ভাব্যতা দেখতে পায়। মাতারবাড়ী অঞ্চলে সমুদ্রের গভীরতা ১৫.৩ মিটার। তবে খনন শেষে প্রাথমিকভাবে মাতারবাড়ী চ্যানেলে সারাবছরই ন্যূনতম ১৮ মিটার গভীরতা পাওয়া যাবে। চ্যানেলের বাইরে সাগরের গভীরতা ৩০ মিটার। ফলে এ বন্দরে অনায়াসে বড় আকৃতির মাদার ভেসেল নোঙর করতে পারবে।

চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরে দুই দেশের মধ্যে বিগ-বি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মাতারবাড়ীতে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই ফলশ্রুতিতে জাইকার অর্থায়নে নিপ্পন কোয়েই ও আমাদের স্থানীয় একটি ফার্ম-কে এই প্রকল্পের জন্য কনসালট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ করা হয়। গতকাল (১৬ নভেম্বর) থেকে বন্দরের চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। ইনশাআল্লাহ ২০২৬ সালের মধ্যে আমরা বন্দর কার্যক্রম শুরু করতে পারব।’

মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর কেন

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ। এ দেশের অর্থনীতি যে হারে বিকশিত হচ্ছে তার সঙ্গে তাল মেলাতে বাংলাদেশ-কে অবশ্যই সমুদ্র অর্থনীতিতে শক্তিশালী অবস্থান নিতে হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর অন্য যেকোনো আঞ্চলিক বন্দরের তুলনায় ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের চাহিদা পূরণে অধিকতর সুবিধা দেবে। বেশি সংখ্যক দেশ এ বাণিজ্যিক বন্দর ব্যবহার করতে পারবে। ভারতের সেভেন সিস্টার্স (উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য), কলকাতা ও হলদিয়া বন্দর, মিয়ানমার, স্থলবেষ্টিত নেপাল ও ভুটান তাদের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে এ বন্দর ব্যবহারে আকৃষ্ট হবে। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর-পূর্ব এশিয়ার কেন্দ্রস্থলে অবস্থানের কারণে আসিয়ান ও উপসাগরীয় দেশগুলোরও এ বন্দর ব্যবহারের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া তেল-গ্যাস ও অন্যান্য সমুদ্রসম্পদ আহরণ ও ব্যবহারের সুযোগ সম্প্রসারিত হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমাদের যে অর্থনৈতিক অগ্রগতি, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্যই এই বন্দর। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার পর্যন্ত যে অর্থনৈতিক বেল্ট গড়ে উঠছে, তাতে মাতারবাড়ী বন্দর এই অঞ্চল তথা দেশের এবং এই বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের সামগ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। ব্লু ইকোনমি বা সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে যে কাজ শুরু হয়েছে, মাতারবাড়ী বন্দরের মাধ্যমে এই অর্থনীতি আরও বেগবান হবে।’

মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. জাফর আলম বলেন, ‘এ সমুদ্রবন্দরে ১৮ মিটার গভীরতার জাহাজ অনায়াসেই প্রবেশ করতে পারবে। যখন মাতারবাড়ী বন্দর তার অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করবে, তখন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের শিল্প খাতে বিনিয়োগে আরও বেশি আগ্রহ দেখাবেন। একইসঙ্গে যোগাযোগ, কর্মসংস্থান ও ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। বাংলাদেশের সুষম উন্নয়নের পথে মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর হবে একটি মাইলফলক। সামগ্রিকভাবে এটি বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।’

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের নকশা

কেমন হবে মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর

রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘দুটা স্টেইজে বন্দরের কার্যক্রম শেষ হবে। স্টেইজ-১ ও স্টেইজ-২। স্টেইজ-১ এর আরও দুটি ধাপ থাকবে। প্রথমে একটি কনটেইনার টার্মিনাল ও মাল্টিপারপাস টার্মিনাল দিয়ে কার্যক্রম শুরু হবে। ধারাবাহিকভাবে আমাদের টার্মিনাল বাড়তে থাকবে। আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে ২০২৬ সালে মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর দিয়ে এক মিলিয়ন ঘন টিউজ কনটেইনার পরিবহন করা। ২০৩৬ সালে আমাদের ছয় মিলিয়ন ঘন টিউজ কনটেইনার পরিবহন করতে হবে। ওই সময় মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরের কোনো বিকল্প থাকবে না। ২০৪১ সালে ইনশাআল্লাহ আমরা উন্নত দেশে উন্নীত হব, তখন আমরা এই বন্দর দিয়ে সাত মিলিয়ন ঘন টিউজ কনটেইনার পরিবহন করতে পারব। ওই লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে মিল রেখেই এই বন্দরের অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে।’

জাফর আলম বলেন, ‘মাতারবাড়ী বন্দর হবে গ্রিন ফিল্ড পোর্ট। এখানে পরিকল্পনা করেই বন্দরটি গড়ে তোলা হচ্ছে। এটি হবে একটি আধুনিক বন্দর। যেহেতু এখানে বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে, সেহেতু ব্যবসায়ীরা এতে আকৃষ্ট হবেন। তবে দূরত্ব একটি ফ্যাক্টর হতে পারে। এই বন্দরের কনটেইনার টার্মিনালে আট হাজার কনটেইনার নিয়ে জাহাজ আসতে পারবে। আরেকটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল করা হচ্ছে, যেখানে কার্গো ভেসেল এবং কনটেইনারবাহী জাহাজও আসবে।’

অর্থছাড়ের ঝামেলা নেই মাতারবাড়ীতে

বাংলাদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যায় অর্থছাড়ের ঝামেলার কারণে। কিন্তু মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বন্দর নির্মাণে অর্থছাড়ের কোনো ঝামেলা নেই।

মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর এলাকা

মাতারবাড়ীতে সমুদ্রবন্দর নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে মোট ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। এই প্রকল্পে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার ঋণ দিচ্ছে জাপান। বাকি অর্থের মধ্যে সরকার দিচ্ছে দুই হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা, পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে দুই হাজার ২১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. জাফর আলম বলেন, ‘মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর নির্মাণে অর্থায়নের কোনো ঝামেলা নেই। খুবই সহজ শর্তে জাইকা আমাদের ১২ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। যা আগামী ২০ বছরের মধ্যে আমাদের পরিশোধ করতে হবে। বাকি অর্থ বাংলাদেশ সরকার ও চট্টগ্রাম বন্দর যৌথভাবে দিচ্ছে।’

প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোয়েই’র দলপ্রধান হোতানি জানান, পুরো প্রকল্পটি দুটি ধাপে বিভক্ত। প্রথম ধাপে নকশা প্রণয়ন, দরপত্র তৈরিতে সহায়তা ও নির্মাণকাজ তদারকি এবং দ্বিতীয় ধাপে বন্দরের যন্ত্রপাতি ও পরিচালন কাজের জন্য জলযান ক্রয়ের সেবা দেয়া। জাপানের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি যেন ব্যবহার করা যায় সে বিষয়ে প্রাধান্য দেয়া হবে।

সম্প্রতি মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর এলাকা পরিদর্শনে যান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা

হোতানি বলেন, ‘আমরা মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পের বিস্তারিত নকশা তৈরি ও প্রকল্প উন্নয়ন তদারকির জন্য জাপানের ৩০ জন বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী, বাংলাদেশের ১৮ জন অভিজ্ঞ প্রকৌশলী এবং দেশীয় আরও ২১ জন কর্মী নিয়ে এ প্রকল্পের কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। আমাদের বিশেষজ্ঞ দল বন্দরের নকশা প্রণয়ন, দরপত্র তৈরিতে সহায়তা ও নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্ব পালন করবে।’

তিনি আরও বলেন, ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ নকশা প্রণয়ন করা হবে। ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পের দরপত্র তৈরিতে সহায়তা করা হবে। ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকল্পের নির্মাণকাজ তদারকি করা হবে।

আবু আজাদ/এইচএ/এমএআর/পিআর