সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মিতালী রায়। নিজ বাসার ছাদে গড়ে তুলেছেন বাগান। সবজি, ফলদ ও ঔষধিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে বাগানে। বেশিরভাগ সময় কাটে ছাদ কৃষিতে। বাগানে উৎপাদিত ফল ও সবজি একদিকে যেমন নিজেদের চাহিদা মেটায়, অপরদিকে আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীর মাঝেও বিতরণ করছেন। তার ছাদ কৃষি দেখে অনেকেই উৎসাহী হয়ে উঠছেন।
Advertisement
উপজেলা সদরের আবাসিক এলাকায় মিতালী রায় ২০১৮ সালে ছাদ বাগান করেন। ১৪০ বর্গমিটারের ছাদে শুরুর দিকে অল্প কিছু ফলের গাছ দিয়ে শুরু করেন। বর্তমানে বাগানে ৪২ জাতের ফলজ, ৪ জাতের ঔষধি এবং ৮ জাতের সবজিসহ শতাধিক গাছ রয়েছে। ছাদজুড়েই রয়েছে কয়েক প্রজাতির আম, কাঁঠাল, লিচু, কমলা, মাল্টা, রামবুটান, কলা, ড্রাগন ফলের গাছ। রয়েছে টুনিমানকুনি, অ্যালোভেরা, রাসুন্ডার মতো ঔষধি গাছও।
মিতালী রায় জানান, ছাদ কৃষিতে তেমন পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় না। খরচও হয় সামান্য। তার এ বাগানে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকার মতো। বাগান থেকে উৎপাদিত ফল ও সবজি নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীকে বিতরণ করেছেন।
মিতালীর ছাদ বাগানে রয়েছে থাই কাটিমন জাতের আম গাছ। এ গাছ থেকে বারোমাস আম পাওয়া যায়। রয়েছে বছরে দুইবার ফল দেওয়া ইন্ডিয়ান দু’ফলা আম গাছ, থাই কাঁঠাল, আফ্রিকার কালো জাতের কিউজাই আম গাছ। এসব নতুন গাছে ফল আসবে আগামী বছর।
Advertisement
এসব গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকেন মিতালী। তার স্বামী সরকারি চাকরিজীবী অজিত কুমার রায়সহ পরিবারের অন্যরাও বাগান পরিচর্যায় সময় দেন।
মিতালী রায়ের ছাদ কৃষি দেখে অনেকই উৎসাহী হচ্ছেন। পরামর্শ নিচ্ছেন কিভাবে নিজ নিজ ছাদে গড়ে তুলবেন বাগান। যাতে নিজ হাতে তৈরি বাগান থেকে পরিবারের ফল ও সবজির চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়।
প্রতিবেশী রাখা রানী মজুমদার বলেন, ‘আমার বাসার পাশেই মিতালী রায় বাড়ির ছাদে খুব সুন্দর ছাদ বাগান তৈরি করেছেন। ছাদ বাগান আমার খুব পছন্দ। তার ছাদ কৃষি দেখে আমরা উৎসাহিত হচ্ছি। চেষ্টা করব আমাদের বাসার ছাদে এ ধরনের ছাদ বাগান করতে।’
মিতা তালুকদার বলেন, ‘আমাদের পাশের বাসার ছাদে অসাধারণ একটি বাগান করেছেন মিতালী রায়। তার বাগান থেকে ফুল এনে ঠাকুর পূজা করি। অনেকে তুলসি পাতা ও ফুল নিয়ে যায়।’
Advertisement
অলক পাল বলেন, ‘মিতালী রায় যেভাবে ছাদে বাগান করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। ছাদে তার মতো এমন একটি বাগান করার ইচ্ছে আছে।’
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রমেন্দ্র কুমার কর জাগো নিউজকে বলেন, ‘মিতালী রায় ছাদে বিভিন্ন জাতের ফুল, সবজি ও গাছের চারা দিয়ে অসাধারণ বাগান করেছেন। আমি মনে করি, তিনি আগ্রহী কৃষাণী। তিনি দায়িত্ব নিয়ে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি, ফল, ঔষধি গাছ চাষ ও পরিচর্যা করেন। তার মতো যদি অন্যরাও ছাদগুলো ফেলে না রেখে সবজি অথবা ফলের বাগান করেন; তারাও লাভবান হতে পারবেন।’
লিপসন আহমেদ/এআরএ/এসইউ/জেআইএম