দেশজুড়ে

বন্য শূকরের উৎপাতে দিশেহারা কৃষকরা

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সুতাং অঞ্চলে বন্য শূকরের উৎপাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। গত ৪-৫ মাস ধরে একের পর এক জমির পাকা ধান খেয়ে সাবাড় করছে শূকরের দল। এদের কবল থেকে রেহাই পেতে কৃষকরা রাতের বেলায় প্রতিটি জমিতে মশাল জ্বালিয়ে রাখেন।

Advertisement

জানা গেছে, রাত হলেই পাহাড় থেকে খাদ্যের সন্ধানে দল বেধে কখনও ধানক্ষেতে, কখনওবা গ্রামের ভেতরে ঢুকে হানা দেয় শুকররা। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সুরাবই,পুরাসুন্দা ও লাদিয়া গ্রামে তাদের উৎপাত বেশি।

শূকরের দল পাকা ধানের পাশাপাশি বাঁশের নতুন চারা এবং বিভিন্ন ধরনের শস্য সাবাড় করছে। এই বন্যপ্রাণীর ভয়ে গ্রামের শিশুরা ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারে না। অনেক সময় ক্ষেত-খামারে ঢুকে খাবার না পেলে রাতের আঁধারে মানুষের ঘরে ঢোকারও চেষ্টা করে শূকরেরা।

উপজেলার সুরাবই গ্রামের আব্দুর রহিম জজুম হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘বন্য শুকর খুবই হিংস্র প্রাণী। এদের থেকে বাঁচার পথ দেখছি না।’

Advertisement

একই গ্রামের মো. তওহিদ মিয়া বলেন, ‘গ্রামের পাশেই পাহাড় থাকায় এদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এদের জন্য আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি আমরা। আমার দুই একর জমির পাকা ধান নষ্ট করেছে। এমনকি ধানের খড়ও শেষ করে গেছে শূকরগুলো।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুতাং অঞ্চলে কমপক্ষে ৫০ একর পাকা ধানের ক্ষতি করেছে শুকররা। এভাবে চলতে থাকলে স্থানীয়রা অনাহারে থাকার আশঙ্কা করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ৮-১০ বছর আগে সুরাবই গ্রামে একবার শুকর হানা দিয়েছিল। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় গুলি করে একটি শুকর মেরে ফেলা হয়েছিল। স্থানীয় কেউ কেউ মনে করছেন, পাহাড়ে শুকরদের খাদ্যের ঘাটতি থাকায় তারা খাবারের সন্ধানে এসে গ্রামে হানা দেয়। আবার অনেকে মনে করছেন এটা তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষকে আরও দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

Advertisement

হবিগঞ্জ বন বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, হয়তো বনে খাদ্য কমে গেছে, তাই তারা হানা দেয়। এদেরকে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিতে হবে। এই প্রাণীগুলোকে রক্ষার জন্য সরকারের নির্দেশ রয়েছে।

তবুও সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য বিষয়টি রেঞ্জ কর্মকর্তাকে বলা হবে বলে জানান ডিএফও।

এসএস/জেআইএম