বিনোদন

বাংলাভিশনে তারকাবহুল ধারবাহিক লড়াই

মধ্য উঠান, হঠাৎ ঘর থেকে দৌড়ে আসেন ছগির। বুকে হাত লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। একেবারে অচেতন। দেখে মনে হয় এইমাত্র পরপারে চলে গেলেন। বড় বউ-ছোট বউ দৌড়ে আসেন। শাপলা, জবার কান্নায় প্রতিবেশিদের জটলা জমে। কিন্তু বাবার মৃত্যুতে কোনো বিকার নেই দুই ছেলের। উল্টো পিন্টু-মিন্টুর ঝগড়া শুরু হয়। কে গোরস্থ করবে। কে শেষ বিদায় জানাবে। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয় বাবাকে নদীতে ফেলে দেয়া হবে! এই সংসারে এত দিনে যত্তসব অশান্তির মূলেই ছিল তাদের বাবা। তাই পিতা হিসেবে ছগিরের মৃত্যুর পরও এই শাস্তিই প্রাপ্য বলে ধারনা দুই পুত্রের। গ্রাম্য রাস্তায় যখন বাবাকে নিয়ে নদীর দিকে যাত্রা করে দুই ছেলে মিন্টু এবং পিন্টু পিছন পিছন কেঁদে ফেরে কলমি, শাপলা, জবা। কিন্তু পাষাণ দুই ভাইয়ের মন তাতেও গলছে না। শেষ পর্যন্ত ছগির যখন উঠে বসলো তখন দুই ছেলে পিন্টু মিন্টু পালিয়ে বাঁচলো। এভাবেই শুরু হয়েছে ধারাবাহিক নাটক লড়াইয়ের পর্ব।সম্প্রতি জনপ্রিয় ধারাবাহিক নির্মাতা আল হাজেন নির্মাণ করেছেন আরো একটি নতুন নাটক। ‘লড়াই’ নামের এই নাটকটি রচনা করেছেন মুহাম্মদ মামুন-অর-রশীদ। দর্শক নন্দিত দীর্ঘ ধারাবাহিক অলসপুর এর মধ্য দিয়ে মামুন-হাজেন জুটি পরিচিতি পায়। এরপর মামুন এবং হাজেন একসঙ্গে কাজ করেছেন পাথরের কান্না, চাঁন্দের গাড়ি ধারাবাহিকে। তারই ধারাবাহিকতায় মামুন-হাজেনের ৪র্থ দীর্ঘ ধারাবাহিক হতে যাচ্ছে ‘লড়াই’। লড়াই’ নাটকে ছগির চরিত্রে অভিনয় করছেন আমিরুল হক চৌধুরী। তারই দুই ছেলের চরিত্রে কাজ করছেন মোশারফ করিম আর রওনক হাসান। যৌবনের শুরুতে বড় বউ ওয়াহিদা মল্লিক জলিকে বিয়ে করেছিলেন ছগির। কিন্তু প্রথম স্ত্রীর দীর্ঘ দিনেও সন্তান না হওয়ায় তিনি আবারও বিয়ে করেন ছোট বউ চিত্রলেখা গুহকে। একই পরিবারের দুই শাখায় ছগিরের ছেলে মেয়ের সংখ্যা নয়টি। সাত মেয়ে আর দুই ছেলের বিশাল সংসার সামাল দিতে গিয়ে বেসামাল ছগির। নাটকটিতে মোশারফ করিমের বিপরীতে কাজ করছেন তার স্ত্রী জুঁই করিম। বাস্তবজীবনের রসায়ন ছাড়িয়ে ধারাবাহিক লড়াই এ ভিন্নভাবে নিজেকে ভেঙ্গে চুরে গড়েছেন জুঁই। তার অসাধারণ অভিনয় শৈলিতে দর্শকরা মুগ্ধ হবেন বলে আশা করছেন নাটকের পরিচালক আল হাজেন। নাটকটিতে একটি ব্যতিক্রমী চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিচি সোলায়মান। প্রচলিত চরিত্রের বাইরে গিয়ে রিচি এবার গ্রামের এক প্রভাবশালী নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। যে কি না একটু পলিটিক্সও করেন। নাটকে তার চরিত্রের নাম রুখসি। সব সময় তার পিছনে লোকজন থাকে। এরা তার ক্যাডার বাহিনী। সকলে সমীহ করে চলে রুখসিকে। রুখসির উপরটা ভিষণ কঠিন হলেও ভেতরটা খুব নরম। লড়াই এ পারিবারিক দ্বন্দ্ব এক সময় সমাজে ছড়িয়ে পড়ে। নাদিয়ার বাবা গুনিন মহসীন (আহনাসুল হক মিনু) আর জুঁই করিমের বাবা রমিজেল (মাহমুদুল ইসলাম মিঠু-বড়দা মিঠু) এর সঙ্গে ছগিরের ঝামেলা চরমে পৌঁছায়। আপাতত বেড়াতে আসা দুই জামাই ডা. এজাজ এবং আরফান আহমেদ সুবিধা আদায় করার চেষ্টায় ব্যস্ত। এসব কিছুর সঙ্গে ঘটতে থাকে সব মজার মজার ঘটনা। আর এগিয়ে চলে লড়াই এর গল্প। নাটকের রচয়িতা মুহাম্মদ মামুন-অর-রশীদ বলেন, ‘নাটকটিতে অন্তত ৫০টি চরিত্র নিয়ে আমরা কাজ করছি। সবগুলো চরিত্রের নিজস্বতা রয়েছে। এতগুলো চরিত্রর সমন্বয় করা একটি কঠিন কাজ। এরপরও আমরা দর্শকদের কথা মাথায় রেখে অভিনয় শিল্পীদের সংখ্যা বৃদ্ধি করার চিন্তা করছি। সাধারণত এমনটা অন্য নাটকে হয় না। এটি ধারাবাহিক লড়াই’র একটি বিশেষ দিক। আমরা চিন্তা করেছি চরিত্রগুলো বাস্তব জীবনকে যেন একেবারে ছুয়ে যায় সে চেষ্টা করতে। আশা করছি দর্শকরা আমাদের বিমুখ করবেন না।’নির্মাতা আল হাজেন জানালেন, আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনে প্রচার শুরু হচ্ছে ধারবাহিক নাটকটির। প্রতি বৃহস্পতি-শুক্র এবং শনি এই তিনদিন  রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে নাটকটি প্রচার হবে। এলএ/আরআইপি

Advertisement