সরকার ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) মিলে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, তাতে এ দেশের মানুষ একদিন নির্বাচনের কথা ভুলেই যাবে। আর সাধারণ মানুষকে যেভাবে ভোটবিমুখ করা হচ্ছে, তার মূল্য আওয়ামী লীগ সরকারকেও দিতে হবে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) রাতে ঢাকা-১৮ আসনের উপ-নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে জাগো নিউজের কাছে এ মতামত ব্যক্ত করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দীন।
ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ হাবিব হাসান জয়লাভ করেছেন। নৌকা প্রতীক নিয়ে ৭৫ হাজার ৮২০ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন তিনি। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৩৬৯ ভোট।
হাফিজ উদ্দীন বলেন, ঢাকার এই উপনির্বাচন হতাশাপূর্ণ নির্বাচনগুলোর ধারাবাহিকতার ফল। গত কয়েক বছরে নির্বাচনে যা দেখে আসছি, তারই প্রতিফলন এই নির্বাচনেও দেখা গেল।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, দুটি কারণে এই নির্বাচনে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। প্রথমত, করোনার প্রভাবে মানুষ ভোটকেন্দ্রে আসতে অনাগ্রহ দেখাতে পারে। দ্বিতীয়ত, মানুষ ধরেই নিয়েছে ভোট দিয়ে আর কোনো লাভ হবে না। নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে কোনো ফল আসবে না। এ কারণে সাধারণ মানুষ অযথা ভোট দিতে আসেনি। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার যেমনটি বলেছেন, বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরেও তিনি বিএনপির এজেন্ট খুঁজে পাননি। তার বক্তব্য থেকেই নির্বাচন পরিস্থিতি পরিষ্কার।
হাফিজ উদ্দীন বলেন, মানুষ আর ভোটে আগ্রহ দেখাবে না। সরকার ও নির্বাচন কমিশন মিলেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। মানুষ ভোট দিচ্ছে না, নির্বাচন নিয়ে উচ্ছ্বসিত না, এটি আওয়ামী লীগের জন্য আপাতত সুখের খবর হতে পারে। কিন্তু ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগকেও এর মূল্য দিতে হবে। কারণ দেশের মানুষ ভোট উপভোগ করে। সেই ভোট থেকে মানুষকে দূরে রাখার ফল কারো জন্যই ভালো হবে না।
এই বিশ্লেষক বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশন বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা নিতে পারে’। এমন বক্তব্য যিনি দিতে পারেন, তার কাছ থেকে বিবেচনাপ্রসূত কোনো কিছু আশা করা যায় না। গত দুটি জাতীয় নির্বাচনে কী হয়েছে তা বিশ্ববাসীও জানে। এরপরও এমন বক্তব্য লজ্জার। মানুষ হতাশ হয়েছে তার বক্তব্যে।
এএসএস/এমএসএইচ/পিআর
Advertisement