স্বাস্থ্য

৮ বছর আগের অপকর্ম ফাঁস, আদেশ জালিয়াতি করে হলেন সহযোগী অধ্যাপক

আট বছর আগে জালিয়াতি করে সহযোগী অধ্যাপক পদ বাগিয়ে নেয়া এক চিকিৎসকের চাঞ্চল্যকর অপকর্ম ফাঁস হয়ে গেছে। রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে কর্মরত এ চিকিৎসকের নাম ডা. মো. হুমায়ুন কবির। তিনি ডা. এ এস এম হুমায়ুন কবীর নামের একজন চিকিৎসকের চাকরি স্থায়ীকরণের আদেশ জালিয়াতি করে সেখানে নিজের নাম অর্ন্তভুক্ত করেছেন।

Advertisement

এমন জালিয়াতির দায়ে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ মোতাবেক বিভাগীয় মামলা (৮৩/২০২০) দায়ের হয়েছে। অসদাচরণের দায়ে তার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে জানাতে কারণ দর্শানোর (শো’কজ) নোটিশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান। এ বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে চান কি-না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে চিঠিতে।

গত ৫ নভেম্বর স্বাস্থ্য সচিব স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘যেহেতু আপনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. হুমায়ুন কবির (১১০০০১) স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পার-২ শাখার ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখের ১০৯ স্মারকে প্রকাশিত বিসিএস (স্বাস্থ্য ক্যাডার)-এর ২৫৫ জন কর্মকর্তার চাকরি স্থায়ীকরণের আদেশ জালিয়াতি করে ১০৯ ক্রমিক নম্বরে বর্ণিত ডা. এ এস এম হুমায়ুন কবীর (১১২৬২০)-এর স্থলে আপনার নিজের নাম ওই আদেশে অর্ন্তভুক্ত করেছেন।’

‘যেহেতু আপনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে সহযোগী অধ্যাপক পদের পদোন্নতির জন্য স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে আবেদন করেছেন, যেহেতু এ কর্মকাণ্ড সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা ১৯৭৯-এর পরিপন্থি এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৩ (খ)মোতাবেক অসদাচরণ হিসেবে গণ্য। সেহেতু আপনাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৩ (খ)মোতাবেক অসদাচরণের দায়ে অভিযুক্ত করা হলো এবং কেন আপনাকে উক্ত বিধিমালার অধীনে যথাপোযুক্ত দণ্ড দেয়া হবে না, সে বিষয়ে নোটিশপ্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিবের কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হলো এবং ব্যক্তিগত শুনানি চান কি-না, তা জানাতেও নির্দেশনা দেয়া হলো।’

Advertisement

এ অভিযোগের বিষয়ে জাগো নিউজের তরফ থেকে বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে ডা. মো. হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় তিনি কোনো কথা বলতে চান না। এ ব্যাপারে তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল পরিচালকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

এদিকে এ চিকিৎসকের অপকর্ম ফাঁস হওয়ার পর স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হইচই পড়ে গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক জাগো নিউজকে বলেন, ভালোভাবে পদোন্নতির ডকুমেন্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে এমন আরও অনেক হুমায়ুন কবিরের সন্ধান মিলবে।

এমইউ/এইচএ/জেআইএম

Advertisement