আন্তর্জাতিক

২৮ বছর পর নাগোরনো-কারাবাখে আজানের ধ্বনি

প্রায় তিন দশক পর আবারও আজানের ধ্বনি শোনা গেল নাগোরনো-কারাবাখের শুশা শহরে। গত সপ্তাহে শান্তিচুক্তির মাধ্যমে আর্মেনিয়া সরকার অঞ্চলটির দখল মুসলিমপ্রধান দেশ আজারবাইজানের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার পর বুধবার স্থানীয় একটি মসজিদে আজান দেন এক আজারি সেনা।

Advertisement

ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তুলেছে শুশায় আজান দেয়ার একটি ভিডিও। জানা যায়, সেনাবাহিনীর পোশাক পরা ওই ব্যক্তি ঐতিহাসিক ইউখারি গভহার আগা মসজিদে আজান দিচ্ছিলেন।

তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ’র তথ্যমতে, ১৯৯২ সালের ৮ মে শুশা দখল করে আর্মেনীয় বাহিনী। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে শহরটির গুরুত্ব অনেক।

গত সপ্তাহে সই হওয়া শান্তিচুক্তিতে শুশার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়া আজারিদের জন্য অনেক বড় জয় বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ গত ৮ নভেম্বর রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আর্মেনীয় বাহিনীর হাত থেকে নাগোরনো-কারাবাখের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, ২৮ বছর পর শুশায় আবারও আজান শোনা যাবে। আমরা বিশ্বের কাছে প্রমাণ করেছি, নাগোরনো-কারাবাখ ঐতিহাসিকভাবে আজারবাইজানের ভূমি।

নাগোরনো-কারাবাখের দখল নিয়ে গত সেপ্টেম্বরের শেষদিকে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। এর আগে কয়েক দফায় অস্ত্র ও যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও তা টেকেনি।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর থেকেই দেশ দু’টির মধ্যে এই বিবাদ চলছিল। তাদের এই সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ।

Advertisement

বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলটিকে আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের বলে স্বীকৃতি দেয়া হলেও এতদিন তার নিয়ন্ত্রণ ছিল আর্মেনীয় নৃ-গোষ্ঠীর হাতে। নব্বইয়ের দশকের যুদ্ধের পর অঞ্চলটির দখল নেয় আর্মেনিয়া।

নাগোরনো-কারাবাখ নিজেদের স্বাধীন ঘোষণা করলেও তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলেনি। ফলে আইনগতভাবে সেটি আজারবাইজানের অধীনেই থেকে যায়।

Azerbaijan’s Shusha welcomes Muslim call to prayer, adhan, for first time after almost 3 decades of Armenian rulehttps://t.co/daC2I4LTya pic.twitter.com/PcOGvV9xwq

— DAILY SABAH (@DailySabah) November 12, 2020

গত ২৭ সেপ্টেম্বর হঠাৎই ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয় আর্মেনীয়-আজারি সেনাদের মধ্যে। একাধিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও মাসব্যাপী চলে এ লড়াই, হতাহত হয় দুই পক্ষের অসংখ্য সেনা।

অবশেষে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় গত সোমবার আর্মেনিয়া সরকার নাগোরনো-কারাবাখের দখল ছেড়ে দিতে রাজি হলে একপ্রকার বিজয় নিশ্চিত হয় আজারবাইজানের।

কেএএ/জেআইএম