মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট ফাইজার এবং জার্মান প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেকের যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কিনতে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে কম দাম দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বুধবার জোটের পক্ষ থেকে ৩০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কেনার ঘোষণার পর বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দামের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এক ইইউ কর্মকর্তা।
Advertisement
নতুন চুক্তি অনুসারে, ফাইজার-বায়োএনটেকের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে ভ্যাকসিনের ২০ কোটি ডোজ কিনবে ইইউ-ভুক্ত ২৭টি দেশ। প্রয়োজনে আরও ১০ কোটি ডোজ কেনার সুযোগ থাকছে তাদের হাতে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ফাইজারের করোনা ভ্যাকসিনের প্রতি ডোজের জন্য ১৯ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলারের কম দাম দিচ্ছে ইউরোপ।
যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ফাইজারের কাছ থেকে ১০ কোটি ডোজ কিনতে একটি চুক্তি করেছে। তাদের জন্য প্রতি ডোজের দাম ধরা হয়েছে ১৯ দশমিক ৫০ ডলার।
Advertisement
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের আরও ১০ কোটি ডোজ কেনার সুযোগ রয়েছে ওই চুক্তিতে। তবে সেগুলোর জন্য ভ্যাকসিনের দাম কেমন হবে তা নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।
ইউরোপে করোনা ভ্যাকসিনের দামের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ফাইজার ও বায়োএনটেক কর্তৃপক্ষ। এমনকি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
গত জুনে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন গবেষণায় বায়োএনটেককে ১০ কোটি ইউরো ঋণ দিয়েছিল ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক। পরে সেপ্টেম্বরে প্রতিষ্ঠানটিকে আরও ৩৭ কোটি ৫০ লাখ ইউরো দেয় জামার্নির গবেষণা মন্ত্রণালয়।
ফাইজারের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডার লিয়েন বলেছেন, এই চতুর্থ চুক্তির মধ্য দিয়ে আমরা অত্যন্ত শক্তিশালী ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেটের পোর্টফোলিও একত্রিত করছি, সেগুলোর বেশিরভাগই পরীক্ষার অগ্রসর পর্যায়ে রয়েছে।
Advertisement
সম্প্রতি নিজেদের তৈরি ভ্যাকসিনে ৯০ শতাংশ কার্যকারিতা দাবি করেছে ফাইজার ও বায়োএনটেক। ছয়টি দেশে ৪৩ হাজার ৫০০ জন মানুষের দেহে ভ্যাকসিনটির পরীক্ষা চালিয়ে প্রাথমিকভাবে এই ফল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে তারা।
ভ্যাকসিনটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, এটি গ্রহণ করলে ৯০ শতাংশ মানুষ কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হবে না। সুরক্ষার পরীক্ষাতেও শতভাগ উতরে গেছে ভ্যাকসিনটি।
এরইমধ্যে ১৩টি দেশের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ফাইজার-বায়োএনটেকের। সংস্থা দু'টি জানিয়েছে, তারা ভ্যাকসিনের ১৩০ কোটি ডোজ তৈরি করতে পারবে। ২০২১ সালের শেষ নাগাদ ৬৫ কোটি মানুষের দেহে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, ২০২০ সালের শেষদিকেই পাঁচ কোটি ডোজ তৈরি হয়ে যাবে বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।
সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স
কেএএ/পিআর