আইন-আদালত

ব্যারিস্টার জুম্মনের সনদ বৈধ ঘোষণা করে দেয়া রায় স্থগিত

আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়েও ব্যারিস্টার জুম্মন সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। নিয়মিত আপিল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত থাকবে বলে আদেশে বলেছেন প্রধান বিচারপতি। একই সঙ্গে, রিটকারী দুই আইনজীবীকে পৃথকভাবে ১০০ টাকা করে জরিমানাও স্থগিত করা হয়েছে।

Advertisement

বুধবার (১১ নভেম্বর) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ আপিল বিভাগে রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার রুহুল কুদুস কাজল, ব্যারিস্টার অনিক আর হক। অন্যদিকে জুম্মান সিদ্দিকীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম।

আদেশের পর আইনজীবীরা জানান, বার কাউন্সিলের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ার পরও এক বিচারকের ছেলে মো. জুম্মান সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিসের সুযোগ দিয়ে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে, দুই আইনজীবীর জরিমানাও স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগে।

Advertisement

এক বিচারপতির ছেলে মো. জুম্মান সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিসের সুযোগ দিয়ে বার কাউন্সিলের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটটি গত ৮ নভেম্বর খারিজ করে রায় দেন বিচারপতি গোবিন্দ্র চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মাদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ।

রায়ে রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও ইশরাত হাসানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন। এবং তাদের প্রত্যেককে ১০০ টাকা করে জরিমানা করা হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে গত ৯ নভেম্বর আপিল করেন রিটকারী দুই আইনজীবী।

২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে জারি করা গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে, সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি তারিক-উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দেন।

২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় বারবার উত্তীর্ণ না হওয়ার পরও হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়। সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও ইশরাত হাসান বাদী হয়ে এ রিট দায়ের করেন।

Advertisement

রিট আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষায় কয়েকবার অংশ নিয়েও কৃতকার্য হতে পারেননি হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলে মো. জুম্মান সিদ্দিকী। অথচ গত ১৯ সেপ্টেম্বর জুম্মান সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। রিটে ওই গেজেট এবং ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ বার কাউন্সিল অর্ডারের ২১ (১) (খ) ও ৩০ (৩) ধারা চ্যালেঞ্জ করা হয়। জুম্মান সিদ্দিকীসহ বার কাউন্সিলের সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারিসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

এরপর ওই বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক তারিক উল হাকিম আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে রিট আবেদনটির ওপর জারি করা রুল শুনানির জন্য বিচারপতি গোবিন্দ্র চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মাদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চে ওঠে। দীর্ঘ শুনানি শেষে হাইকোর্ট ৮ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন।

এফএইচ/এআরএ/এসআর/এমএস