জাতীয়

রাজধানীতে গ্যাস সঙ্কট : দুর্ভোগে গৃহিণীরা

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্যাসের চুলা নিভু নিভু করে জ্বলে। রান্নার সময় অনেক এলাকায় গ্যাস একদম থাকে না। ফলে রান্না করতে গিয়ে রাজধানীর গৃহিণীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।গ্যাস সঙ্কটের কারণে অনেকে আবার কেরোসিন, কাঠের চুলা, রাইস কুকার ও ইনডাকশন ওভেনে রান্না করছেন। অনেকে হোটেল থেকে খাবার কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছেন।এদিকে তিতাস কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, গ্যাসের চাহিদার চেয়ে উৎপাদন কম হওয়ায় এ সঙ্কট তৈরি হয়েছে। সমাধানে রেশনিং পদ্ধতিতে গ্যাস সরবরাহের চিন্তাভাবনা চলছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রামপুরা, বনশ্রী, সায়েদাবাদ, মানিকনগর, যাত্রাবাড়ী, বাসাবো, হাজারীবাগ, মোহাম্মপুর, লালবাগ, মিরপুর, শেওড়া পাড়াসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গত এক মাস ধরে গ্যাসের তীব্র সঙ্কটা দেখা দিয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি সঙ্কট রয়েছে পুরান ঢাকা এলাকায়। এসব এলাকায় ভোর রাতের পর চুলায় গ্যাসের চাপ কমতে থাকে। সকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আরো তীব্র হয়। সকাল ১০টার পরে অনেক এলাকায় চুলাই জ্বলে না। তবে বিকাল ৫টার পরে আবার বাড়তে থাকে। বসত বাড়িতে গ্যাসের সঙ্কট দেখা দিলেও সিএনজি স্টেশনে এ সঙ্কট নেই। বনশ্রী এলাকার ই ব্লকের বাসিন্দা ইশিতা জাহান বলেন, ভোর রাত থেকেই চুলায় গ্যাসের চাপ থাকে না। সকালের নাস্তা তো দূরের কথা দুপুরের রান্না ভোর ৬টায় উঠে শুরু করতে হয়। গ্যাস না থাকায় ভাল ভাবে রান্না করাও যায় না। বেশ কয়েক দিন হোটেল থেকে খাবার এনে খেতে হয়েছে। এভাবে কত দিন চলা যায় প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত না করেই বিল দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। গ্যাস সঙ্কটের দ্রুত সমাধান চাই। রামপুরা তিতাস রোডের বাসিন্দা জেসমিন জেবা বলেন, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্যাসে চাপই থাকে না। গ্যাসের অভাবে ছেলেকে সকালের নাস্তা তৈরি করে দিতে পারছি না। প্রতিদিন হোটেল থেকে এনে খাবার খেতে হয়। একই দুর্ভোগের কথা জানালেন পুরান ঢাকার শ্যামবাবু লেনের গৃহিণী সুনেত্রা কর্মকার। তিনি বলেন, ভোর রাত থেকেই গ্যাসের চাপ কমতে থাকে। সন্ধ্যার আগে চুলা জ্বলে না। বাধ্য হয়ে রাইস কুকারে রান্না করি। শুধু ইশিতা জাহান, জেসমিন জেবা ও সুনেত্রা কর্মকারই নয়। রাজধানীর অনেকেই গ্যাস সঙ্কটে ক্ষুব্ধ।সূত্র জানায়, নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় শিল্প সংযোগ উন্মুক্ত করায় গ্যাসের চাহিদা আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। গ্যাসের চাহিদা বাড়লেও উৎপাদন না বাড়ায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এছাড়া শীতকালে পাইপলাইনে গ্যাসের উপজাত জমে যাওয়ায় গ্যাস সঞ্চালনে বিঘ্ন ঘটে। তবে এর চেয়েও অবৈধ সংযোগ গ্যাস সঙ্কটের বড় কারণ বলে মনে করেন তিতাস কর্তৃপক্ষ। সঙ্কট সমাধানে তারা রেশনিং পদ্ধতিতে গ্যাস সরবরাহের চিন্তা ভাবনা করছে। সিএনজি স্টেশন বর্তমানে বিকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। এ সময় বাড়ানোর কথাও ভাবছেন। তিতাসের পরিচালক (অপারেশন) প্রকৌশলী আলী আশরাফ বলেন, তিতাস এলাকায় চাহিদা মতো পেট্রোবাংলা গ্যাস সরবরাহ না করায় এ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তবে সঙ্কট সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এনএম/এসকেডি/এআরএস/এমএস

Advertisement