নির্দেশনার আগেই মনিপুরসহ রাজধানীর তিন স্কুলে ভর্তি ফরম বিক্রি

নীতিমালা জারি করার আগেই ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রাজধানীর কয়েকটি নামি দামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে তারা অনলাইনে ভর্তি ফরম বিক্রি শুরু করেছেন।নীতিমালা জারির আগে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।

এদিকে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর জন্য মাউশির নির্দেশনার দিকে তাকিয়ে আছে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

আগেভাগেই ভর্তি কার্যক্রম শুরু করে দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ।

এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে ভর্তি ফরম পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা গেছে।

মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক ফোরামের আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান জানান, সপ্তাহখানেক আগে আগামী বছরের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে মনিপুর স্কুল। অনলাইনে ভর্তি ফরম পাওয়া যাচ্ছে।

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘গভর্নিং বডির সিদ্ধান্তে আমরা প্রথম শ্রেণির ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি। অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি ফরম সংগ্রহ করতে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।’

উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক গোলাম ফারুক বলেন, ‘বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি নীতিমালা চূড়ান্ত করতে কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তা প্রকাশ করা হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ১ম থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত কোন পদ্ধতিতে ভর্তি নেয়া হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ নীতিমালা জারি করা হবে।

তিনি বলেন, নীতিমালা জারির আগে কেউ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারবে না। বিধিবহির্ভূতভাবে কেউ এমনটি করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শাস্তিস্বরূপ এমপিও বাতিল, পাঠদান অনুমোদন ও পাঠদান স্বীকৃতি বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে জানান গোলাম ফারুক।

প্রসঙ্গত, প্রতি বছর নভেম্বরের মধ্যেই রাজধানীর বেসরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তি কার্যক্রমের প্রস্তুতি শুরু হলেও এবার করোনাভাইরাস মহামারির কারণে স্কুলে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালা জারি করা হয়নি।

এ বিষয়ে রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম মঙ্গলবার জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি সংক্রান্ত নির্দেশনা জারির পর প্রস্তুতি শুরু করবে তার প্রতিষ্ঠান।

তিনি বলেন, এবার বার্ষিক পরীক্ষা না হওয়ায় শতভাগ শিক্ষার্থীকে পাস দেয়া হবে। এ কারণে প্রথম শ্রেণির লটারির মাধ্যমে ভর্তি করা সম্ভব হলেও ২য় থেকে ৮ম শ্রেণিতে আসন শূন্য হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফওজিয়া বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ভর্তি সংক্রান্ত নির্দেশনা না দেয়ায় আগামী বছরের ভর্তির বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। চলতি বছরের ভর্তি অক্টোবরে শেষ করা হয়েছে।  প্রথম শ্রেণি ছাড়া অন্যান্য ক্লাসে আসন শূন্য থাকছে না। মাউশি থেকে নির্দেশনা জারি হলে প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হবে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হলে ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করে সরকার। দফায় দফায় ছুটি বাড়িয়ে আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

এমএইচএম/এসএস/এমএস