ফিচার

লঞ্চ তৈরি করল ১১ বছরের মেহরাজ!

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক মেধাবী শিক্ষার্থী মেহরাজ। নিজের হাতে বিশাল আকারের লঞ্চ তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এলাকাবাসীকে। প্রতিদিনই লঞ্চটি দেখতে এলাকার মানুষকে ভিড় করতে দেখা যায়। তৈরি করা লঞ্চটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘কীর্তনখোলা-১০’।

Advertisement

বাবার সাথে একবার নদীপথে কীর্তনখোলা লঞ্চে বরিশাল যাতায়াত করে মেহরাজ। এরপর থেকেই লঞ্চ তৈরির আগ্রহ দেখায়। একপর্যায়ে বাবার অনুপ্রেরণায় ও সহযোগিতায় নিজের মেধা খাটিয়ে ককসিট, মোটর, লাইটিং ও ব্যাটারি দিয়ে নিজের হাতে লঞ্চটি তৈরি করে।

মাত্র ১১ বছর বয়সে কীর্তনখোলা-১০ তৈরি করা শিশুর পুরো নাম সাইদুল ইসলাম মেহরাজ। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৬ নং গুপটি ইউনিয়নের ষোলদানা গ্রামে। সে হাজী বাড়ীর সোহেল রানার বড় ছেলে। বর্তমানে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। তার প্রখর মেধা ও পারদর্শিতা নজর কেড়েছে এলাকাবাসীর।

লঞ্চ তৈরির উপাদান সম্পর্কে জানতে চাইলে মেহরাজ জানায়, লঞ্চটি তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে ককসিট, ব্যাটারি চালিত মোটর, ম্যাজিক লাইট এবং গাম। লঞ্চের দৈর্ঘ ৫ ফুট, উচ্চতা ১০ ইঞ্চি, প্রস্থ ৯ ইঞ্চি। এটি দেখতে অবিকল কীর্তনখোলা-১০ এর মতো।

Advertisement

ব্যাটারি চালিত লঞ্চটি শিশুর নিজবাড়ির পুকুরে চলমান। লঞ্চটিতে ব্যবহার করা বিভিন্ন আলোকসজ্জা ও মিউজিক বাতির ঝলকানি মিটমিট করছে। নিখুত হাতে তৈরি করা লঞ্চটির ভেতরে রয়েছে মাস্টার ও যাত্রীদের কেবিন। যার সৌন্দর্য সবার নজর কেড়েছে। লঞ্চটি দেখতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিনই লোকজন আসতে দেখা যায়।

উপজেলার বড়ালীয়া গ্রামের কে এম হাসান জানান, তিনি চাকরির সুবাদে বরিশালের লঞ্চে ভ্রমণ করেন। তার পাশের এলাকার এক শিশু বরিশালের লঞ্চ বানিয়েছে জানতে পেরে তিনি দেখতে এসেছেন। মেহরাজের লঞ্চটি দেখে তার মনে হচ্ছে কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চটি কেউ এখানে ভাসিয়ে দিয়েছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে একটি শিশু লঞ্চ তৈরি করেছে শুনে মানুষ দেখতে আসে। তারা প্রশংসা করে। তাই আমিও দেখতে এসেছি। শিশুটির প্রতিভা দেখে এলাকার সবাই মুগ্ধ।’

সাইদুল ইসলাম মেহরাজ জানায়, কোনো কিছু দেখে সহজেই আয়ত্ত করতে পারে সে। ভালো লাগে নতুন কিছু করতে। লঞ্চ তৈরি করা তার শখের মধ্যে একটি। এর আগে সে উড়োজাহাজ তৈরি করেছে। মেহরাজ ভবিষ্যতে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়।

Advertisement

শিশুটির বাবা সোহেল রানা বলেন, ‘তিন সন্তানের মধ্যে মেহরাজ বড়। সে আমার সাথে নদীপথে ভ্রমণে গিয়েছিল। লঞ্চ দেখে বিভিন্ন কৌতূহলী প্রশ্ন করে। আমি সাধ্যমত উত্তর দিয়েছি। কয়েকদিন পর থেকেই তাকে লঞ্চ তৈরিতে ব্যস্ত দেখা যায়। আমিও তার আগ্রহে সাড়া দেই। মেহরাজ যেন ভবিষ্যতে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশের জন্য ভলো কিছু করতে পারে। তাই আমি সবার দোয়া চাই।’

এসইউ/জেআইএম