ধর্ম অবমাননার অভিযোগে লালমনিরহাট ও কুমিল্লায় সংখ্যালঘুদের আক্রমণ, অগ্নিসংযোগ, শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিলের প্রতিবাদে এবং জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবিতে চট্টগ্রামে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
Advertisement
শনিবার (৭ নভেম্বর) সকাল পৌনে ১০টায় চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট মোড় এলাকায় গণঅবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। পরিষদের হাজার হাজার নেতাকর্মী গণঅবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্তসহ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। তারা ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’, ‘৭২ এর সংবিধান ফিরিয়ে দাও’, ‘সাম্প্রদায়িক শক্তির কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সংগঠনটির নেতাকর্মীরা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এতে নগরের প্রধান প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। রাস্তায় আটকা পড়েছে হাজার হাজার গাড়ি। যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নগরবাসী।
Advertisement
এদিকে সবধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
গত মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
সেদিন তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ফ্রান্সের ঘটনাকে পুঁজি করে সাম্প্রদায়িক শক্তি বাংলাদেশের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অভিসন্ধির বাস্তবায়ন করছে। দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই সেখান থেকে ফিরে আসতেই এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, চলতি বছরের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাত মাসে ১৭ ব্যক্তি সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয়ে মারা গেছেন, হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ১০ জনকে, হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে ১১ জনকে, ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ৩০ জনের ওপর, শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয়েছে ৬ জনের, এ কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন, জোরপূর্বক অপহরণ করা হয়েছে ২৩ জনকে, ভাঙচুর করা হয়েছে ২৭টি প্রতিমা, নিখোঁজ রয়েছেন ৩ জন।
Advertisement
সংবাদ সম্মেলনে আরও দাবি করা হয়, এ সময়ের মধ্যে ২৩টি মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে, জোরপূর্বক ধর্মান্তর করা হয়েছে ৭ জনকে, বসতভিটা ও শ্মশান দখলের চেষ্টা করা হয়েছে ৭৩ বার, পুরোপুরি দখল হয়েছে ২৬টি, গ্রামছাড়া করা হয়েছে ৬০টি পরিবারকে ও দেশত্যাগের হুমকি দেয়া হয়েছে ৩৪ জনকে।
আবু আজাদ/বিএ/এমএস