মতামত

সম্ভাবনার সবটুকু কাজে লাগাতে হবে

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট দুর্যোগের মধ্যে আশাজাগানিয়া সংবাদ আমাদের আন্দোলিত করে বৈকি! পত্রিকায় কয়েক দিনের সংবাদ শিরোণাম এমন-“মহামারির ৪ মাসেও রেমিট্যান্স বেড়েছে ৪৩ শতাংশ” (২) এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ, (৩) গার্মেন্টসে আশার আলো, (৪) “রেমিট্যান্স রিজার্ভের মতো রাজস্ব আদায়েও বিস্ময়” (৫) করোনা দুঃসময়েও মেগা প্রকল্প থেমে নেই। নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট দুর্যোগের মধ্যে এমন সংবাদে আশার আলো দেখতে পাচ্ছি আমরা।

Advertisement

নভেল করোনাভাইরাসের সংকটেও বাংলাদেশের এমন অগ্রগতির কারণ কি? মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুঃসাহসী কিছু সিদ্ধান্ত অর্থনীতিতে বাজে প্রভাব থেকে মুক্ত রেখেছে বাংলাদেশকে। প্রধানমন্ত্রীর সাহসী সিদ্ধান্তে ঝুঁকি নিয়ে কারখানা খোলায় ইতিবাচক ফলও এটা। সকল মহল থেকে বারবার বলা হচ্ছিলো যেন দেশ পূর্ণ লাগডাউনে যায়। সরকারের ইচ্ছায় লগডাউনে শিথিলতা ছিল। গার্মেন্টস, কলকারখানা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার কথা বলছিলাম আমরা। দেশে পরিবহন চালু না রাখার কথাও বলা হচ্ছিলো। ভীতিকর পরিস্থিতিতে সারা বিশ্ব যখন লকডাউনে তখন আমাদের গার্মেন্টস, কলকারখানা চলেছে, পরিবহনও চালু করা হয়েছে। যার সুফল এখন আমরা পাচ্ছি।

পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ করে স্বাধীন করা এ দেশটার মানুষ আগে থেকেই দুঃসাহসী। ঝুঁকি নিয়ে সাহসিকতার সাথে দেশে যেমন মানুষ থেমে ছিল না, যার যার কাজ করেছে, প্রবাসীরাও হাত পা গুটিয়ে বসে ছিলোনা বলেই আজ রেমিট্যান্স, রিজাভ, রাজস্ব বাড়ছে। দুঃসময়ে পোশাক কারখানা গুলো আশার আলো দেখাচ্ছে। বায়ারগণ ঝুঁকছেন বাংলাদেশের দিকে। আমাদের সাহসিকতা, সব পরিস্থিতিতে কাজ করার ইচ্ছা শক্তি আমাদের এগিয়ে নিচ্ছে, এগিয়ে নিবে গোটা দেশকে। বাংলাদেশ এখন আর হেনরি কিসিঞ্জারের 'তলাবিহীন ঝুড়ি' নয়। প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে তাঁর ভাষণে বলেছিলেন- "দশ বছর আগের আর আজকের বাংলাদেশের মধ্যে বিরাট ব্যবধান"। কথাটা কিন্ত নিরেট সত্য। এ সময়ে আমাদের জীবনযাত্রারমান বেড়েছে, আমাদের সঙ্গতি বেড়েছে। উন্নয়নে, অর্থনীতিতে এগুচ্ছে দেশ। রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। স্বপ্নের মেট্রোরেল হচ্ছে। পদ্মা সেতু হচ্ছে বাংলাদেশের গাঁটের টাকায়। এটা চাট্টেখানি কথা নয়।

মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্সের প্রবাহের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত আছে এটা আশাজাগানিয়া সংবাদ। সদ্যসমাপ্ত অক্টোবর মাসে ২১১ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে ২১১ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৭ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে (প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ধরে)। একক মাস হিসাবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এযাবৎকালের তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যন্স আহরণ। এর আগে সর্বোচ্চ রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল চলতি বছরের জুলাইয়ে। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১৫ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে। চলতি বছরের অক্টোবরে পাঠানো রেমিট্যান্সের অর্থ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৭ কোটি ডলার বা ২৮ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি। গত বছর অক্টোবরে ১৬৪ কোটি ২০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

Advertisement

করোনা মহামারি বিশ্ব অর্থনীতিতে রীতিমতো ধস নামিয়েছে। অনেক দেশেরই জিডিপির প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক ধারায় চলে গেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও করোনা আঘাত হেনেছে। রফতানি আয় কমে গিয়েছিল। রাজস্ব আদায়ের হার কমেছে। মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে। চাকরি হারিয়েছে লাখো মানুষ। দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কি পারবে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে যেতে- সৃষ্টি হয়েছিল এমন প্রশ্ন বা সন্দেহের। তা কেটেছে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) এবং সরকারের যৌথ পর্যবেক্ষণে।

আশা করা যায়, ২০২৪ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে চলে যাবে। কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে চলেছে। অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মা সেতু এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা। বিদ্যুতে দেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ। মাথাপিছু আয় দুই হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। করোনার মধ্যেও বর্তমান অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রফতানি আয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তৈরি পোশাক রফতানি ছাড়া অন্যান্য খাতেও রফতানি বাড়ছে। বাংলাদেশের ওষুধ যাচ্ছে ১৬৬টি দেশে। প্রবাসী আয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছাড়িয়েছে ৪০ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশের অগ্রগতির স্বীকৃতিও মিলছে। লন্ডনভিত্তিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান বিএমআই রিসার্চ ভবিষ্যতের যে ১০টি উদীয়মান বাজারকে চিহ্নিত করেছে, তার মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী গার্মেন্ট ও কৃষিভিত্তিক পণ্য রফতানি করে দেশটি ক্রমেই জোরালো প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা ব্লুমবার্গ বলছে, বাংলাদেশ হতে পারে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ। ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড বা আইএমএফের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ এখনই তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার এমন আশাবাদেরই প্রতিফলন দেখা যায় বাংলাদেশের দৃশ্যমান অগ্রগতিতে।

শুধু অর্থনৈতিক অগ্রগতি নয়, জনস্বাস্থ্য, স্যানিটেশন, শিক্ষা, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হরাস, নারীর উন্নয়নসহ সামাজিক নানা সূচকেও বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে চলেছে। ফলে বাংলাদেশ খুব স্বাভাবিকভাবেই এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশ হতে যাচ্ছে। সিডিপি ও সরকারের যৌথ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘে যে পর্যালোচনা হওয়ার কথা রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশ তিনটি সূচকেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এগিয়ে থাকবে।

Advertisement

করোনা সংকটে রেমিট্যান্স রিজার্ভের মতো রাজস্ব আদায়েও বিস্ময় দেখিয়েছে বাংলাদেশ। করোনায় বিপর্যস্ত না হয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরো চাঙ্গা হচ্ছে। বিস্ময়কর এই অগ্রগতির নেপথ্যে সাহসী নেতৃত্ব। করোনায় দেশের অর্থনীতির চাকা বিভিন্ন কৌশলে সচল রেখেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্যারিশম্যাটিক কৌশলের সুফল পাওয়া যাচ্ছে। ঘুরে দাঁড়িয়েছে রপ্তানিখাত। সবচেয়ে আশঙ্কাজনক ছিল যেই গার্মেন্টস খাত সেখানে জ্বলজ্বল করছে। রেমিট্যান্সে তো রীতিমতো মিরাকল ঘটেছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও তাই।

সরকারের প্রায় সবখাতে দেওয়া প্রণোদনায় যেখানে বাংকগুলোর তারল্য সংকট হওয়ার কথা সেখানে উপচে পড়ছে টাকা। ফলে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে একের পর এক শর্ত শিথিল করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব আশ্চর্যজনক খবরের মধ্যে আশঙ্কা ছিল রাজস্ব আদায় নিয়ে। কিন্তু সেক্ষেত্রেও বিস্ময়কর খবর দিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআর। এনবিআরের তথ্য বলছে, গত বছরের স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও এবছরের করোনাকালে সরকারের রাজস্ব বেড়ে গেছে। গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে দুই হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এনবিআরের হিসাবে, গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই- সেপ্টেম্বর) এনবিআর রাজস্ব আহরণ করেছিল ৪৮ হাজার ১৭ কোটি টাকা। আর বর্তমান অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আহরণ করেছে ৪৯ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে চার দশমিক ১১ শতাংশ বেশি রাজস্ব আহরণ করেছে এনবিআর। এ বিষয়ে এনবিআরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, অর্থনীতি সচল করতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর সুফলও ধীরে ধীরে আসছে। তিনি বলেন, অর্থনীতি যেভাবে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তাতে আশা করা যায়, আগামী নয় মাসে পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বাকি দুই লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব হবে।

এদিকে করোনাকালীন দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে রেমিট্যান্স প্রধান ভূমিকা রাখলেও পাশাপাশি পিছিয়ে নেই তৈরি পোশাক খাত শিল্পটি। করোনার থাবায় যেখানে বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোও নিজেদের সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে আশার আলো দেখিয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প। করোনার সময়ে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ থাকলেও নতুন করে ক্রয়াদেশ আসা ও স্থগিতাদেশ হওয়া পোশাকের ক্রয়াদেশের পণ্য নিতে শুরু করেছেন বিদেশী ক্রেতারা। বিশ্বের নামীদামী ব্র্যান্ডগুলোও এখন আগ্রহ দেখাচ্ছে পণ্য নিতে। এতে আশার আলো ছড়িয়ে পড়ছে সরকার ও খাত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। করোনাকালীন খাতটিতে রক্ষার জন্য বিশেষ প্রণোদনাও কাজে এসেছে। কারখানাগুলোতে কর্মরত লাখো শ্রমিকের পাশে দাঁড়ানোর কারণেই এমনটি সম্ভব হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের পণ্য খাতের রপ্তানি আয় পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সেখানে বিগত অর্থবছরের তুলনায় নিট পোশাক খাতের রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৪৬ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। যেখানে আগের বছরের চেয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭.০৮ শতাংশ। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য মতে, তৈরি পোশাক খাতে জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে মোট রপ্তানি হয়েছে ৮১২ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। আগের বছরে এই সময়ে খাতটিতে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৮০৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। যা আগের বছরের তুলনায় শূন্য দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি। করোনার থাবায় যেখানে বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোও নিজেদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে আশার আলো দেখিয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প। করোনার সময়ে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো বন্ধ থাকলেও নতুন করে ক্রয়াদেশ আসা ও স্থগিতাদেশ হওয়া পোশাকের ক্রয়াদেশের পণ্য নিতে শুরু করেছেন বিদেশী ক্রেতারা। বিশ্বের নামীদামী ব্র্যান্ডগুলোও এখন আগ্রহ দেখাচ্ছে পণ্য নিতে। এতে আশার আলো ছড়িয়ে পড়ছে সরকার ও খাত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে।

বাংলাদেশী পোশাকের অন্যতম বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠান এইচএ্যান্ডএম। সুইডেনভিত্তিক এই ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে বছরে প্রায় ৩০০ কোটি ডলার বা ২৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকার পোশাক কিনে থাকে। সেই হিসাবে ১০ শতাংশ বাংলাদেশী পোশাকের ক্রেতা হচ্ছে এইচএ্যান্ডএম। করোনায় কোন ক্রয়াদেশ বাতিল করেনি তারা। স্থগিত হওয়া ক্রয়াদেশের পণ্য নেয়া শুরুর পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের কাছে কোন মূল্য ছাড়ও চায়নি। পোশাকের ক্রয়াদেশের দাম পরিশোধের শর্তেও কোন রকম পরিবর্তন করেনি এইচএ্যান্ডএম। এইচএ্যান্ডএমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত দুই থেকে আড়াই মাসে আমরা ৫০ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ দেয়া হয়েছে। এইচএ্যান্ডএমের ৩০০ সরবরাহকারী কারখানার সবাই ক্রয়াদেশ পেয়েছে। এইচএ্যান্ডএমের ক্রয়াদেশ পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্য প্রতিযোগী দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান ভাল। করোনা সংকটে চীন ও তুরস্ক থেকে যেসব ক্রয়াদেশ সরছে, তার একটি অংশ বাংলাদেশে আসছে। কারণ, বাংলাদেশে উৎপাদন খরচ তুলনামূলক কম। এটাও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাবার আরেকটি কারণ।

আমাদের সবাইকে একথা মানতেই হবে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন ইতিহাসে একটি অনন্য ঘটনা। বাংলাদেশ নানা চড়াই-উৎরাই পথ পাড়ি দিয়ে আজকের পর্যায়ে পৌঁছেছে। এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখলে বাংলাদেশ অনেক দুর এগিয়ে যাবে। আমাদের প্রত্যাশা, সবকিছু মোকাবিলা করে বাংলাদেশ যথাসময়ে উন্নত দেশের কাতারে ঠাঁই করে নিতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত আর বিচক্ষণ নেতৃত্ব নিয়ে গোটা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল। বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা, নারীর ক্ষমতায়ন, টিকাদান, শিশুমৃত্যুরোধ ইত্যাদির মতো সমস্ত সূচকে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে এগিয়ে আছে। মাথাপিছু আয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া এটি অত্যন্ত সম্মানের, গৌরবের। বাংলাদেশ তার সম্ভাবনার সবটুকু কাজে লাগানোর উদ্যমী হয়ে পরিকল্পনা করেই এগিয়ে যাবে। এজন্য মেধাভিত্তিক খাতগুলোকে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে, লক্ষ্য নির্ধারণ করে মূলত কর্মপন্থা সাজাতে হবে। অদম্য বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

লেখক : সাংবাদিক।

এইচআর/পিআর