হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহান আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ নবি ও রাসুল। আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য তার ভালোবাসা লাভে প্রিয় নবির প্রতি গভীর প্রেম ও অনুসরণকে পূর্বশর্ত করেছেন। আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
Advertisement
قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
‘(হে রাসুল! আপনি) বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তবে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহও তোমাদের ভালোবাসেন এবং তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।’ (সুরা ইমরান : আয়াত ৩১)
অন্যান্য নবি-রাসুলদের মতো প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধুমাত্র একজন নবি ও রাসুলই নন, বরং তাঁর মর্যাদা আল্লাহ তাআলার দরবারে অন্যান্য নবি রাসুলদের চেয়ে ভিন্ন। তিনি অনেক মর্যাদাবান। কুরআনুল কারিমের অনেক আয়াতে তা প্রমাণিত।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছেন। সবার ওপর তার সুনাম ও খ্যাতি বাড়িয়ে মর্যাদা দান করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِينَ
‘আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি।' (সুরা আম্বিয়া : আয়াত ১০৭)
শুধু তাই নয়, ‘আল্লাহ তাআলা মানুষের প্রতি এ মর্মে নির্দেশনা জারি করেছেন যে, ‘প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ করাকে তাঁর অনুসরণ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
Advertisement
‘যে (ব্যক্তি) রাসুলের আনুগত্য করল, সে আসলে আল্লাহরই আনুগত্য করল; আর যে মুখ ফিরিয়ে নিল আমি তাদের জন্য আপনাকে প্রহরীরূপে প্রেরণ করিনি।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৮০)
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করাকে আল্লাহর হাতে বাইয়াত গ্রহণ হিসেবে ঘোষণা করে আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘যারা আপনার বাইয়াত গ্রহণ করে তারা তো আল্লাহরই বাইয়াত গ্রহণ করে; আল্লাহর হাত তাদের হাতে ওপরই। সুতরাং যে তা ভঙ্গ করে, তা ভঙ্গ করার পরিণাম তাকেই ভোগ করতে হবে। সুতরাং যে আল্লাহর সঙ্গে অঙ্গীকার পূর্ণ করে তিনি তাকে মহা পুরস্কার দেন।’ (সুরা ফাতাহ : আয়াত ১০)
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইজ্জত করা আল্লাহকে ইজ্জত করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘যাবতীয় ইজ্জত তথা সম্মান তো আল্লাহরই এবং তাঁর রাসুলও বিশ্বাসীদের।’ (সুরা মুনাফিকুন : আয়াত ৮)
এমনিভাবে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সন্তুষ্টিকে আল্লাহর সন্তুষ্টির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন-
‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুল হলেন বেশি হকদার (এই বিষয়ে) যে, তারা যেন তাঁকে সন্তুষ্ট করে; যদি তারা বিশ্বাসী হয়।’ (সুরা তাওবা : আয়াত ৬২)
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ডাকে সাড়া দেয়াকে আল্লাহর ডাকে সাড়া দেয়ার সঙ্গে বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন-
‘হে মুমিনগণ! রাসুল যখন তোমাদের এমন কিছুর দিকে আহ্বান করে, যা তোমাদের প্রাণবন্ত করে; তখন আল্লাহ ও রাসুলের আহ্বানে সাড়া দাও।’ (সুরা আনফাল : আয়াত ২৪)
উল্লেখিত আয়াতে কারিমায় আল্লাহ তাআলা নিজেই প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মান, মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করেছেন।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের জন্য নবি প্রেম ও পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়ার জন্য কুরআনুল কারিমার নির্দেশ পালন করা। কেননা প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই ঘোষণা করেছেন-
‘তোমাদের মধ্যে কেউ ঈমানদার হতে পারবে না; যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি তাদের পিতা-মাতা ও সন্তান-সন্তুতি ও সব মানুষ থেকে প্রিয়তম না হবো।’ (বুখারি)
মনে রাখতে হবে
বিশ্বনবির প্রেম বলতে শুধু মুখে মুখে রাসুল তোমায় ভালোবাসি বললেই হবে না; বরং তার আদর্শের অনুসরণ ও অনুকরণই উদ্দেশ্য। আর বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ ছিল আল কুরআন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যথাযথ মর্যাদা প্রদান করার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা যথাযথভাবে আদায় করার মাধ্যমে নবি প্রেমের সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত স্থাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম