খুলনায় ফের করোনার প্রকোপ শুরু হয়েছে। গত চারদিনে খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটিপিসিআর ল্যাবে করোনা টেস্টে জ্যামিতিক হারে শনাক্তের সংখ্যা বৃদ্ধির পেয়েছে।
Advertisement
এদিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী সকল হাসপাতালে প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিলেও খুলনায় দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম নেই। জনগণের মধ্যেও এখন আর কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটিপিসিআর ল্যাবে গত ২৮ অক্টোবর করোনা শনাক্ত হয়েছিল ৭ জনের, ২৯ অক্টোবর একদিনেই শনাক্ত হয় ১৪ জনের, ৩০ অক্টোবর ২২ জন আর ৩১ অক্টোবর করোনা শনাক্ত হয় ৪০ জনের।
পিসিআর ল্যাবে করোনা শনাক্ত হওয়ার জ্যামিতিক এই হারকে খুবই চিন্তার বিষয় হিসেবে দেখছেন অধ্যাপক ডা. এসএম কামাল হোসেন।
Advertisement
তিনি বলেন, সরকার ও বিভিন্ন তরফ থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ব্যাপারে সতর্ক করা হলেও মানুষের মধ্যে তেমন কোনো সচেতনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, বিভাগে জেলাভিত্তিক হিসেবে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৬১৬ জন রোগী শুধু খুলনা জেলায় শনাক্ত হয়েছেন। এছাড়া বাগেরহাটে ১ হাজার ১১ জন, চুয়াডাঙ্গায় ১ হাজার ৫০৮ জন, যশোরে ৪ হাজার ৮০ জন, ঝিনাইদহে ২ হাজার ৫৯ জন, কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার ৪৩৮ জন, মাগুরায় ৯৪০ জন, মেহেরপুরে ৬৫১ জন, নড়াইলে ১ হাজার ৪০৮ জন এবং সাতক্ষীরায় ১ হাজার ১০৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
গত এক সপ্তাহে খুলনা বিভাগের করোনা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ধীরে ধীরে করোনা সংক্রমণের হার বাড়ছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত থাকতে বললেও খুলনায় দৃশ্যমান কোনো প্রস্তুতি নেই। বিভাগের কোনো জেলা হাসপাতালেই আইসিইউ এখন পর্যন্ত করতে পারেনি।
Advertisement
তবে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সীমিত পরিসরে আইসিইউ সেবা চালু থাকলেও তা করোনা রোগীদের চিকিৎসায় গত ৮ মাসে ব্যবহার হয়নি।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশিদা সুলতানা বলেন, ইউরোপে ইতোমধ্যে করোনা আবারও বেড়েছে। নতুন করে ব্রিটেনসহ কয়েকটি দেশে লকডাউন দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে বিভাগের সকল হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডকে পর্যাপ্ত বেডসহ প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। চিকিৎসকদের চিকিৎসা সরঞ্জামের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। খুলনার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেড আছে। আশা করি সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সবাই মিলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
আলমগীর হান্নান/এফএ/পিআর