‘নাস্তিকরা (সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাসী) ক্রমেই উগ্রবাদী হয়ে উঠছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট লেখক, সাংবাদিক ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘উগ্রবাদী মোল্লারা যে আচরণ করেন, নাস্তিকরাও এখন তাই করছেন। তারাও সমাজে হিংসা, বিদ্বেষ, অশান্তি ছড়াচ্ছে। বিশ্বাসীদের অনুভূতিতে আঘাত করছে। তারাও উগ্রবাদী হয়ে উঠছে। নাস্তিকরা আল্লাহ-রাসুলকে নিয়ে যেভাবে বিষোদগার করছে, তা সুস্থ মস্তিষ্কের কর্ম নয়। অথচ নাস্তিকরা আগে ঠিক এমন ছিল না। তার মানে সমাজ এক অস্থির সময় পার করছে।’
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং একই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার প্রসঙ্গে জাগো নিউজের কাছে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন এ বিশ্লেষক।
শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘ডিজিটাল আইন এবং এ আইনে মামলা ও গ্রেফতার বিষয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি করে আসছি। এই আইনের অপব্যবহার হবে এমন আশঙ্কা আমার মতো সবারই। কিন্তু এর বিপরীতেও আলোচনা আছে। বাকস্বাধীনতা মানেই আমি যা ইচ্ছা তা বলতে পারি না। সমাজ, রাষ্ট্র ও বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে যা ইচ্ছা তাই করা যায় না।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর ৭০০ কোটি মানুষের মধ্যে ৬০০ কোটিই সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করেন। এ বিশ্বাসকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। ধর্মীয় আচার বা অনুভূতির প্রকাশই মানুষের স্বাধীনতা। অন্যের অধিকার বা আচারকে খাটো করে দেখা কোনো ধর্মই সংরক্ষণ করে না। অথচ উগ্রবাদী মোল্লারা তা মনে করে না। তারা অপরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ ছড়াতে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে আসছেন। আমরা ধর্মান্ধদের এমন আচরণের প্রতিবাদ করে আসছি। উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে কড়া সমালোচনা করছি।’
এ বিশ্লেষক বলেন, ‘একইভাবে প্রতিবাদ বা বিরোধিতা করছি নাস্তিকদের ছাড়ানো হিংসা নিয়েও। ধর্মে বিশ্বাস করুন বা না করুন, আপনি অন্যের মনে আঘাত দিতে পারেন না। স্বাধীনতার নামে যা খুশি তাই করতে পারেন না। ওহাবি মোল্লারা ইহুদি-নাসারা নিয়ে যেভাবে মত প্রকাশ করছে, নাস্তিকরাও এর বিপরীতে তাই করছে। নাস্তিকরা আল্লাহ-রাসুল নিয়ে যেভাবে বিষোদগার করছে, তা সুস্থ মস্তিষ্কের কর্ম নয়। মনে রাখতে হবে, পশ্চিমা বিশ্ব আর বাংলাদেশ এক নয়। এটি আমি ব্লগারদের বারবার বলে থাকি। এখানকার বাস্তবতা আমলে নিয়ে আপনাকে মত প্রকাশ করতে হবে।’
তিনি জাগো নিউজকে আরও বলেন, ‘মৌলবাদী হচ্ছে, অন্যের মতকে মেনে না নেয়া। নাস্তিকরাও এখন তাই করছে। তাহলে মৌলবাদীদের সঙ্গে তাদের তফাৎ কোথায়? পাকিস্তান আমলেও নাস্তিকতা ছিল। অধ্যাপক আহমেদ শরীফরা ‘নাস্তিক সমিতি’ করেছিলেন। তারা কোনো হিংসা ছড়াননি। তারা সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার বাণী প্রচার করেছেন। আর এখন?’
এএসএস/এফআর/পিআর
Advertisement