পেঁয়াজ আবাদের জন্য উপযোগী স্থান রাজবাড়ীর বিভিন্ন এলাকা। জেলার পাঁচ উপজেলায় কম-বেশি পেঁয়াজের আবাদ হলেও জেলার কালুখালী ও বালিয়াকান্দিতে পেঁয়াজের আবাদ বেশি হয়। জনগণ হিসাবে রাজবাড়ীতে ১৮ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদা থাকলেও উৎপাদন হয় কয়েক লাখ মেট্রিক টন।
Advertisement
মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিঘা প্রতি সনকাবারি (এক বছর চুক্তি) জমিসহ কৃষকের খরচ হয় ৬০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে বিঘা প্রতি উৎপাদন হয় ৫০ থেকে ৬০ মণ পেঁয়াজ। আবহাওয়া ও বাজার দরের ওপর নির্ভর করে কৃষকদের লাভ লোকসান। তবে বর্তমানে পেঁয়াজের বাজার দর ভালো হওয়ায় দিন দিন রাজবাড়ীতে মুড়িকাটা ও হালি পেঁয়াজের আবাদ বাড়ছে। এদিকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি না করতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানান চাষিরা এবং সহজ শর্তে ঋণ দিলে আবাদ আরও বাড়াতে পারতেন বলে তারা আশা করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, এবছর হালি, মুড়িকাটা ও দানা পেঁয়াজ মিলে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৩২ হাজার হেক্টর।এরমধ্যে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৫ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে। গত মৌসুমে রাজবাড়ীতে ২৯ হাজার ৯৭৬ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিলো।
এরমধ্যে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৪ হাজার ৫৬৮ হেক্টর এবং জেলায় উৎপাদন হয়েছিলো প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ। জনগণ হিসাবে জেলার চাহিদা মাত্র ১৮ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন। বাজার দর ভালো হওয়ায় এ বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ বাড়বে বলে ধারণা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের।
Advertisement
কৃষক মো. ওয়াজেদ আলী শেখ, রফিক শেখ মালেক শেখসহ অনেকে বলেন, এখন তারা যে পেঁয়াজ লাগাচ্ছেন, সে পেঁয়াজ উঠতে তিন মাস সময় লাগবে। এটি ঝুঁকিপূর্ণ একটি ফসল। আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা মণ বিক্রি করতে পারলে তাদের একটু লাভ হবে।
আর যদি দুই হাজার টাকার কম হয়, তাহলে লোকসান এবং ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হলেও লোকসান হবে। ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি না করতে সরকারকে অনুরোধ জানান কৃষকরা। এক বিঘা জমিতে সব মিলিয়ে খরচ হয় ৬০ থেকে ৯০ হাজার টাকা এবং যাদের নিজস্ব জমি তাদের ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা কম খরচ হবে। চাষাবাদের জন্য ব্যাংকে ঋণ চাইলেও বাঁধের বাইরে জমি হওয়ায় ঋণ পান না। ঋণ পেলে তাদের চাষের পরিধি আরও বাড়াতে পারতেন।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোপাল কৃষ্ণ দাস বলেন, রাজবাড়ী পেঁয়াজ আবাদের সমৃদ্ধ একটি জেলা। গতবছর জেলায় ২৯ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিলো। এরমধ্যে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয়েছিলো ৪ হাজার ৫৬৮ হেক্টর জমিতে। এবছর পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দানাসহ ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে।
ইতিমধ্যে এবছর কৃষকরা মুড়িকাটা পেঁয়াজ লাগানো শুরু করেছে। এবছরের ডিসেম্বরের শেষ অথবা আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম দিকে এ পেঁয়াজ উঠবে। পেঁয়াজ চাষ করে কৃষকরা গতবছর লাভবান হওয়ায় এবছর বেশি আবাদ করবে বলে ধারণা করছেন। এছাড়া মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে রোগ বালাইসহ অন্যান্য ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে সচেতন করছেন।
Advertisement
রুবেলুর রহমান/এমএমএফ/এএ/জেআইএম