ফিচার

স্বপ্নবাজ তরুণদের ১০ বছরের পরিকল্পনা

সাজেদুর আবেদীন শান্ত

Advertisement

‘স্বপ্ন৩০’ হলো আগামী ১০ বছরের একটি পরিকল্পনা। যার মূল উদ্দেশ্য শহরে জিরো ওয়েস্ট সচেতনতাকে প্রায়োগিকভাবে বাস্তবায়ন করা, স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে সহায়তা করা এবং এর মাধ্যমে শিশুদের জন্য টেকসই নগরায়নের অভীষ্টকে এগিয়ে নিয়ে জলবায়ুর হুমকি মোকাবেলা করা।

মূল কথায়, শহরের একশ্রেণির মানুষের অপব্যবহার বা অপচয়কে কাজে লাগিয়ে সুবিধাবঞ্চিতদের সহায়তা করা। রিইউজড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলা।

স্বপ্ন৩০ কেন এবং কিভাবে কাজ করবে জানতে চাইলে এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক আরাফাত খান বলেন, ‘একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরা যায় যাক। অক্টোবরে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র আতিকুল ইসলাম ডোবা, খাল, ড্রেন পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু করেন। সেখানে বিভিন্ন খাল থেকে শতাধিক জাজিম, কয়েক ডজন সোফা, টেলিভিশনের খোলোস, ভাঙা ফ্রিজ, সুটকেস, বালিশ, ২০০ ট্রাক ডাবের খোসা পাওয়া গেছে। স্বপ্ন৩০ এসব নিয়ে কাজ করতে চায়। শহরের রিইউজড ব্যবস্থাপনার চেইনকে শক্তিশালী করে তুললেই নগরীর খাল ও ড্রেনে এসবের চাপ থাকবে না।’

Advertisement

এর জন্য কিছু উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে-এক. স্বপ্ন৩০ শহরের বাসিন্দা বিশেষত ধনীদের বাসার অব্যবহৃত কাপড়, বই, খেলনা, জুতা, ব্যাগ এসব সংগ্রহ করবে। তাদের অ্যাপে বা ওয়েবসাইটে তথ্য সাবমিট করলে, তারা একটি শিডিউল সময় মিলিয়ে বাসা থেকে সেসব জিনিস নিয়ে আসার ব্যবস্থা করবে।

দুই. এসব মালামাল দিয়ে অন্তত শহরের একটি বস্তিতে স্লাম আউটলেট চালু করা হবে। পাশাপাশি একটি লাইব্রেরি পরিচালনা করা হবে। তিন. স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকের সাথে সমন্বয় গড়ে তোলা হবে। তাদেরও টেকসই নগরায়ন, স্বেচ্ছাসেবার বিষয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং সহায়তা করা হবে।

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজি-১১ নিয়ে কাজ করতে গত কয়েক বছর ধরেই আমরা প্রস্ততি নিচ্ছিলাম মাঠপর্যায়ে এবং প্রযুক্তিগতভাবে। স্বপ্ন৩০ এখন ওয়েবসাইট ও অ্যাপ তৈরি করেছে। প্রায় ১০টি শহরে আমাদের প্রতিনিধি আছে। আমরা ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ দশ বছরের যাত্রা শুরু করতে চাই ২০৩০ সাল পর্যান্ত।’

আগামী দশ বছরের যার প্রতি একক বছরে তাদের টার্গেট ৩০ হাজার কাপড়, ৩০ হাজার বই ও ৩০ হাজার ব্যাগ সংগ্রহ করা। সেগুলো সুবিধাবঞ্চিতদের হাতে তুলে দেওয়া। এমনকি রিইউজড ম্যানেজমেন্টকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপে প্রতিষ্ঠা করা। এর মাধ্যমে একদিকে নগরের ড্রেনে চাপ কমবে, জলাবদ্ধতা কমবে, অপচয়কে ব্যবহারে রূপান্তরিত করবে।

Advertisement

তাদের এ উদ্যোগ টেকসই নগরের স্বপ্নকে বাস্তবের পথে এগিয়ে নেবে। তবে বর্তমানে তাদের সবচেয়ে বেশি দরকার প্রচারণা ও জনসম্পৃক্তকরণ। ব্যবস্থাপনা সফল করতে আর্থিক সাহায্যও প্রয়োজন। তারা সংগঠনটিকে অলাভজনক কোম্পানির প্রাতিষ্ঠানিক রূপে দাঁড়া করানোর স্বপ্ন লালন করেন। তাই সবার সহায়তা পেলে এটি সফল হতে পারবে।

লেখক: শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু কলেজ, ঢাকা।

এসইউ/এএ/জেআইএম