ঢাকায় মেট্রোরেল হচ্ছে। দেখতে-দেখতে একদিন মেট্রোরেল লাইন তৈরি হয়ে যাবে। আমরা মেট্রোরেলে চড়ে আরামে ঢাকায় যাতায়াত করব। ট্রাফিক জ্যামের ভোগান্তি কিছুটা লাগব হবে মেট্রোরেলের সুফল হিসেবে। পাশাপাশি আরামদায়ক যাতায়াত ব্যবস্থা হবে মেট্রোরেল। কথা হচ্ছে মেট্রোরেলে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় গিয়ে পরবর্তী গন্তব্যে কীভাবে যাবে যাত্রী। ট্রানজিট ব্যবস্থা হচ্ছে কি না? মেট্রোরেল স্টেশন শেষ গন্তব্য না-ও হতে পারে অধিকাংশ যাত্রীর জন্য। পরবর্তী পথটুকু একজন যাত্রী কীভাবে যেতে পারে সেই চিন্তাও করতে হবে প্রশাসনকে, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে বা সরকারকে। কে করবে, কোন অধিদপ্তর করবে সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হচ্ছে মেট্রোরেল স্টেশন থেকে পরবর্তী গন্তব্যে যাওয়ার জন্য একটি আরামদায়ক পরিবহন ব্যবস্থা করতে হবে।
Advertisement
সতেরো বছর কুয়ালালামপুর শহরে বসবাস করে যে গণপরিবহনে খুব-বেশি চড়েছি সেটা হলো মেট্রোরেল। সেখানে প্রত্যেকটা মেট্রোরেল স্টেশন থেকে পরবর্তী গন্তব্যে যাওয়ার জন্য বাস সার্ভিস চালু আছে। অর্থাৎ যে কোনো স্টেশনে নেমে সে-এলাকার অদূরে আশেপাশে যাওয়ার জন্য বাস আছে। ট্যাক্সি সার্ভিসও আছে। পিকআওয়ারে ঘনঘন বাস চলে। অফপিকআওয়ারে আধাঘন্টা বিশ মিনিট পরপর বাস চলে। প্রতি স্টেশন থেকে কয়েকটি লাইনে বাস চলে। এসি বাস। আরামদায়ক। ভাড়াও বেশি না। যাদের তাড়া আছে তারা বাসের তুলনায় বেশি ভাড়া দিয়ে ট্যাক্সি করে যাবেন। কুয়ালালামপুরে যে প্রতিষ্ঠান মেট্রোরেলের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে আছে বাস সার্ভিসও তাদের।
আগামী দিনের উন্নত বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় মেট্রোরেল স্টেশন থেকে আরামদায়ক বাস সার্ভিস চালু হতে হবে। না-হলে যাত্রীদের অর্ধেক পথ ( মেট্রোরেলে) আরামদায়ক হলেও বাকি পথ হবে গরমে ঘর্মাক্ত আর শীতে ধুলাবালিময়। আর রিক্সা, অটোরিকশার সেই পুরানো জ্যামে আটকা পরে থাকতে হবে বাকিপথে। শৃঙ্খলাবদ্ধ বাস সার্ভিস চালু হলে শহরের মূল সড়কে রিক্সা অটোরিকশাও কমবে। অবশ্যই বাসগুলো এসি-বাস হতে হবে। নানা রকম চাঁদা আর দুর্নীতি না-থাকলে এসি-বাসে ভাড়া তেমন বেশি হবে না। গরমকালের ভাড়া শীতকালে একটু কমানো-ও যাবে আমাদের দেশে। যেহেতু শীত মৌসুমে এসির প্রয়োজন নেই। ঢাকা শহরে সব বাস এসি-বাস হওয়া দরকার।
শুধু ঢাকা শহর নয়, চট্টগ্রামসহ দেশের সব বড় বড় শহরের পাবলিক বাসগুলো এসি-বাস হওয়া দরকার। একটা শহরে হাজারো কোম্পানির বাস না-নামিয়ে গুটিকয়েক কোম্পানির বাস চলবে। যারা সরকারের বেঁধে দেওয়া ভাড়া নিয়ে মান সম্মত সার্ভিস দিবে। তাতে বাস্তবে মানুষের মাসিক ব্যয় বাড়বে না। বরং কমবে। এসি-বাস হলে মানুষের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। স্বাস্থ্যসেবা খাতে মানুষের ব্যয় অনেক কমে যাবে।
Advertisement
উন্নত বাংলাদেশে মেট্রোরেল স্টেশন থেকে যাত্রীরা এসি-বাসে চলাফেরা করবে- এমন প্রত্যাশা করতেই পারি। মেট্রোরেল স্টেশন থেকে বাস চলাচলের কোনো পরিকল্পনা বা উদ্যোগ সরকারের আছে কিনা জানি না। যদি না থাকে তাহলে এই উদ্যোগ নেওয়া দরকার। উদ্যোগ নিলে তা বাস্তবায়নে বেশ কয়েক বছর সময় তো লাগবে। তাই দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হোক।
এইচআর/পিআর