মতামত

স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোক দুর্গোৎসব

বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ দেশে প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব শান্তিপূর্ণ উপায়ে অনুষ্ঠিত হোক এটাই কাম্য। এবার পূজা উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে করোনা মহামারিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদযাপনের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। মানুষজন যাতে আনন্দমুখর পরিবেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উৎসবে অংশ নিতে পারে সেটি নিশ্চিত করাই হবে সবার জন্য মঙ্গলজনক।

Advertisement

মণ্ডপে মণ্ডপে ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ আর উলুধ্বনির শব্দ দেবীদুর্গার মর্ত্যে আগমনের কথা জানান দিচ্ছে। এ ছাড়া পূজার মন্ত্রোচ্চারণ, আরতি আর মাইকের আওয়াজে এখন মাতোয়ারা পূজা মণ্ডপগুলো। হিন্দুদের পাশাপাশি অন্য ধর্মের মানুষও এসব মণ্ডপে ঘুরতে আসায় উৎসব সার্বজনীন রূপ নেয়। বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব।

এবার পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এমন এক সময়ে যখন প্রাণঘাতী করোনা মহামারিতে বিশ্বসহ দেশ আক্রান্ত। মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের কারণে দুর্গাপূজা উদযাপনে ২৬টি নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি।

দুর্গাপূজা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব। বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি নির্দেশনার আলোকে দুর্গাপূজা যাতে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়, সে বিষয়ে পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে ২৬টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- পূজার সব অনুষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে করতে হবে। প্রতিমা তৈরি করে পূজা সমাপ্তি পর্যন্ত প্রতিটি মণ্ডপে নিজস্ব উদ্যোগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মন্দির বা পূজামণ্ডপে আগত দর্শনার্থীদের জীবাণুমুক্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখতে হবে। দর্শনার্থী, ভক্ত ও পুরোহিত সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে এবং সব দর্শনার্থীকে কমপক্ষে তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। পূজা মন্দির/মণ্ডপে নারী ও পুরুষের আলাদা যাতায়াত ব্যবস্থা রাখতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালনের জন্য কার্ড/ব্যান্ডধারী অধিকসংখ্যক নিজস্ব নারী-পুরুষের স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে।

Advertisement

পূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। এ কারণে পূজার উৎসবে বিপুল জনসমাগম হয়। উৎসবের আনন্দে মাতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এদেশে এটাই কাম্য। মানুষে মানুষে যে মহাসম্মিলন তা নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে আরো জোরদার হয়। যার যার অবস্থান থেকে সবারই দায়িত্ব রয়েছে প্রতিটি উৎসব নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে। আমরা যেন সেই দায়িত্বটুকু ভুলে না যাই। সবাইকে শারদীয় শুভেচ্ছা।

এইচআর/পিআর