দেশজুড়ে

পত্রিকায় হারানো বিজ্ঞপ্তি দেখে এগিয়ে যেতেন ভুয়া ওসি

প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় হারানো বিজ্ঞপ্তি থেকে ঠিকানা ও জিডির নম্বর সংগ্রহ করতেন ফারুক হোসেন ফিটু। এরপর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিচয়ে যোগাযোগ করতেন। প্রতারণা করে ধাপে ধাপে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করতেন। গত চার বছরে তার মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হয়েছে শত শত মানুষ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন প্রতারক ফারুক হোসেন ফিটু।

Advertisement

পাবনার আমিনপুর থানার চক আব্দুস শুকুর এলাকা থেকে মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশ তাকে আটক করে। তার কাছ থেকে ১৬টি মোবাইল ও ২৪টি সিম জব্দ করা হয়েছে। এসব সিম ও বিকাশ নম্বর রেজিস্ট্রেশনে তিনি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করতেন।

ফারুক হোসেনকে আটকের পর বুধবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক।

তিনি আরও জানান, আটক ফারুক হোসেন চক আব্দুস শুকুর গ্রামের নাদের শেখের ছেলে। তিনি পাবনার কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরপর ২০০১ সালে ঢাকায় গিয়ে ট্রপিক্যাল সিকিউরিটি হোমস লিমিটেড নামে একটি সিকিউরিটি কোম্পানিতে ২০০৯ সাল পর্যন্ত চাকরি করেন। পরে তিন বছর পাবনায় থেকে ২০১২ সালে আবার ঢাকায় যান। ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন স্থানে চা বিক্রি করেন। কিন্তু ২০১৭ সালের পর থেকে তিনি পুলিশ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করতে শুরু করেন।

Advertisement

আরএমপি কমিশনার জানান, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাজপাড়া থানার একজন এসআই আরএমপি সদর দফতরে অভিযোগ করেন যে, রাজপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মাসুদ আলমের পরিচয় দিয়ে চারটি মোবাইল নম্বর থেকে নগরীর ডাবতলা এলাকার তিনজন ব্যক্তিকে ফোন করা হয়েছে। ফোন করে পত্রিকায় হারানো বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি তদন্ত, উদ্ধার ও উদ্ধার ডকুমেন্ট পাঠানোর জন্য টাকা দাবি করা হয়েছে।

পরে তারা থানায় অভিযোগ করলে দেখা যায়, রাজপাড়া থানার এসআই মাসুদ ও থানার কেউ বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না। তখন রাজপাড়া থানা পুলিশ মহানগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে নম্বরগুলো প্রেরণ করে। নম্বরগুলো পাওয়ার পর ২১ দিন বিশ্লেষণ করে সাইবার ক্রাইম ইউনিট মিথ্যা পরিচয় দেয়া ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করে। এরপর তাকে পাবনা থেকে আটক করা হয়।

আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, ফারুক হোসেন গত কয়েক বছর ধরে পুলিশের ওসি ও এসআই পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করেন। প্রতি মাসে কমপক্ষে ২০ জনের কাছ থেকে এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস, সাইবার ক্রাইম ইউনিটের প্রধান উৎপল কুমার চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/জেআইএম