সাহিত্য

মোস্তফা মহসীনের পাঁচটি কবিতা

টাট্টুঘোড়া বটে

Advertisement

মনকাড়া প্রতিযোগিতার এক ঘোড়দৌড়গতিমুখ পাল্টেপ্রিয় লাল ঘোড়াটা দাবড়েমুখে ঘাস নয়; বাঁক বদলেরহাওয়ায় হাওয়ায়দিচ্ছো আজ নাটকীয় রূপ!

রঙিন মার্বেল যেভাবে মাটিতে ঝাঁক বেঁধেআচড়ে-ছিটকে পড়ে ইতিউতিসেরকমছিটকে গড়ানো রূপঅন্ধ ঘোড়াদেরখাওয়াতে খাওয়াতেনাকানিচুবানিসুরভি তুমিও; মনবদলেরএক পাকা ঘোড় সওয়ারী!

পেরিয়ে জঙ্গল উঁচু-নিচু জলাশয়টগবগ টগবগ হ্রেষাহ্রেষা ধ্বনি সুমধুর। জিনে বসেকোমড় দুলিয়ে ভাবোচড়তে চড়তে...চড়াতে চড়াতে কী যে সুখ!টাট্টুঘোড়া বটে তুমি তো পুরুষ!

Advertisement

আঙুলে ঘামের আবরণ-মতোস্মৃতিময় চকচকে দ্যুতিবিদ্যুৎ খেলেছে সারামুখমূলগতনারীবাদী তুমি তা-ইমানোনি কখনো লিঙ্গের শাসক!

বাইরে শক্তির আলোকতরঙ্গভেতরে ভেতরে প্রস্রবণবিকেল গড়িয়ে গোধূলির পথে...তখন আরও রাঙালো দুঃখের চোট!

****

ইনসোমনিয়া

Advertisement

বিরাজমান নীরবতার পর ঘরটিতেমশাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে কি বাড়ে না!এমতো মীমাংসা বাকি রেখেহাতের তালুতে তুমিআজ রাতে ছোঁয়ালে একটুউষ্ণতার সমঝোতা।

স্মৃতিলোকে নড়েচড়ে বসে দু-তিনটাচামচিকানিহত হবার আগে যারাগৃহ অধিকার দ্বন্দ্বে মানব জাতিরছুঁড়ে দিয়েছিলোপ্রাণ-বিদ্ধ জপমালা!

না-ঘুম না-জাগরণেঘনবসতিতে করোনার মিথস্ক্রিয়াএকটি নভেল ভাইরাসমৃতের সংখ্যায় নাকি-রক্তপাতহীন থার্ড ওয়ার্ল্ডওয়ার হতে যাচ্ছে; কর্তা?

প্রাণঘাতী সংক্রমণএড়ানোর মতো নেই তামাম মাখলুকাতেকোনো টিকা!তা-ই শুনে বন্ধু ডিরেক্টর তাঁর‘নিঃসঙ্গতার সাপলুডু’র শেষ মুভি দৃশ্যে ছুঁড়ে দিয়েছেনরহস্যের ঘূর্ণিবার্তা;

অথচ কাঁপে না দ্যাখো বৃক্ষশাখাকাঁপে শুধুচক্ষুহীন কোটরের মতোপাল্লাহীন তোমার জানালা!

****

বরাভয়

তোমার শরীর থেকে উষ্ণতার ভাগ নিচ্ছিতিনফুট দূরে বসে থেকেলোভি বিড়ালের মতো ছলাকলাগুপ্ত রেখেতোমাকে না ছুঁয়ে বসে থাকাটায়নেই তো কোনো গ্লানিমা!

দেবতার ছোঁয়াগুলি ভালোবাসা হয়েস্পর্শ করলো জমিনে... পৃথিবীর কঠিন অসুখ!একটি সবুজ পাতা দুলতে দুলতেঝরবার আগে আঁধারের টুটি চেপেবললো; কখনো ভয় পেয়ো না! না না না!

****

দেহাত্মবাদ: শিখবো, শেখাবো

আর শক্তিময় শিশ্ন পূর্ণ হোকরক্তের মায়াবী সঞ্চালনেযেহেতু ক্ষমতাদাতাঅপ্রসন্ন হয়েছেন; অতিরিক্ত ক্ষমতা-প্রয়োগ জনিত ভ্রান্তিতে!

মাংস-মেদ-মজ্জাধারণ করেছে যে সুরাময়শোণিত সঘন

ঘামের আবেগে হোক জলথরোথরো প্রস্ফুটিত;

গ্রীষ্মের মৌসুমজুড়ে ফুটেছে কুসুমও সোনালু ফুল!ভালোবাসার ঠাসবুননেহুড়বিড় দ্যাখো সঙ্কীর্তন

কোন সেই সাধু যে বলেছে,-সঙ্গমে লাগে না নাকি কোনোমেহনত?ডাকো তাঁকেবলো: প্রেষণায় আঁকড়ে ধরেছেদেহাত্মবাদের নীতি-ব্যাকরণ

ফর্সা ত্বকে পরিচর্যা নিতেদরজায় কড়া নাড়েরূপ সচেতন এক অচেনা মানুষযৌবনের ঔদ্ধত্যকে ফাঁকি দিয়েতুমি তাঁকে কী করে শেখাবে-চার্বাক দর্শন?

মাথায় ঘুরছে বর্ষা...অঝোর বর্ষণ নয় দাও সঞ্জীবনী সুধা

সাম্যবাদীমন্ত্রে আকাশে উড়ুকভুলোমনে ফেলে রাখা কনডম...লাল অন্তর্বাস আর অপ্রকাশিত ব্রা

খোলামনে তাহলে কেবল-উষ্ণতার মুখে আঁড়ি দিতে পারি: প্রিয়তম স্মৃতিচাষা!

****

সাত স্বপ্নের রাত

ঘোরলাগা তন্দ্রা দুলে দুলেদোলাতেই থাকে মাথাআঙুল ছুঁইয়ে ওই বাহুতে তখনকী দেখেছো: প্রেসারের পরিমাপনা কি আত্মবিশ্বাসের ওঠানামা?

তোমার পাহাড়ে তখনো বরফশরীরে আগুন-অভিমানঘরময় ইতস্তত ঘুরছিলোখামখেয়ালীতে পূর্ণ দীর্ঘশ্বাসবায়ুসেচে আনলে শীতল কিছু উদ্বিগ্নতাঘুম আর জাগরণে অতঃপরকাগজী লেবুর রসে হাইড্রেট হলোধমনী ও শিরা।

আত্মার ভেতরে প্রাণবন্ত রক্তচাপঅন্ধকার হাতড়ানোঅন্য মানুষেরাতাঁদের জীবনেতোমাকেই চায়

রোমান্টিক নায়কেরা যেভাবে হাতটিভাঁজ করেমাথা ডানপাশে কাত করেচোখ দিয়েকিউপিডের তীরে তোমাকে বিক্ষত করে।

এসইউ/এএ/জেআইএম