ড. মো. হাসিনুর রহমান খান
Advertisement
সারা পৃথিবীব্যাপী ২০ অক্টোবর পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস। গত দশ মাস ধরে করোনা মহামারিতে নাস্তানাবুদ প্রতিটি দেশ। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও সঠিক পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার করে তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে করোনা মহামারিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে অনেক দেশ। আবার যারা পারেনি তারা কি পরিসংখ্যানের গুরুত্বকে অবহেলা করেছে? পরিসংখ্যান বা ইংরেজিতে স্টাটিসটিক্স শব্দটির উৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ স্টাটাস বা ইতালিয়ান শব্দ স্টাটিসটা হতে যার অর্থ সরকার। সভ্যতার সূচনা লগ্ন হতেই পরিসংখ্যান ব্যবহৃত হতো।
প্রাগ ঐতিহাসিক যুগের রাজা, বাদশারা দেশের ভূমি, কৃষি, জনসংখ্যা ও ব্যবসা বানিজ্যের তথ্য লিপিবদ্ধ করতো এবং দেশের জন্য সেনা-সমরাস্ত্র, সম্পদ বা ট্যাক্স নির্ধারণে তা ব্যবহার করতো। খ্রিস্টপূর্ব ২০০ হতে চিনের হান রাজবংশের সাম্রাজ্য ও পরবর্তিতে রোমান সাম্রাজ্যের প্রত্যেকেই তাদের সাম্রাজ্যের বিস্তার কতদূর পর্যন্ত, জনসংখ্যায়র পরিমানে কতজন, এবং সাম্রাজ্যের সম্পদের হিসাবের জন্য পরিসংখ্যানের শুমারি ব্যবহার করতো। তারও আগে খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ সালে গ্রীসের প্লটাইয়া শহরে ইটের সংখ্যার দ্বারা দেয়ালের উচ্চতা নির্ণয় করতো, যা পরিসংখ্যানের প্রচুরকের ব্যবহারের প্রমান মিলে। এই পরিসংখ্যান ব্যবহার করে দেয়ালে উঠার জন্য মইয়ের উচ্চতাও নির্ধারণ করতো। পরিসংখ্যানের মৌলিক ব্যবহার অতি প্রাচীন কাল হতে শুরু হলেও আধুনিক পরিসংখ্যানের সূচনা একজন আরবীয় মুসলিম গণিতবিদদের হাত ধরে। ৮-ম শতকে আল-খলিল ক্রিপটোলজি পড়াশুনায় কমবিনেশন ও পারমুটেশন এর প্রথম ব্যবহার শুরু করেন। যার মধ্য দিয়ে পরিসংখ্যান ও তার শাখা-সম্ভাবনা বিদ্যার মৌলিক উন্নয়নের পথ শুরু হয়।
স্টাটিসটিক্স শব্দের উৎপত্তি ল্যাটিন বা ইতালিয়ান শব্দ হতে হলেও প্রকৃত পক্ষে কবে থেকে এটি ব্যবহৃত হত তার- সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। বিখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক শেক্সপিয়ার ১৬০২ সালে তার রচিত হেমলেট নাটকে স্টাটিস্ট শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। আঠারো শতকে স্টটিসটিক্স রাষ্ট্রগুলির জনমিতি ও অর্থনীতির তথ্য সংগ্রহের বৈজ্ঞানিক মাধ্যম হিসেবে পুরোপুরি স্বীকৃতি লাভ করে। আঠারো শতকের পূর্বে প্রায় দুই-হাজার বছর ধরে বিভিন্ন সাম্রাজ্য, রাষ্ট্র, দেশ, পরিসংখ্যানের ব্যবহার করলেও তা রাষ্ট্র কাঠামোর অপরিহার্য হিসেবে দেখা দেয় আঠারো শতক হতে। আঠারো শতক হতে আজবদি জ্ঞান বিজ্ঞানের একটি অপরিহার্য শাখা হিসেবে পরিসংখ্যানের বিস্তার লাভ করে এবং এই সময়টাতে যাবতিয় মৌলিক তত্বের বিকাশ ও তা ব্যাবহারের বৈচিত্রতা দেখা যায়। বর্তমানে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বা পড়াশুনার এমন কোন শাখা-প্রশাখা নেই যেখানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পরিসংখ্যানের ব্যবহার হচ্ছে না। প্রত্যেকটি শাখায় গবেষণার ক্ষেত্রে তথ্য হতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য পরিসংখ্যানিক বা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার অত্যাবশ্যকীয়। ডেটা বা তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা গ্রহণ ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র, বিজ্ঞান, সমাজ, কলা বা বানিজ্য বিভাগের সর্বত্রই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাড়িয়েছে। কম্পিউটার আবিষ্কারের কারণে অটোমেশন ও কম্পিউটারাইজ সিস্টেমের মাধ্যমে সব ক্ষেত্রেই বহু তথ্য বা ডেটা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে। আর এসব তথ্য ব্যবহার করে উপকারী ফলাফল পাওয়া সম্ভব একমাত্র পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে। এইসব তথ্য বিশ্লেষণে অধুনা ডেটা-সাইন্স নামক একটি বিজ্ঞানের শাখা ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যেটা আমার মতে পরিসংখ্যান ও কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটা সংশ্লেষণ।
Advertisement
অর্থনীতি, জনমিতির বাইরে জনস্বাস্থ্য, চিকিৎসা, মেডিক্যাল বিজ্ঞানের পরিসরে পরিসংখ্যানের ব্যবহার চোখে পড়ার মতো। রোগতত্ত্ববিদ, জনস্বাস্থ্যবিদ, জীব-পরিসংখ্যানবিদরাই এসব শাখায় পরিসংখ্যানের ব্যবহারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে আমাদের দেশেও তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখাটা প্রত্যাশিত ছিল। প্রত্যাশা পূরণের দায়ভার ছিল রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র কি তার দায়ভার পালনে যথার্থ ভূমিকা রেখেছিল? খোদ এ প্রশ্নটি সবার কাছে ঘুরপাক খাচ্ছে। তাদের নিয়ন্ত্রণমূলক ভূমিকা রাখাটা করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের দায়ভারকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে প্রতিনিয়ত।
সম্প্রতি আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি যৌথভাবে যেরো প্রিভেলেন্স জরিপ চালায়। এন্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে ঢাকা শহরে ও বস্তিগুলোতে মানুষের মধ্যে কি পরিমান করোনাভাইরাসের রোগ প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে তা বুঝবার জন্য ১২-ই অক্টোবরে প্রকাশিত জরিপের ফলাফলে জানা যায় আগষ্টের শেষ পর্যন্ত ঢাকা শহরের বস্তিগুলোতে ৭৪ শতাংশ ও ঢাকা শহরের অন্যান্য মানুষদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এই তথ্য জানার সাথে সাথেই আতকে উঠেছিলাম। পৃথিবীর কোনো দেশেই এই মাত্রায় সেরো-প্রিভিলেসন্স রেট দেখা যায়নি। বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচল কাটতে না কাটতেই জানা গেল ছোট নমুনার আকারের ভিত্তিতে পরিচালিত এই জরিপের ফলাফল ঢাকাকে কোনোভাবেই প্রতিনিধিত্ব করে না। পরের দিন প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এটা জানিয়ে দেয়।
যতদূর জানা গেছে মাত্র সাতশত অ্যান্টিবডি নমুনার মাধ্যমে জরিপের উপরোক্ত ফলাফল পাওয়া যায়। দুই কোটি লোকের বসবাসের ঢাকা শহরে ১২৯ টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাল্টিস্টেজ ক্রসসেকশনাল পদ্ধতিতে সংগ্রহীত নমুনার সংখ্যা একেবারেই কম যা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বা পরিসংখ্যানিক টেস্ট অব হাইপোথিসিসের মৌলিক অ্যাসাম্পশনের ব্যত্যয়। ফলে প্রাপ্ত ফলাফল গ্রহণযোগ্য নয় বা বৈজ্ঞানিক ভাবে সিদ্ধ নয়। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সম্যক পরিসংখ্যানিক ধারনা থাকলে যে কেউ একমত হবেন এমন বৈজ্ঞানিক, অপরিসংখ্যানিক ও অপ্রতিনিধিত্ব ফলাফল কোনভাবে প্রকাশযোগ্য নয়। নমুনার আকার ও প্রাপ্ত ফলাফল টার্গেট গ্রæপের জন্য পরিসংখ্যানিকভাবে কতটা গুরুত্বপূর্ণ- সেটি বিবেচনায় নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত নিজস্ব গবেষণাপত্র অ্যাকাডেমিক সাময়িকিতে প্রকাশ করি বা প্রকাশের জন্য অন্যদের গবেষণাপত্র মূল্যায়ন করে থাকি। জুলাই মাসের শুরুতে ভারতের দিল্লিতে একইরকম একটি সেরো-সাভিল্যান্স জরিপ হয়েছিল ২১ হাজারেরও বেশী নমুনা নিয়ে। তাতে দিল্লির অধিবাসীদের মধ্যে ২৩ শতাংশের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠার প্রমাণ মিলে।
প্রায় দুই কোটি লোকের মধ্যে নমুনার আকার বড় হওয়া সত্তে¡ও প্রাপ্ত ফলাফল সঠিক হিসেবে গ্রহণ করা হয়নি। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। স্যাম্পলিং পদ্ধতিতে ত্রæটি বিচ্যুতি ছিল, বিশেষ করে নমুনার আকার নির্ধারণে প্রিসিশন বেশি ধরা হয়েছিল। ফলে করোনার সেরো-প্রিভিল্যান্স হার বেশি ধরা পড়েছে। আমাদের দেশেও তাই বড় অথচ যথাযথ নমুনার আকার নিয়ে এই ধরনের জরিপ চালাতে হবে করোনা প্রকৃতি সেরো-প্রিভিল্যান্স বের করার ক্ষেত্রে । কম সময় নিয়ে দ্রæত জরিপ শেষ করে ফলাফল প্রকাশ করলে তা পরিকল্পনা গ্রহণে অত্যন্ত কার্যকরী হয়। ভবিষ্যতে টিকা প্রদানের ক্ষেত্রেও তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
Advertisement
আবার যথাযথ নমুনা উপর ভিত্তি না করে ফলাফল প্রকাশ করলে তা বিভ্রান্তমূলক হতে পারে। বিশেষ করে করোনার প্রতিরোধ ব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদী নয় এমনটি গবেষণায় প্রমান পাওয়া যাওয়া সত্তে¡ও সাধারণ জনগনের মধ্যে যথেষ্ট রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে এমন ভূল ধারনার বশবর্তী হলে তা করোনা নিয়ন্ত্রণে হিতের বিপরীতে কাজ করতে পারে। যথাযথ নমুনার আকার ও পরিসংখ্যান পদ্ধতির অভাবে গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফল বিপদগামী হতে পারে । সেজন্য পরিসংখ্যানকে তিন মিথ্যার অন্যতম মিথ্যাও বলা হয় । আবার সঠিকভাবে পরিসংখ্যানের ব্যবহার না করতে পারলে তা হাস্য-রসাত্মকও হয়।
একটা গল্প বলি। একটা দেশের টাকার গুদামে টাকার বস্তায় আগুন লেগেছে। আগুন প্রশমন বা থামানের জন্য তিনজন বিশেষজ্ঞকে ডাকা হলো। রসায়নবিদ, পদার্থবিদ এবং পরিসংখ্যানবিদকে। রসায়নবিদ আগুনো অক্সিজেনের পরিমাণ কিভাবে কমানো যায় তা নিয়ে ভাবলো। পদার্থবিদ ভাবলো কি করে এনার্জিকে কমানো যায়। পরিসংখ্যানবিদকে বলা হলে সে বাকি সব টাকার বস্তায় আগুন ধরিয়ে দিল। কারণ জানতে চাইলে উত্তরে বলল, এটা সমাধান করার জন্য তার বড় নমুনার আকার দরকার। তাই বিভিন্ন পরিবেশ পরিস্থিতি ও পরিসংখ্যানের সঠিক ব্যবহার ও পদ্ধতির সুনিপুণ প্রয়োগের ক্ষেত্রেও বৈচিত্রতা আছে এবং তা সঠিকভাবে কার্যকর করার জন্য পরিসংখ্যানিক দক্ষতা থাকতে হয়।
করোনায় আক্রান্ত অধিকাংশ দেশ ভবিষ্যতে করোনার আক্রান্তের ও মৃত্যুর সংখ্যা কি হবে তা নির্ধারণে প্রক্ষেপণ করে থাকে এবং তা প্রকাশ করে থাকে। মহামারি নিয়ন্ত্রণে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্ফনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে এ ধরনের পরিসংখ্যানিক প্রক্ষেপণের গুরুত্ব অনেক। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এধরনের প্রক্ষেপণ প্রকাশ করা হয়নি। জরিপের ফলাফল ও প্রক্ষেপণের ক্ষেত্রে বিপরীতমুখী সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেছে। তাহলে কি বলা যায় যা প্রকাশযোগ্য নয় তা প্রকাশিত হচ্ছে আবার যা প্রকাশযোগ্য তা অপ্রকাশিত থাকছে। সামনে শীত ও ফ্লু ভাইরাসের দৈরাত্ম্যের কারণে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের দ্বারপ্রান্তে যখন বাংলাদেশ তখন এমন জরিপের সংখ্যা বৃদ্ধি করা ও প্রক্ষেপণ করে তা প্রকাশ করা অত্যন্ত জরুরি।
কেননা দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ মোকাবেলার যথাযথ প্রস্তুতি এখনি নিতে হবে। ১৯১৮ সালে স্প্যানিশ ফ্লুর ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউয়ের মৃত্যুর সংখ্যা প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় যথাক্রমে ৫ ও ২.৫ গুন বেশী হয়েছিল। যা করোনাে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ঢেউয়ের পূর্বপ্রস্তুতির একটা সতর্কবার্তা দেয়। টেস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি, মহামারির প্রকোপ নির্ধারণ বিশেষ করে করোনার প্রতিনিয়ত প্রজনন সংখ্যার ভিত্তিতে । সে অনুযায়ী সম্ভাব্য ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যসেবার নিয়োজিত অন্যান্য কর্মী, তাদের সুরক্ষা সামগ্রী, হসপিটালের বিছানা, আইসিইউ-এর বিছানা ইত্যাদি নির্ধারণ করা।
এই মুহূর্তে করোনা আক্রান্ত প্রতিটি দেশ জাতি ও গোষ্ঠি চাতক পাখির মতো যার দিকে তাকিয়ে আছে তা হলো ভ্যাকসিন বা টিকা। একটি টিকা পুরোপুরি প্রস্তুত হতে প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বাদেও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তিনটি ধাপ রয়েছে। প্রতিটি ধাপে পরিসংখ্যানের এক্সপেরিমেন্টালের ডিজাইন ও টেস্ট অব হাইপোথিসিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধ্যায় রয়েছে যা ছাড়া কোন ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সংঘটিত করা সম্ভব নয়। এছাড়া অপটিমাল ডোজের পরিমাণ, নমুনার আকার, তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ ও তাদের ব্যাখ্যার মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি একজন পরিসংখ্যানবিদকে করতে হয়।
এ পর্যন্ত নিউইয়র্ক টাইমসের সূত্রমতে ৪৬টি টিকা মানুষের উপর প্রয়োগ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে আর ৯১টি টিকা প্রি-ক্লিনিকাল ট্রায়াল স্তরে রয়েছে। এর মধ্যে ৬টি টিকা সর্বশেষ ধাপে রয়েছে। এই ৬টি টিকা এই ধাপ পেরুলেই মানুষের ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত হবে। অন্যদিকে ১১টি টিকার কার্যকারিতা পরিক্ষার জন্য ব্যাপকভাবে মানুষের উপর চালিয়ে তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। বাংলাদেশেরও একটি কোম্পানী এই টিকা তৈরির দৌড়ে সামিল হয়েছে। তাদের চূড়ান্ত সাফল্য পাওয়ার আগেই অনেকগুলি টিকা বাজারে আসবে এমনটা ধারণা করা যায় খুব সহজেই। তাই বাংলাদেশের মানুষকে টিকা পেতে হলে সরকারকে প্রথমে তার সংস্থান করতে হবে। এবং বাংলাদেশ দেশ হিসেবে যেন তার ন্যায্য হিস্যার ভিত্তিতে টিকাগুলি পায় এটি আমাদের প্রত্যাশা।
বাংলাদেশে করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণের পরিসংখ্যানবিদ, জনস্বাস্থ্যবিদ, রোগতত্ত¡বিদ, জীব-পরিসংখ্যানবিদ ও কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের সমন্বিত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে বা কাজে লাগার সুযোগ করে দিতে হবে। মহামারির তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিশ্লেষণ ও তা ব্যাখ্যাকরণের জন্য অন্যান্য কমিটির মতো উপরোক্ত এক্সপার্টদের সমন্বয়ে একটি স্টিয়ারিং কমিটি থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, ফলিত পরিসংখ্যান, আইএসআরটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
এইচআর/জেআইএম