পরীক্ষা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হবে। অনলাইন মাধ্যমে এ ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। একটি অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইনে বা অফলাইনে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এ জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে।
Advertisement
শনিবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল আলম। রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল ওই সভায় দেশের ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অংশগ্রহণ করেন।
সভা সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারির কারণে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিল হলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে অনার্স পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উপাচার্যরা।
উপাচার্যদের সংগঠন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম শনিবার রাতে জাগো নিউজকে বলেন, আমরা অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোনাজ আহমেদ নূরের উদ্ভাবিত সফটওয়্যার ব্যবহার করে এই পরীক্ষা নেয়া হবে।
Advertisement
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা নেয়া কঠিন হওয়ায় উপাচার্যরা অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষার দিকে জোর দিয়েছেন। আজকের সভায় পরীক্ষা নেয়ার মতো উপযোগী একটি ডামি (নমুনা) সফটওয়্যার উপস্থাপন করেছেন বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের পরীক্ষা নেয়া সম্ভব। সফটওয়্যারটি তৈরির কাজ শেষ হলে সেটি সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে অনুমোদন নিয়ে তা কার্যকর করা হবে।
বৈঠক সূত্র জানায়, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিলের পর জিপিএর ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যে দাবি উঠেছিল সেটি নাকচ করে দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সশরীরে পরীক্ষা না নিয়ে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোনাজ আহমেদ নূর জাগো নিউজকে বলেন, সমন্বিত পদ্ধতিতে কৃষি, প্রকৌশলী এবং সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছভাবে পাঁচটি ধাপে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। তার মধ্যে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, বাণিজ্য এবং মানবিক বিভাগের জন্য তিনটি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। পরীক্ষা নেয়ার জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে। এটির নামকরণ করা হয়েছে ‘প্রক্টর রিমোট এক্সাম সিস্টেম (প্রোকয়াস)’। এটি ব্যবহার করে ভর্তি পরীক্ষা ও অভ্যন্তরীণ একাডেমিক পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা বাসায় বসে অনলাইনে বা অফলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এ জন্য একটি অ্যাপস তৈরি করা হবে। সেটি মোবাইল বা কম্পিউটারে ডাউনলোড করতে হবে। পরীক্ষা শুরুর আগে অটোমেটিক পরীক্ষার্থীর অবস্থান ভিডিও, অডিও এবং স্টিল ছবি উঠে যাবে। সকল কিছু রেকর্ড ধারণ হয়ে থাকবে বলে কোনো ধরনের অসাধুপন্থা অবলম্বন করা সম্ভব হবে না। যদি কেউ তা করার চেষ্টা করে তবে ভিডিও ও অডিও ধারণের মাধ্যমে তা ধরা পড়বে। এ ধরনের প্রমাণ মিললে তার পরীক্ষা বাতিল করা হবে।
Advertisement
মোনাজ আহমেদ বলেন, সম্পূর্ণ দেশীও প্রচেষ্টায় সফটওয়্যার এবং অ্যাপস তৈরি কর হবে। এতে খুব বেশি ব্যয় হবে না। সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি বিনামূল্যে দেয়া হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও এর মাধ্যমে পরীক্ষা নিতে পারবে। এর মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা এবং শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নেয়াও সম্ভব। এটি তৈরিতে যা ব্যয় হবে তা ইউজিসির কাছে চাওয়া হবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভায় সকল সিদ্ধান্ত ইউজিসির সঙ্গে সভা করে উপস্থাপন করা হবে। সেখানে যে সিদ্ধান্ত হবে তা নিয়ে আবারও উপাচার্যরা বৈঠক করে ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল বিষয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তিনি।
এমএইচএম/বিএ/জেআইএম