বছরের পর বছর ধরে, ওজন কমাতে এবং সুস্থ থাকার জন্য কার্ব গ্রহণ বাদ দিতে বলা হয়েছে। তবে আমাদের যা বলা হয়নি তা হলো, ভালো কার্বস এবং খারাপের মধ্যে পার্থক্য। বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যকর এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন রয়েছে, তেমনিভাবে বিভিন্ন ধরণের কার্বস রয়েছে যা ওজন বাড়ানোর জন্য দায়ী কার্বসের থেকে ভালো। এটি আমাদের শক্তির প্রধান উৎস এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা নিশ্চিত করতে সহায়ক।
Advertisement
ওজন কমানোর ডায়েট কম কার্বস গ্রহণে উৎসাহিত করতে পারে। তবে আশ্বাসজনক সত্যিটা হলো, এর ফলে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এছাড়াও, কম কার্ব সেবনের ফলে শরীরে ফাইবার হ্রাস হতে পারে যা কোষ্ঠকাঠিন্য এবং বদহজমের মতো স্বাস্থ্যগত সমস্যা তৈরি করতে পারে। অতএব, সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভালো কার্বস এবং খারাপ কার্বসের মধ্যে পার্থক্য বোঝা জরুরি। বিস্তারিত প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
কার্বস কী?কার্বস বা কার্বোহাইড্রেট হলো এমন আণবিক উপাদান যা কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন পরমাণু ধারণ করে। পুষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে এটি প্রোটিন এবং চর্বি ছাড়াও তিনটি প্রধান ম্যাক্রোনাট্রিয়েন্টের মধ্যে একটি। সমস্ত কার্বস একই রকম নয় এবংতাদের শরীর প্রভাবিত করার পদ্ধতিও পৃথক হতে পারে। কেউ কেউ এটিকে ‘পুরো’ এবং ‘পরিমার্জিত’ কার্বস হিসাবে উল্লেখ করেন। অনেকে আবার সহজে বোঝার জন্য ‘ভালো’ এবং ‘খারাপ’ কার্বস ব্যবহার করে।
ভালো কার্বস বনাম খারাপ কার্বসভালো কার্বস হলো পুষ্টি সমৃদ্ধ কার্বোহাইড্রেট যা উচ্চ ফাইবার ধারণ করে এবং শরীরের শক্তি উৎপাদন করতে ব্যবহৃত হয়। এটি পুষ্টিকর এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত থাকায় রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি এড়ায়। তবে, খারাপ কার্বসগুলো কম ফাইবার পরিমাণযুক্ত পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট যা অনেক সময় হজমে সমস্যা এবং ওজন বাড়িয়ে তোলে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রায় স্পাইক সৃষ্টি করে যা ফলস্বরূপ আরও উচ্চ-কার্ব জাতীয় খাবারের জন্য ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয়। কিছু ভালো কার্বস সম্পর্কে জেনে নিন যা আপনার ওজনে প্রভাব ফেলবে না।
Advertisement
ছোলাঅত্যন্ত পুষ্টিকর এবং ফাইবার সমৃদ্ধ একটি খাবার হলো ছোলা। এটি আপনার ওজনকে প্রভাবিত করে না, পরিবর্তে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। ছোলা বিভিন্ন পদ্ধতিতে রান্না করা যায়। এটি কাঁচাও খাওয়া যায়। যেভাবেই খান না কেন, এটি পুষ্টিকর। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় ছোলা রাখতে পারেন।
সেদ্ধ যবসুইডিশের এক গবেষণা অনুসারে, সেদ্ধ করা যব সেবন করলে তা বিপাকক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে এবং এর ফাইবার সমৃদ্ধ উপাদান দেহে ক্ষুধার মাত্রা হ্রাস করতে পারে।
মিষ্টি আলুমিষ্টি আলু স্বাদ এবং পুষ্টিতে অনন্য। বলা হয় যে, মিষ্টি আলু অ্যাডিপোনেকটিনের মাত্রা বাড়ায়, হরমোন যা রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং দ্রুত বিপাককে উৎসাহিত করে।
ওটমিলওটমিল একটি আরামদায়ক খাবার যা ওজন হ্রাসে অনেক সহায়তা করে। এটি প্রচুর ফাইবারযুক্ত এবং আপনাকে অতিরিক্ত খাবার থেকে দূরে রাখে।
Advertisement
বাদামি চালব্রাউন রাইস শক্তি-ভিত্তিক পুষ্টির একটি ভালো উৎস। সাধারণ কার্বোহাইড্রেটের তুলনায় এটিতে জটিল কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা ফাইবার সমৃদ্ধ এবং শরীর দ্বারা আস্তে আস্তে ভেঙে যায়।
মসুর ডালউচ্চ কার্ব উপাদানের কারণে এটি বেশিরভাগ সময়েই এড়িয়ে যাওয়া হয়। তবে, মসুর ডাল জটিল শর্করা যা দেহে সহজেই ভেঙে যায় না, যা আপনাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরিয়ে রাখার অনুভূতি দেয় এবং দুর্দান্ত শক্তিও সরবরাহ করে।
হোলগ্রেইন রুটিক্ষুধা মেটানোর জন্য হোলগ্রেইন রুটি সেরা ‘ভালো কার্ব’। উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ভ, এটি সম্পূর্ণরূপে চর্বিহীন এবং রক্তের শর্করার স্তরকে ওঠানামা থেকে নিয়ন্ত্রণ করে।
এইচএন/এএ/জেআইএম