চাঁদপুর শহরে একজন অন্ধ ব্যক্তি আছেন। ঠিক এই মুহূর্তে নাম মনে করতে পারছি না। তিনি বটম চেপে টাকা রিচার্জ ও মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসা পরিচলনা করেন। হাতে টাকা দিলেই বুঝতে পারেন এটি কতো টাকার নোট। গলার শব্দ শুনেই বুঝতে পারেন কে কথা বলছেন। একা একা রাস্তা পার হন। সাংসারিক যাবতীয় কিছু পরিচালনা করেন। সমাজে প্রচলিত আছে ‘প্রতিবন্ধীরা খুব মেধাবী হন’। কিন্তু যারা ধর্মান্ধ? তাদের কোন মাপকাঠিতে রাখবো? আমি বলছি না তারা প্রতিবন্ধী। কিন্তু অতিবিশ্বাস কখনো কখনো মানুষকে ভুল পথ বাতলে দেয়।
Advertisement
যুগে যুগে পৃথিবীতে যতো ধর্ম প্রবর্তন হয়েছে। প্রতিটি ধর্মের একই উদ্দেশ্য। নৈতিকতা বোধ জাগ্রত করা। সমাজ থেকে বিশৃঙ্খলা কুসংস্কার দূর করা। কিন্তু ধর্মের নামে এ উপমহাদেশে বেশ কিছু প্রথা বা মিথ প্রচলিত আছে। যা সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে আসছে। মুসলমান ধর্মের প্রধান গ্রন্থ পবিত্র কুরআন। এ কুরআনের ভাষা আরবি। আমাদের মুখের বুলি শুরু হয় বাংলায়। তাই ভিনদেশী এ ভাষা আমাদের শিখে আয়ত্ব করতে হয়। এ ভাষা অর্থাৎ কুরআনের ভাষা বাংলায় অনুবাদ করে তরজমা বা তাফসীর-এর মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মুসলমান মানুষের মাঝে আলেম সমাজ উপস্থাপন করেন। এক্ষেত্রে যারা কুরআন সম্পর্কের কিছুই জানেন না অথবা অল্প কিছু বুঝেন তারা আলেমদের বক্তব্য বা ওয়াজের উপরই নির্ভর করেন। আলেমদের বিশ্বাস করেন। তারা যা বলেন তাই বিশ্বাস করেন। বিশ্বাস করা ভালো। কিন্তু এ বিশ্বাস যদি অন্ধ হয় তবেই বাঁধে বিপত্তি। তৈরি হয় গোঁড়ামি। এ সুযোগে একটি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠে সমাজচিত্র বা প্রেক্ষাপট বদলের।
মিডিয়া সমাজ বির্নিমাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সম্প্রতি একাত্তর টিভির নিউজ নিয়ে একটি পক্ষ দিলে আঘাত পেয়েছেন। অথবা হুজুগের মিছিলে যোগ দিয়েছেন। প্রশ্ন তুলছেন একাত্তর টিভির ভূমিকা নিয়ে। একটি মহল দাবি করছেন একাত্তর টিভি ‘ইসলাম বিদ্বেষী’। বলা হচ্ছে দালাল। অথচ এই একাত্তর সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কাজ করে। সংবাদ নয় সংযোগের মাধ্যমে প্রাান্তিক মানুষের মণিকোঠায় ঠাঁই করে নিয়েছে একাত্তর।
মুক্তিযোদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী একাত্তর টিভিতে আমি আনুষ্ঠানিক সম্প্রচারের আগে থেকে কাজ করছি। সত্য ও সুন্দরের জন্যে কাজ করে প্রশংসিত হয়েছি। অনিয়ম দুর্নীতি আর সমাজের সমস্যা সম্ভবনার কথা তুলে ধরায় অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। সত্য প্রকাশ করতে গিয়ে ক্ষমতাশালীদের যখন হুমকি ধমকি খাচ্ছি তখন অন্য দলের নেতা কর্মীরা বাহবা জানিয়েছেন। কঠিন মুহূর্তে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা হিসেবে সাহস যুগিয়েছেন। এ সাহস যোগানো মানুষগুলোই এখন আবার একাত্তর টিভি নিয়ে সমালোচনা করছেন। অর্থাৎ এবার নিজের গায়ে লেগেছে। অথবা মতের বিপক্ষে রিপোর্ট প্রচার হয়েছে। আজহারী অথবা নুরকে অন্ধ বিশ্বাস করে বলে ‘একাত্তর টিভি’ তাদের কাছে এখন প্রশ্নবিদ্ধ নাম।
Advertisement
প্রান্তিক লেভেলে কাজ করি বলে খুব ভালো ভাবে মানুষের ভেতরের চরিত্র আঁচ করতে পারি। একাত্তর টিভির বিরুদ্ধে যখন একটি চক্র সক্রিয় তখন অন্তত বুঝতে বাকি নেই আমি কারো কারো প্রিয়ভাজন থেকে অপ্রিয় হয়ে উঠেছি। যারা আমার কাজকে সাধুবাদ জানাতেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আজ আঘাত মূলক মন্তব্য করছেন। যদিও এখনো অনেকেই সামনা-সামনি প্রশংসায় ভাসান। মানুষের পক্ষে সাহসী রিপোর্ট করি বলে বিনিময়হীন ভালোবাসা প্রকাশ করেন।
যারা একাত্তর টিভির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, একটু ভাবুন। গভীর ভাবে ভাবুন। মিডিয়া বা গণমাধ্যম তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করে মাত্র। এক্ষেত্রে ভুল বা অনিয়মের সঠিকতা যাছাইয়ের সুযোগ করে দেয় মিডিয়া। এ কাজ করাতেই আজ দেশের মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ‘একাত্তর টিভি’। একটি পক্ষ দাবি তুলছে একাত্তর বয়কট করার। কিন্তু ইচ্ছে করলেই সবকিছু বয়কট করা যায় না। কারণ কোটি মানুষের ভালোবাসায় এগিয়ে যাবে একাত্তর। মানুষের জন্যে কাজ করে যাবে একাত্তর। জয়তু একাত্তর।
লেখক : গল্পকার ও সাংবাদিক।
এইচআর/পিআর
Advertisement