জাতীয়

প্রতিবেশী দেশগুলোর স‌ঙ্গে অর্থনৈতিক ঐক্য চায় বাংলাদেশ-ভারত

মহামারির প্রভাব বিবেচনায় রেখে এখন আঞ্চ‌লিক সহ‌যো‌গিতা জরু‌রি। তাই দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক ঐক্য চায় বাংলাদেশ ও ভারত।

Advertisement

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিশ্ব নেতাদের পরিকল্পনা জান‌তে ১০০ দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে এফআইসিসিআই লিডস-২০২০ অনলাইন সম্মেলনে এ তথ্য জানা‌নো হয়।

সম্মেলনে এফবিসিসিআই-এর (ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ) সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, ভারত সরকারের বস্ত্র, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রিপরিষদ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, এফআইসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট ডা. সংগীতা রেড্ডি, বিশ্ব ব্যাংক, দক্ষিণ এশিয়ার কান্ট্রি ডিরেক্টর জুনায়েদ আহমদ, রাষ্ট্রদূত সুনজয় সুধীর, এফএনসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট ভবানী রানা, ফেডারেশন অব আফগান চেম্বারস-এর চেয়ারম্যান ইসমাইল গাজানফার, শ্রীলঙ্কার জ্যাট হোল্ডিংস-এর সিইও নিশাল ফারদিন্যান্দো, টাইমস অব ইন্ডিয়ার কূটনীতিক সম্পাদক ইন্দ্রানী বাগচি, এফআইসিসিআই-এর এসজি দিলীপ চনয় এবং এফআইসিসিআই-এর সাউথ এশিয়া অ্যান্ড মাল্টিল্যাটেরালস ডিরেক্টর সুষমা নায়ার বক্তব্য রাখেন।

সম্মেলনে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ককে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এমন সকল বাধা কাটিয়ে ২০০৮ সাল থেকে আমরা সংস্কৃতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং ক্রীড়া ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিসরে সম্পৃক্ততা এবং সহযোগিতার জন্য অনন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। ধারাবাহিক টেকসই উন্নয়নে আমাদের নেতৃবৃন্দ নিজেদের ভাবনা বিনিময় করেছে, যা আমাদের বর্তমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কেরই প্রতিফলন। আমরা এও দেখেছি যে, কোভিড ১৯-এর সময় আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার নেতৃবৃন্দ দক্ষিণ এশিয়ার সীমানা ছাড়িয়ে এর বাইরেও মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপনে একত্রিত হয়েছেন।’

Advertisement

ভ্যালু চেইন সর্বাধিকীকরণের জন্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল, সার্ক অর্থনৈতিক অঞ্চল বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য অন্যান্য দেশকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের বর্তমান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশে ভারত মনোনীত অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো আরও কৌশলগত বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি করেছে, যা বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে। আমরা আমাদের আঞ্চলিক ভ্যালু চেইন উদ্যোগের (আরভিসিআই) বাণিজ্য পুনরুদ্ধারে আঞ্চলিক শিল্পের জন্য প্রতিবেশী দেশ থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ, বাংলাদেশের উত্পাদন প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সুবিধা গ্রহণ করে বিভিন্ন অঞ্চলে রফতানি করতে পারি এবং জ্ঞান ও সম্পদ বিনিময় ভিত্তিক বৈশ্বিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে আঞ্চলিক ভ্যালু চেইন বিস্তৃত করতে পারি।’

মহামারির সময়েও বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্য এবং বিকাশের কথা তুলে ধরে ফজলে ফাহিম বলেন, ‘আমরা আমাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোসিস্টেম আরও উন্নীত করার লক্ষ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাই টেক পার্ক, মাল্টিমোডাল কানেকটিভিটি, আকাশ, সড়ক, রেল ও নৌপথের মাধ্যমে বাণিজ্যিক লজিস্টিক খাতসহ অন্যান্য উন্নয়ন খাতে ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ বিনিয়োগ করেছি। এছাড়া বাংলাদেশের উত্পাদন প্রতিযোগিতামূলক বাজারের সুবিধা সর্বাধিকীকরণের জন্য শুল্ক-শুল্কমুক্ত সুবিধা, ব্যবসায়ের সহজলভ্যতার জন্য নীতি কাঠামো নির্ধারণের কাজ চলছে। আমাদের ১৬০ মিলিয়নের শক্তিশালী দেশীয় বাজার, ১.৮ বিলিয়নের দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক বাজার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, চীন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, এপিটিএ-এর (এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট) জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধা ইত্যাদি ভ্যালু চেইন উদ্যোগের পরিপূরক সম্ভাবনা।’

ভারতের বস্ত্র, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেন, ‘মহামারির প্রভাব বিবেচনায় রেখে এখনই আমাদের আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ঐক্যের বিষয়টি নতুন করে ভাবার সময়। এ অঞ্চলে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং আন্তঃনির্ভরশীলতার পাশাপাশি সহযোগিতার অপার সুযোগ রয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে পণ্য উত্পাদন করার মতো বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করার মাধ্যমেই হতে পারে আমাদের নতুন বন্ধন, নতুন পরিচয়।’

এফআইসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘প্রতিবেশী হিসেবে যেকোনো সংকট কাটিয়ে উঠতে আমরা একে অপরকে সাহায্য করতে পারি। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে একটি ক্রমাঙ্কিত এবং নিয়মতান্ত্রিক সম্পর্ক আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য ঐক্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আর্থ-সামাজিক সীমাবদ্ধতাগুলো মোকাবিলায় সহায়তা করবে।’

Advertisement

এসআই/এফআর/জেআইএম