আন্তর্জাতিক

অর্থনীতির সাময়িক ক্ষতি কমলেও দীর্ঘমেয়াদে কী হবে?

মাস ছয়েক আগে করোনাভাইরাস মহামারির শুরুর দিকে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যতটা ধস নামবে আশঙ্কা করা হয়েছিল, এখন আর সেটিকে ততটা ভয়ঙ্কর মনে হচ্ছে না। গত ১৩ অক্টোবর প্রকাশিত সবশেষ ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকে চলতি বছরে বৈশ্বিক জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) সংকোচনের হার ৪ দশমিক ৪ শতাংশ হতে পারে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

Advertisement

এর আগে, গত জুনে মহামারির কারণে বৈশ্বিক জিডিপি ৪ দশমিক ৯ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিল আইএমএফ। ২০২১ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতি তুলনামূলক স্বস্তিতে থাকবে ধরলেও এর দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। আইএমএফের কথায়, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়াটি হবে দীর্ঘ, অসম এবং অনিশ্চিত।

এরপরও, বছরের শুরুর দিকে বিশ্বব্যাপী মহামারি ছড়িয়ে পড়ার আগে অর্থনীতির যে অবস্থা ছিল, বর্তমান পরিস্থিতি তার তুলনায় বেশ শোচনীয়। চলতি বছর বড় দেশগুলোর বেশিরভাগই গভীর মন্দায় পড়বে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

এ বছর মহামারির ধাক্কায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সংকুচিত হতে পারে ৪ শতাংশ, তবে ব্রিটেনে এর হার থাকবে ১০ শতাংশের কাছাকাছি। ২০০৯ সালে বৈশ্বিক মন্দার সময় এর অর্ধেকও ভুগতে হয়নি দেশ দু’টিকে।

Advertisement

চলতি বছর বড় অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে শুধু চীনের প্রবৃদ্ধিই বাড়তে পারে, সেটিও হবে মাত্র ১ দশমিক ৯ শতাংশ। এ বছরের শুরুতে যেখানে ভারতের প্রবৃদ্ধি আশা করা হয়েছিল ১ দশমিক ৯ শতাংশ, এখন সেটি ১০ দশমিক ৩ শতাংশ কমতে চলেছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের অনেকেই যেমন দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক জটিলতায় ভোগেন, বৈশ্বিক অর্থনীতিও সেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আইএমএফের শঙ্কা, ২০২৫ সালেও জনপ্রতি বৈশ্বিক জিডিপি চলতি বছরের শুরুর তুলনায় কম থাকবে।

মহামারির কারণে দরিদ্র দেশগুলো আরও পিছিয়ে পড়বে। এখন থেকে পাঁচ বছর পর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৭ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গড় প্রবৃদ্ধির তুলনায় পুরো এক শতাংশ কম।

অর্থনীতির দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির জন্য বেশ কিছু কারণকে দায়ী করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। তাদের মতে, করোনা মহামারির কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির অবকাঠামো ও ভোক্তাদের কেনাকাটার অভ্যাস বদলে যাবে। কর্মস্থলগুলোকে সামাজিক দূরত্ব নীতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। পর্যটন খাত হয়তো আর কখনোই পুরোপুরি আগের অবস্থায় ফিরবে না।

Advertisement

সংকুচিত হতে থাকা ব্যবসাগুলো থেকে ক্রমবর্ধমান খাতে শ্রমিক ও বিনিয়োগ পুনর্বন্টনে সময় লাগবে। উচ্চ বেকারত্বের হার এবং দেউলিয়াত্ব বৃদ্ধিরও ভয়াবহ প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে। এতে বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতি কমে যেতে পারে।

সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট

কেএএ/পিআর