লাইফস্টাইল

যে ৫ খাবার অন্ত্রের ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে

বিভিন্ন দেশের উচ্চ মৃত্যু হারের অন্যতম কারণ ক্যান্সার। বিজ্ঞানী এবং গবেষকরা এখনও ক্যান্সারের উচ্চ সংক্রমণের সঠিক কারণ খুঁজে পেতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা আমাদের জীবনযাত্রা, ডায়েটরি এবং অন্যান্য অভ্যাসকে ক্যান্সারের প্রধান কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, ধূমপান ফুসফুস এবং মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে যা অনেক সময় মারাত্মক রূপ নিতে পারে। বিস্তারিত প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া-

Advertisement

তবে ক্যান্সার প্রতিরোধ ব্যাপারটা নিজে কতটুকু সর্তক থাকছেন তার উপর নির্ভর করে। যেমন-প্রতিদিন দুধ পান করলে তা অন্ত্র বা পেটের ক্যান্সারের ঝুঁকি যথেষ্ট হ্রাস করতে পারে। অন্ত্রের ক্যান্সার, যা কোলোরেক্টাল ক্যান্সার নামেও পরিচিত, এটি শরীরের হজম ব্যবস্থাকে এবং মলদ্বারের মতো অঙ্গগুলোকে প্রভাবিত করে। তাই আপনার দেহের হজম ক্রিয়ার জন্য এটি অপরিহার্য।

পেটের ক্যান্সার প্রতিরোধে দুগ্ধজাতীয় খাদ্যগুট জার্নালে প্রকাশিত সাম্প্রতিক গবেষণাগুলোতে বলা হয়েছে যে, দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার ফলে অন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়।গবেষণায় আরও বলছে এমন কোনো বাস্তবিক প্রমাণ নেই যে রসুন, পেঁয়াজ, মাছ, চা বা কফি এসব কিছু পেটের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। গবেষকরা ক্লিনিকাল ট্রায়াল এবং সিস্টেমেটিক মেটা-বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, পেটের বা অন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে ডায়েটরি এবং মেডিসিনাল ফ্যাক্টর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

মেডিসিনাল ফ্যাক্টরগুলোর মধ্যে অ্যাসপিরিন, অ-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগস (এনএসএআইডি) যেমন- প্যারাসিটামল এবং স্ট্যাটিন অন্তর্ভুক্ত থাকে, আবার খাদ্যতালিকাগুলোতে ভিটামিন বা এর পরিপূরক যেমন- (ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন এ, বি, সি, ই, ডি) ক্যারোটিন এবং কফি, চা, মাছ এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, দুগ্ধজাত পণ্য, ফাইবার, ফলমূল এবং শাকসবজি, মাংস এবং অ্যালকোহল জাতীয় দ্রব্যাদি থাকে।

Advertisement

অ্যাসপিরিন পেটের বা অন্ত্রের ক্যান্সারকে প্রতিরোধ করতে পারে এবং দিনে ডোজ হিসেবে সর্বনিম্ন ৭৫ মিলিগ্রাম থেকে সর্বোচ্চ ৩২৫ মিলিগ্রাম সেবনে ক্যান্সারের ঝুঁকি ১৪-২৯ শতাংশ হ্রাস পায়। দেখা গেছে দুগ্ধজাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে ও ১৩-১৯ শতাংশ লোকের অন্ত্র ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস পেয়েছে।

পেটকে সুস্থ রাখতে আপনার খাদ্যতালিকায় ৫টি খাবার রাখুন:

শুধুমাত্র দুগ্ধজাতীয় খাদ্যদ্রব্য নয় বরং অন্যান্য খাদ্য উপাদান ও আপনার অন্ত্র বা পেটকে সুস্থ রাখতে এবং অবাঞ্ছিত রোগ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করতে পারে। চলুন জেনে নেয়া যাক-

দইদই প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার। এতে উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে যা আপনার পেটকে ভালো এবং স্বাস্থ্যকর রাখে। এটি হজমশক্তি বৃদ্ধি করে, যা চূড়ান্তভাবে প্রদাহ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে।

Advertisement

পালংশাকসম্প্রতি গবেষণা অনুসারে, পালং শাক ম্যাগনেসিয়ামের একটি ভালো উৎস। যা বিশেষত অন্ত্র ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে। আধা-কাপ শাকের মধ্যে ৭৮ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম থাকে। এছাড়াও পালং শাক ফাইবারসহ অন্যান্য অনেক পুষ্টিতে সমৃদ্ধ, যা হজমশক্তি বাড়ায়।

ফল-মূল কলা, আম, পেঁপে ইত্যাদির মতো কয়েকটি ফল প্রচুর ডায়েটি ফাইবারে সমৃদ্ধ। ফাইবার জাতীয় ফল হজমে অনেকাংশে সহায়তা করে এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবারগুলো রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত রাখে। ফাইবার জাতীয় খাবার সুগার লেভেল বেশি বাড়তে বাধা দেয়।

বাদামওজন হ্রাসের জন্য স্বাস্থ্যকর একটি খাবার হলো বাদাম। অতিরিক্তভাবে, তারা অন্ত্রকে স্বাস্থ্যকর রাখে। ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় বাদাম অন্ত্র বা পেটকে স্বাস্থ্যকর রাখে এবং খাদ্য হজমে সহায়তা করে। ভিটামিন সমৃদ্ধ এই খাবার ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে তোলে।

শিম এবং ডালরাজমা বা ছানার মতো শিমগুলোতে প্রচুর ফাইবার থাকে যা স্বাস্থ্যকর হজমে সহায়তা করে। তবে, এই জাতীয় খাদ্যদ্রব্য দিয়ে তরকারি না খাওয়া ভালো। এগুলো স্যান্ডউইচ, সালাদ ইত্যাদিতে মেশালে উপকারী এবং সুস্বাদুও হতে পারে।

মামুন খান/এইচএন/এএ/জেআইএম