দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। বর্তমানে দেশের মানুষের মধ্যে করোনার প্রতিরোধের প্রস্তুতির বিষয় হারিয়ে যাচ্ছে। করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কবে আসবে তা অনিশ্চিত। সুতরাং মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই করোনাভাইরাস সংক্রমণমুক্ত থাকার সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা।
Advertisement
রাজধানীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের অনেকেরই লক্ষণ বা উপসর্গ ছিল না। অভিজাত শ্রেণি থেকে বস্তির বাসিন্দা নারী ও পুরুষ সব বয়সের মানুষই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। সুতরাং কার করোনা আছে কার নেই সেদিকে খেয়াল না করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চর্চা ও অভ্যাস অব্যাহত রাখতে হবে। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কষ্টসাধ্য হবে।
সোমবার (১২ অক্টোবর) ইউএসএইডের সহায়তায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) ও আইসিসিডিআরবি কর্তৃক যৌথভাবে পরিচালিত ‘প্রিভিলেন্স, সেরোসার্ভিল্যান্স ও জেনোমিক ইপিডিমিওলজি অব কোভিড-১৯ ইন ঢাকা’ শীর্ষক জরিপ প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে বক্তারা আগামী দিনগুলোতে করণীয় সম্পর্কে সতকর্তামূলক এসব কথা বলেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর ৪৫ শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তদের ২৪ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি। গত জুলাই পর্যন্ত অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় এসব তথ্য পাওয়া যায়।
Advertisement
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকা শহরের বস্তির প্রায় তিন-চতুর্থাংশ মানুষ ইতোমধ্যে সংক্রমিত হয়েছে। করোনার কোনো লক্ষণ ছিল না এমন ৪৫ শতাংশ নগরবাসী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে পরীক্ষায় ধরা পড়েছে।
গবেষণার জন্য ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্য থেকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে ২৫টি ওয়ার্ড বেছে নেওয়া হয়। প্রতি ওয়ার্ড থেকে একটি মহল্লা বাছাই করা হয়। প্রতি মহল্লা থেকে ১২০টি খানা জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া আটটি বস্তিকে এ জরিপে যুক্ত করা হয়। ঢাকা শহরের সাধারণ খানার নমুনা সংগ্রহ করা হয় মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য জুলাই পর্যন্ত। বস্তির মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয় মধ্য জুলাই থেকে আগস্টের শেষ পর্যন্ত।
করোনাভাইরাসের জিন বিশ্লেষণ করে গবেষকরা অনুমান করছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
Advertisement
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. শহীদউল্ল্যা, ইউএসএইড বাংলাদেশের মিশন ডিরেক্টর ডেরিক ব্রাউন, আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন, আইসিডিডিআরবির সিনিয়র বিজ্ঞানী শামসুল আরেফিন প্রমুখ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইসিডিডিআরবির ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, এ গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য সামনের দিনগুলোতে করোনা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এমইউ/এসএইচএস/পিআর