নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের একলাশপুরে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন প্রধান আসামি বাদল ও ৫নং আসামি সাজু।
Advertisement
তবে মামলার ৯নং আসামি রহমত উল্লাহকে রিমান্ড শেষে আদালতে তোলা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দেয়ায় তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রোববার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল জানান, সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসফিকুল হকের খাসকামরায় প্রধান আসামি বাদল ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নবনীতা গুহর খাসকামরায় ৫নং আসামি সাজু ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় দুটি মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠান আদালত।
এর আগে রোববার সকালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নোয়াখালীর ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে নির্যাতনের শিকার ওই নারীর ঘর থেকে জামা-কাপড়, বালিশ, বিছনার চাদরসহ মামলার বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়। এ সময় বাড়ির পাশের খালে এবং পুকুরে আরও কিছু আলামত উদ্ধারের জন্য জাল ফেলে ও ডুবুরি নামিয়ে খোঁজাখুঁজি করা হয়।
Advertisement
পরে স্থানীয় লোকজনকে সাক্ষী করে আলামতগুলোর জব্দ তালিকা প্রস্তুতের পর জেলা পিবিআই কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় নির্যাতিত নারীর দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারি উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনাস্থল থেকে আলমত উদ্ধার করছে পিবিআই
এনিয়ে এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মোট ৬ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন। এর মধ্যে বাদল প্রধান আসামি ও আবদুর রহিম মামলার ২নং আসামি।
অপর ৪ আসামি হলেন সাজু, ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ, রাসেল ও সাহেদ। সোহাগের নাম মামলার এজাহারে না থাকলেও তদন্তে তাদেরকে যুক্ত করা হয়। মামলায় গ্রেফতার ১১ আসামির মধ্যে ৩ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
Advertisement
প্রসঙ্গত, ঘরে ঢুকে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন এবং ঘটনার সময় মুঠোফোনে ধারণ করা একটি ভিডিও গত ৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওইদিন রাতে পুলিশ নির্যাতনের শিকার ওই নারীকে খুঁজে বের করে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়।
ওই রাতেই ভুক্তভোগী বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করেন। দুই মামলার এজাহারে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়। দুই মামলায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত ৬ জন এবং তদন্তে যুক্ত করা হয়েছে ৫ জনকে।
মিজানুর রহমান/এফএ/জেআইএম