সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক সপ্তাহের বেশি সময় আগে তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ার পর তিনি তিনদিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। হাসপাতালে থেকে ছাড়া পেয়ে বর্তমানে তিনি হোয়াইট হাউসেই অবস্থান করছেন।
Advertisement
সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ব্যক্তিগত চিকিৎসক শন কনলি জানিয়েছেন, তার কাছ থেকে অন্যদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আর নেই। শনিবার প্রেসিডেন্টের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে এ তথ্য জানা গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
করোনাকে পেছনে ফেলে নির্বাচনী প্রচারণায় ফিরতে চাচ্ছেন এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। হাসপাতালে ছাড়ার পর শনিবার বিকেলে প্রথমবারের মতো হোয়াইট হাউসের বারান্দা থেকে সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন ট্রাম্প। আগামী ৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে তার প্রতি সমর্থন জানাতে হাজার হাজার কৃষ্ণাঙ্গ ও লাতিনো সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
এদিকে, শনিবার এক বিবৃতিতে শন কনলি জানিয়েছেন, ট্রাম্পের করোনা টেস্টে দেখা গেছে, তিনি এখন আর অন্যদের জন্য ঝুঁকির কারণ নন। পরীক্ষার ফলাফল বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের শরীরে সক্রিয়ভাবে ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরির কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
Advertisement
তবে কনলির ওই প্রতিবেদন থেকে ট্রাম্পের করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে কিনা সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। এমনকি হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
গত ২ অক্টোবর ট্রাম্পের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রথম প্রকাশ পায়। সে সময় জানা যায় যে, মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, প্রেসিডেন্টের আক্রান্তের খবরের পর একের পর এক হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তার করোনা সংক্রমণের খবর সামনে আসতে শুরু করে।
ট্রাম্পের করোনা পরীক্ষার ফল কবে নেগেটিভ ধরা পড়েছে সে বিষয়টি এখনও প্রকাশ করেনি হোয়াইট হাউস। ট্রাম্প করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে নানা ধরনের গুঞ্জন শুরু হয়। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে তিনদিন পরেই হাসপাতাল থেকে হোয়াইট হাউসে ফিরে যান এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সবকিছু থেকে দূরে থাকার পর নির্বাচনী প্রচারণীয় ফিরে যেতে উদগ্রীব হয়ে আছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি সোমবার ফ্লোরিডায় যাবেন। মঙ্গল ও বুধবার তার পেনসিলভানিয়া এবং লোয়াতে সমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে, শনিবার হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, আমি এখন খুব চমৎকার অনুভব করছি।
Advertisement
তবে ট্রাম্পের এমন কাজের সমালোচনা করেছে বিরোধী দল ডেমোক্র্যাট। তারা ট্রাম্পের সমর্থকদের ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে বাইডেনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, প্রেসিডেন্ট এবং তার সমর্থকরা স্বাস্থ্যগত সতর্কতা মেনে চলবেন।
তিনি বলেন, তাদের উচিত সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং মাস্ক ব্যবহার করা। তিনি আরও বলেন, এটাই করার মতো একমাত্র দায়িত্ব। বারান্দায় দাঁড়িয়ে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন ট্রাম্পের মুখে মাস্ক ছিল না। এছাড়া তার সমর্থক যারা সেখানে ভিড় করেছিলেন তাদের মধ্যে অনেকেই মাস্ক পরা থাকলেও সঠিকভাবে সামাজিক দূরত্ব কেউ মেনে চলেননি।
এই আয়োজনের মাধ্যমে ট্রাম্প নিজেকে পুরোপুরি সুস্থ ও নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত প্রমাণের চেষ্টা করছেন বলে ধারণা করছেন অনেকেই। সমর্থকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, আপনাদের এখানে স্বাগত জানাতে পেরে আমি নিজেকে সম্মানিত মনে করছি। হোয়াইট হাউসে এই আয়োজনকে আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বলছি। ওই সমাবেশে অনেক নারী-পুরুষ ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়ে উপস্থিত হয়েছেন।
টিটিএন/জেআইএম