খেলাধুলা

প্রতিরাতে কেঁদেছিলেন সুয়ারেজ

৬টি বছর স্বপ্নের মত কাটিয়ে দিয়েছেন বার্সেলোনায়। পুরোটা সময় ছিলেন মেসির একেবারে কাছের সতীর্থ। এর মধ্যে কখনো নেইমার, কখনো কৌতিনহো কিংবা কখনো জাভি-ইনিয়েস্তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে খেলেছেন। বার্সাকে জিতিয়েছেন অসংখ্য ম্যাচ।

Advertisement

কিন্তু একটি মৌসুমের খারাপ ফর্মই সব অর্জন কেড়ে নিয়েছে। লুইস সুয়ারেজের গত মৌসুমটা ভালো যায়নি। বার্সেলোনাও জিততে পারেনি একটি শিরোপাও। সর্বশেষ বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৮-২ গোলের বিশাল পরাজয়। এরপরই বার্সায় রব উঠে যায়, সিনিয়র খেদাও।

সেই রব ওঠার পর সবার আগে শিকারে পরিণত হলেন তিনজন। ক্রোয়েশিয়ান ইভান রাকিটিচ, চিলিয়ান আর্তুরো ভিদাল এবং উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ। তবে, এই তিন জনের মধ্যে সুয়ারেজের বিদায়টা ছিল খুবই দুঃখজনক। তার সঙ্গে যে আচরণ করে বার্সা বিদায় দিয়েছে, তা ছিল চরম নির্লজ্জতার পরিচয়। এ নিয়ে খোদ মেসি পর্যন্ত মন্তব্য করতে বাধ্য হয়েছেন। বলেছেন, ‘এটা ছিল খুবই লজ্জাজনক একটি বিষয়।’

সুয়ারেজ বার্সার সাইড বেঞ্চেও বসে থাকতে রাজি ছিলেন। তবুও তিনি কোনোভাবে চাননি ন্যু ক্যাম্প ছেড়ে যেতে। শেষ দিকে বার্সার কর্মকর্তারা এবং নতুন কোচ (রোনাল্ড কোম্যান) তার সঙ্গে যে আচরণ করেছিলেন, সেটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি সুয়ারেজ। যে কারণে, বার্সা ছাড়ার আগে লজ্জা, অপমান আর ক্ষোভে কান্না চলে আসতো তার। প্রতি রাতেই এভাবে কান্না করতেন বলে নিজেই জানিয়েছেন বার্সার সাবেক এই স্ট্রাইকার।

Advertisement

বার্সেলোনা থেকে বিদায় নেয়ার পর সুয়ারেজ যোগ দিলেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে। উরুগুয়ের হয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ খেলার জন্য এখন সুয়ারেজ অবস্থান করছেন নিজ দেশে। সেখানকার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বার্সায় কাটানো শেষ সময়গুলোর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন সুয়ারেজ।

এইউএফ টিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সুয়ারেজ বলেন, ‘আমার জন্য খুবই কঠিন সময় ছিল তখন। বার্সা ছাড়তে হবে জানার পর প্রতিটা রাত আমি কেঁদেছি। কারণ ওখানে আমার সমস্ত আবেগ-অনুভূতি মিশে গিয়েছিল। আমি কখনোই ভাবতে পারিনি, এই শহর (বার্সেলোনা) ছেড়ে যেতে হবে। আমার স্ত্রী, ছেলে-মেয়েদের জন্যও এটা খুব দুঃখজনক একটি ঘটনা।’

তবে শেষ পর্যন্ত অ্যাটলেটিকোয় যোগ দিতে পেরে খুশি সুয়ারেজ। তিনি বলেন, ‘যখন অ্যাটলেটিকোয় যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলো, তখন সেটাকে আমি লুফে নিলাম। আমি শহর পরিবর্তন করেছি ঠিক, তবে স্পেনে জীবন-যাপন একই। পরিবেশও একই রকম। মানিয়ে নিতে কষ্ট হচ্ছে না আমাদের।’

সুয়ারেজের বিদায়ের পর তার সঙ্গে করা আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তার দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং সতীর্থ লিওনেল মেসি। বার্সার আর্জেন্টাইন অধিনায়ক বলেন, ‘যেভাবে অপমান করে বের করে দেয়া হয়েছে সেটি কোনোভাবেই প্রাপ্য নয় সুয়ারেজের।’

Advertisement

আইএইচএস/পিআর