দেশজুড়ে

করোনার উদ্ভট রিপোর্টে বিপাকে সিলেটের বিদেশগামীরা

সিলেটে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার ত্রুটিপূর্ণ ফলাফল নিয়ে বিপাকে পড়ছেন বিদেশগামী যাত্রীরা। গত চারদিন ধরে সিলেটের দুটি পিসিআর ল্যাব থেকেই করোনার নমুনা পরীক্ষায় বেশির ভাগের রিপোর্ট আসছে ‘অনির্দিষ্ট’।

Advertisement

পরীক্ষার ফলাফল ‘পজিটিভ’ বা ‘নেগেটিভ’ কোনোটাই শনাক্ত করতে না পেরে ল্যাব থেকে রিপোর্টে লিখে দেয়া হচ্ছে ‘অনির্দিষ্ট’। ফ্লাইট ছাড়ার মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে এমন উদ্ভট রিপোর্ট পেয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বিদেশগামী যাত্রীরা। আর এ কারণে বাধ্য হয়েই বাতিল করতে হচ্ছে ফ্লাইট।

হঠাৎ করে সিলেটের দুই ল্যাবে ত্রুটিপূর্ণ এমন রিপোর্ট আসতে শুরু করায় দুশ্চিন্তায় ল্যাব সংশ্লিষ্টরাও। এ রকম সমস্যা সমাধানে ‘জিন এক্সপার্ট আরটি পিসিআর মেশিন’ আনার উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত চারদিনে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় ৫৮ জন বিদেশগামী যাত্রীর রিপোর্ট আসে ‘অনির্দিষ্ট’। ফ্লাইটের ৪৮ ঘণ্টা আগে ত্রুটিপূর্ণ এমন উদ্ভট রিপোর্ট পাওয়ার পর যাত্রীদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। উপায়ান্তর না পেয়ে অনেকেই ফ্লাইট বাতিল করেছেন। তবে জরুরিভাবে গত (৬ অক্টোবর) মঙ্গলবার রাতে কয়েকজন বিদেশগামী যাত্রীর নমুনা পুনরায় সংগ্রহ করে রিপোর্ট দেয় ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব কর্তৃপক্ষ।

তবে হঠাৎ করে কী কারণে নমুনা পরীক্ষায় এ সমস্যা হচ্ছে তা নির্দিষ্ট করে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

Advertisement

যুক্তরাজ্য প্রবাসী আকমল ইসলাম চৌধুরী জানান, ঢাকা থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে তার ফ্লাইট ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্টে লিখে দেয়া হয় ‘ইনডিটারমিনেট’। ইতোমধ্যে তিনি বিদেশযাত্রার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলেন। কিন্তু ত্রুটিপূর্ণ রিপোর্ট আসায় তিনি ফ্লাইট বাতিল করেন।

এ বিষয়ে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা ১২ থেকে ১৪ হাজারের মতো বিদেশগামী যাত্রীর নমুনা সংগ্রহ করেছি। কখনও ভুল হয়নি। গত কয়েকদিন দিন ধরে ভুল রিপোর্ট আসছে। নমুনা সংগ্রহে ভুল হলে আগেও রিপোর্ট ভুল আসত। এখন কী কারণে এটা ঘটছে আমরা এখনও বলতে পারছি না। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।

এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ময়নুল হক বলেন, ওসমানী মেডিকেলের ল্যাবে এ পর্যন্ত ৩৮ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। কোনো সময় এ ধরণের সমস্যা হয়নি। সমস্যা নমুনা সংগ্রহেও হতে পারে, যন্ত্রেরও হতে পারে। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি।

বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিস সিলেটের সহকারী পরিচালক (রোগ নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণ) ডা. আনিসুর রহমান জানান, বিদেশগামী যাত্রীদের নমুনা সংগ্রহ করা হয় সিভিল সার্জন অফিসের মাধ্যমে। এর আগে কখনও এ রকম সমস্যা না হলেও গত কয়েকদিন ধরে শুধুমাত্র বিদেশগামী যাত্রীদের ক্ষেত্রে এমনটি হচ্ছে। সমস্যা কোথায় তা চিহ্নিত করা যায়নি। তবে সমস্যা সমাধানে একটি ‘জিন এক্সপার্ট আরটি পিসিআর মেশিন’ আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে মেশিনটি চলে আসার কথা রয়েছে। তখন কারও নমুনা পরীক্ষা নিয়ে ত্রুটি দেখা দিলে এক ঘণ্টার মধ্যে পুনরায় পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেয়া যাবে।

Advertisement

ছামির মাহমুদ/আরএআর/পিআর