মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড পাবলিকেশন্স (ডিসিপি) এর ফটোগ্রাফার হিসেবে কর্মরত আছেন। স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ থেকে বিবিএ ও এমবিএ করেছেন। তিনি বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ও বাংলালিংক আয়োজিত প্রথম পর্যটন আলোকচিত্র প্রদর্শনী ২০০৮ এবং GTZ, Cooperation People’s Republic of Bangladesh & Federal Republic of Germany, Ges এবং দৃক আয়োজিত ‘Security in Dhaka’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা ও ছবি প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেন। এক বিকেলে চায়ের আড্ডায় সরকারি প্রতিষ্ঠানে একজন ফটোগ্রাফারের কাজের ধরন ও কাজ করার সুযোগের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জাগো জবসের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন গোলাম রাব্বী।জাগো জবস : পড়াশোনা করেছেন বিজনেস স্ট্যাডিজে অথচ হয়েছেন ফটোগ্রাফার; যোগসূত্র স্থাপন করলেন কিভাবে?মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান : ছোটবেলা থেকেই ছবির প্রতি আমার আগ্রহ। প্রায় ৪ বছর বয়স থেকেই ছবি ও ক্যামেরা চিনতে শুরু করি। সেই ছোটবেলার চেনা থেকে ছবির প্রতি প্রেম শুরু। তারপর শখ, শখ থেকে একসময় পেশায় রূপ নেয়। পড়াশোনার পাশাপাশিও ছবি তোলা হতো নিয়মিত। একসময় ইচ্ছা হলো পুরোপুরিই ফটোগ্রাফি করি। তারপর যেই ভাবনা সেই কাজ। জাগো জবস : ফটোগ্রাফার হিসেবেই কি চাকরি জীবন শুরু?মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান : ২০০৮ সালে পড়াশোনার পাশাপাশি ফটোগ্রাফি করতাম। কিন্তু সেটা পুরোপুরি প্রফেশনাল ছিল না। পড়াশোনা শেষ করে কিছুদিন একটা বায়িং হাউজে মার্চেন্ডাইজিং করেছি। সেখানেও ছবি ও প্রিন্টের কাজ ছিল। কিন্তু একটা সময় মনে হলো পুরোপুরি ফটোগ্রাফি ছাড়া আমার চলবে না। তাই শেষ পর্যন্ত ফটোগ্রাফিকেই শখ থেকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি। জাগো জবস : কার অনুপ্রেরণায় ফটোগ্রাফার হলেন?মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান : প্রথমত মুম রহমান ভাই আমাকে এ কাজে আসতে বেশি উৎসাহ যুগিয়েছেন। তারপর আমার শ্রদ্ধেয় রফিকুল ইসলাম স্যারের অনুপ্রেরণায় পেশাটিকে ভালোবেসে ফেলি। আর ছোটবেলার শখ তো রয়েছেই। জাগো জবস : ফটোগ্রাফিতে আপনার কোন প্রশিক্ষণ রয়েছে?মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান : হ্যা, ফটোগ্রাফির উপর অনেক কোর্স করেছি। বর্তমানেও আমি ফটোগ্রাফি বিষয়ে ডিপ্লোমা করছি। জাগো জবস : আপনি ফটোগ্রাফার হিসেবে সরকারের বড় একটি প্রতিষ্ঠানে যুক্ত আছেন। আবার ছুটির দিনে বা অফিসের পরে আউটডোরেও কিছু কাজ করেন; এত চাপ কিভাবে সামলান?মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান : ফটোগ্রাফি আমার নেশা ও পেশা। একাজে আমি কখনই ক্লান্ত হই না। অফিস থেকে বাসায় এসে আমি আমার মত কিছু প্রাকটিস করি। আবার শুক্রবার ও শনিবার অফিসের কাজ না থাকলে আশপাশে বেরিয়ে পড়ি। ঘুরে বেড়াই। প্রকৃতিতে যা পাই- ছবি তুলি। কাজটাকে আমি কখনই চাপ হিসেবে নেই না। কাজের মাঝে আনন্দ থাকলে সে কাজে কখনই ক্লান্তি আসে না।জাগো জবস : ফটোগ্রাফার হিসেবে সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ কেমন? মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান : সরকারি প্রতিষ্ঠানে ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সাধারণ পড়াশোনায় অবশ্যই ভালো করতে হবে। তার পাশাপাশি ফটোগ্রাফি করতে হবে। শিক্ষার ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে চর্চা করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি আমি একটি স্টুডিওর সাথে কাজ করতাম। সেই বাড়তি অভিজ্ঞতাই আমাকে সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেতে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছে। জাগো জবস : এ পেশায় আয় ও সুযোগ-সুবিধা কেমন?মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান : ফ্রিল্যান্সিং করে বেশ লাভবান হওয়া যায়। অনেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। নিজে স্টুডিও করে ভালো আয় করতে পারেন। আর এখন অনেক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সরাসরি ফটোগ্রাফার নিচ্ছে। সেখানেও অনেক সুযোগ রয়েছে। জাগো জবস : যারা ফটোগ্রাফার হতে চান তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান : আগ্রহ থাকতে হবে, শিখতে হবে, জানতে হবে, বুঝতে হবে এবং চর্চা করতে হবে। জাগো জবস : একটা ক্যামেরা কিনেই পার্ট টাইম কাজ করার বিষয়ে আপনার অভিমত কী?মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান : অনেকে মনে করেন, একটা ভালো ক্যামেরা হলেই একটি ভালো ছবি হবে। ভালো একটি ক্যামেরা এবং লেন্সের অবশ্যই দরকার আছে। তার আগে জরুরি হলো সেই ক্যামেরা ও লেন্সটাকে জানা। সেই সঙ্গে ছবি কিভাবে তুলতে হয় সে সম্পর্কেও জানতে হবে। সব ক্ষেত্রেই শিক্ষার একটা বিষয় আছে। জাগো জবস : ভবিষ্যৎ ফটোগ্রাফার নেতাদের উদ্দ্যেশ্যে আপনার পরামর্শ কী?মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান : কাজকে ভালোবাসতে হবে। কাজকে যত ভালোবাসা যাবে, মনোযোগী হওয়া যাবে, তত ভালো কাজ শেখা যাবে। আর ভালো করার চেষ্টাই আপনাকে সফলতা এনে দেবে।এসইউ/পিআর
Advertisement