শরীয়তপুরের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো চলছে ঢিলেঢালাভাবে। জোরালোভাবে শুরু হলেও বর্তমানে ক্লিনিকগুলোর সেবার মান কমে এসেছে। গত দু` বছর আগেও বন্ধ ছিল এ সকল ক্লিনিক। বর্তমানে ক্লিনিকগুলো পরিচালনার ক্ষেত্রে তদারকি বাড়ানো হলেও কার্যক্রমের গতি খুবই মন্থর। শরীয়তপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলার ৬টি উপজেলায় মোট ১২৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও বর্তমানে ১১১টি চালু রয়েছে। তার মধ্যে সদর উপজেলায় ১৩টি, নড়িয়ায় ১৭টি, জাজিরায় ২১টি, ভেদরগঞ্জে ৩৩টি, ডামুড্যায় ৯টি ও গোসাইরহাটে ১৮টি ক্লিনিকের কার্যক্রম চালু রয়েছে।সরেজমিনে শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, ক্লিনিক খোলা থাকায় রোগীর চাপ অনেক। নিয়মিত সরবরাহ করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র। এই ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা হাজতখোলা গ্রামের ৬ মাসের শিশু তাসফিয়ার মা সাহিদা বেগম বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমার মেয়েকে জন্মের পর থেকেই এখানে নিয়ে আসি । ডাক্তার আপাকে দেখিয়ে ওষুধ নেই। এখানে ক্লিনিক না হলে আমার বাচ্চা নিয়ে কোথায় যেতাম ?নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন হেলথ প্রোভাইডার জানান, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে তাদের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে তাদের সরকারি চাকরির বয়সও। বিভিন্ন সময় চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে তারা আন্দোলন কর্মসূচি চালালেও সরকার তাতে কর্ণপাত করছেন না। ফলে ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় থাকায় কর্মস্থলে তারা মনোযোগ দিতে পারছেন না। তাই তারা কার্যক্রম চালাচ্ছেন অনেকটা দায়সারাভাবে।নিয়ামতপুর গ্রামের মো. এনামুল হক (৫০) জানান, আমার বাড়ি ক্লিনিকের পেছনে। কোনো অসুখ হইলে আমি এখান থেকে ওষুধ নিয়ে খাই। তবে সব সময় ওষুধ পাওয়া যায় না। নিয়ামতপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সুরমা আক্তার জানান, প্রতিদিন এই কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রায় ৩০/৫০ জন রোগী সেবা নিতে আসে। ক্লিনিকে সরকার থেকে সরবরাহকৃত ওষুধ দিচ্ছি। জেলা কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার কমিটির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মেহেদি হাসান এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, মেয়াদ শেষে তাদের অনেকেরই সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাবে। ফলে তাদের চাকরি রাজস্ব খাতে নেয়ার দাবি জানান।তবে জেলার কোনো কোনো ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সহকারী ও কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডাররা নির্ধারিত সময় পর্যন্ত না থাকার অভিযোগ রয়েছে। আর সপ্তাহে দুদিন সরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক গিয়ে সেবা দেয়ার কথা থাকলেও তাদের কখনোই যেতে দেখেন না স্থানীয়রা। ফলে সরকারের কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দরিদ্র জনগোষ্ঠী।ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. নির্মল চন্দ্র দাস বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের মেয়াদ ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ শেষ হবে। তুলনামূলকভাবে কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবার মান অনেক ভালো। আসা করছি কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা হেলথ প্রোভাইডাদের ব্যাপারে সরকার অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন।এসএস/পিআর
Advertisement