ময়মনসিংহের তারাকান্দায় দাদরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিন দিয়ে দফতরি আব্দুল কাইয়ুমের বাড়ির বেড়া নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় নানা সমালোচনা চলছে। বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য জহিরুল আলম বলেন, এলাকায় শিক্ষা প্রসারে ১৯৪৮ সালে জমিদার বিধুভূষণ ভট্টাচার্যের ৫৫ শতাংশ জমিতে গড়ে তোলা হয় দাদরা বিদ্যালয়টি। পরবর্তীতে সেটি দাদরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রূপ পায়।
পাঁচ রুমের হাফ-বিল্ডিংটিতে দীর্ঘদিন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করলেও সম্প্রতি করোনার মধ্যে পরিচালনা কমিটির সভাপতি শামসুল আলম ও প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন কাউকে না জানিয়ে পুরাতন ঐতিহ্যবাহী ভবনের তিনটি রুম ভেঙে ইট, টিন ও কাঠ নিয়ে গেছেন। কিছু ইট, টিন ও কাঠ দিয়ে দফতরির বাড়ির সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্থানীয় আব্দুল হাকিম বলেন, রেজুলেশন ছাড়াই করোনার মধ্যে স্কুলের ঐতিহ্যবাহী ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়েছে এটা খুবই দুঃখজনক। ভবনটি ভেঙে ফেলায় পরিবেশটাও নষ্ট হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা ছায়ায় বসে খেলাধুলা করতে পারত এখন আর সেটি হবে না।
Advertisement
বিদ্যালয়ের টিন দিয়ে দফতরির বাড়ির বেড়া দেয়ায় এলাকায় সমালোচনা হচ্ছে। এগুলো বিক্রি করলে সাড়ে ৩ লাখ টাকার মতো হতো। যা দিয়ে স্কুলের উন্নয়ন কাজ করা যেত।
তবে স্কুলের দফতরির ভাই রহুল আমীন বলেন, এক সময় স্কুলটিতে ভালো পড়াশোনা হলেও এখন সেই অবস্থা নেই। বিদ্যালয়ে শিক্ষকরাও সময় মতো আসেন না। দলের প্রভাব খাটিয়ে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি স্কুলের বারোটা বাজিয়েছে। তাই তাদের ছেলে মেয়েদের মাদরাসায় ভর্তি করিয়েছেন।
ওই দফতরির মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ভবনের ইট, টিন, কাঠ শুধু আমরাই নিইনি। অন্যরাও নিয়েছেন। আমরা কিছু টিন দিয়ে বেড়া দিয়েছি।
এ বিষয়ে দাদরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিনের সঙ্গে বারবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
Advertisement
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি শামসুল আলম জানিয়েছেন, রেজুলেশন করেই পরিত্যক্ত ভবনের পাঁচ রুমের মধ্যে তিনটি রুম ভাঙা হয়েছে। ভবনের কিছু ইট স্কুলের বাউন্ডারির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর কিছু ইট, টিন এবং কাঠ দফতরির বাড়িতে রাখা হয়েছে। তবে সেগুলো দিয়ে বেড়া দেয়া হয়নি।
তারাকান্দা উপজেলা শিক্ষা অফিসার নীলুফার হাকিম বলেন, ভবন ভাঙার বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছ থেকে শুনে খোঁজ নিয়েছি। প্রধান শিক্ষক বলেছেন তারা নাকি রেজুলেশন করে ভবনটি ভেঙেছেন।
তবে তিনি সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি দেখবেন। পরে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান নীলুফার হাকিম।
এফএ/এমকেএইচ