আন্তর্জাতিক

আজারবাইজান-আর্মেনিয়া সংঘাতে প্রধান উসকানিদাতা এরদোয়ান : আসাদ

নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের প্রাণঘাতী লড়াইয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে প্রধান উসকানিদাতা বলে অভিযোগ করেছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ।

Advertisement

২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার সামরিক বাহিনীর মধ্যে নাগোরনো-কারাবাখ ঘিরে সংঘাত চলে আসছে। বিভিন্ন সময়ে এই সংঘাত জটিল আকার ধারণ করলেও এবারই প্রথম ভয়াবহ প্রাণঘাতী রূপ নিয়েছে।

মঙ্গলবার রুশ সংবাদ সংস্থা আরআইকে দেয়া প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের এক সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের ওই মন্তব্য দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সংঘাতকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

বাশার আল-আসাদ শুধু তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে প্রধান উসকানিদাতা হিসেবেই আখ্যা দেননি, বরং তিনি বলেছেন, সিরিয়া থেকে যোদ্ধাদের সরিয়ে নিয়ে সংঘাতপূর্ণ নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে মোতায়েন করেছে তুরস্ক।

Advertisement

কিন্তু নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে যে সংঘাত চলছে, তার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে তুরস্ক।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভূক্ত দেশ দুটির মাঝে নাগোরনো-কারাবাখ ঘিরে কয়েক দশকের পুরনো সংঘাত রয়েছে। আজারবাইজানের ভেতরে অবস্থিত জাতিগত আর্মেনীয়দের শাসনাধীন নাগোরনা-কারাবাখকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া অঞ্চল হিসেবে মনে করে আজারবাইজান।

অঞ্চলটির দখল ফিরে পেতে প্রয়োজনে সব ধরনের সামরিক উপায় অবলম্বনের হুমকি দীর্ঘদিন ধরে দিয়ে আসছিল দেশটি। সংর্ঘষের ফলে খ্রিষ্টান অধ্যুষিত আর্মেনিয়া এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ আজারবাইজানের সঙ্গে বিশ্ব মোড়লদের কূটনীতিতেও নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

বাশার আল-আসাদ বলেছেন, আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার মধ্যে নাগোরনো-কারাবাখ ঘিরে সাম্প্রতিক যে সংঘাত শুরু হয়েছে তিনিই (এরদোয়ান)...এর প্রধান উসকানিদাতা এবং হোতা।

Advertisement

ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর অভিযোগের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বাশার আল-আসাদ বলেন, নাগোরনো-কারাবাখ সংঘাতে লড়তে সিরীয় জিহাদীদের সেখানে মোতায়েন করেছে তুরস্ক। দামেস্ক এটি নিশ্চিত করতে পারে। তবে এই অভিযোগের ব্যাপারে কোনও ধরনের প্রমাণ দিতে পারেননি সিরীয় এই প্রেসিডেন্ট।

আঙ্কারা এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া না জানালেও আর্মেনিয়া একই ধরনের অভিযোগের মাধ্যমে তুরস্কের ব্যাপারে অন্ধ প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছে।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিবাদপূর্ণ নাগোরনো-কারাবাখের মালিকানা ঘিরে প্রতিবেশি দুই দেশে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। ১৯৯০ এর দশকের পর এই অঞ্চলে এত বড় সংঘাত আর কখনও দেখা যায়নি।

এই সংঘাত টেনে এনেছে তুরস্ক, রাশিয়া, ফ্রান্স, সিরিয়ার মতো রাষ্ট্রগুলোকে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান আজারবাইজানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। অন্যদিকে, রাশিয়ার সঙ্গে আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা চুক্তি রয়েছে।

নাগোরনো-কারাবাখে আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের ৯ দিনের সংঘাতে আড়াই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। উভয়পক্ষের গোলা, রকেট ও ড্রোন হামলায় আরও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। দুই দেশই প্রতিপক্ষের ট্যাঙ্ক, ড্রোন ও হেলিকপ্টার ধ্বংস করার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে।

সূত্র: রয়টার্স।

এসআইএস/পিআর