জাতীয়

করোনায় ৫৩ শতাংশ পরিবার কম খেয়ে থেকেছে : বিবিএস

মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) চলাকালীন (এপ্রিল থেকে বর্তমান) দেশের প্রায় ৫২ দশমিক ৫৮ শতাংশ পরিবার খাবার খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ‘জীবিকার ওপর ধারণা জরিপ ২০২০’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে।

দৈবচয়নের মাধ্যমে মোট দুই হাজার ৪০টি মোবাইল ফোন নম্বর নির্বাচন করে এ জরিপ করা হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে প্রতিবেদনের এ তথ্য তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘করোনার সময় প্রায় ৫২ দশমিক ৫৮ শতাংশ পরিবার/খানা কোনো না কোনোভাবে খাদ্যদ্রব্য ভোগের পরিমাণ ২০২০ সালের মার্চের তুলনায় কমিয়েছে। তাদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ পরিবার/খানা মাসিক আয় কমার কারণে খাদ্যদ্রব্য ভোগের পরিমাণ কমিয়েছে বলে মত প্রকাশ করে।’

Advertisement

চলতি বছরের মার্চ মাসের তুলনায় আগস্টে পরিবার/খানাগুলোর মাসিক গড় আয় আনুমানিক ২০ দশমিক ২৪ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে মাসিক গড় ব্যয় মাত্র ৬ দশমিক ১৪ কমেছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, শতকরা প্রায় ৬৮ দশমিক ৩৯ ভাগ পরিবার/খানা কোনো না কোনোভাবে করোনার অভিঘাতে আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। বিশেষ করে রিকশা/ভ্যানচালক ও দিনমজুররা অধিক মাত্রায় আর্থিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছেন।

করোনাকালীন আর্থিক সংকট মোকাবিলায় প্রায় ২১ দশমিক ৩৩ শতাংশ পরিবার/খানা সরকারি সহায়তা/ত্রাণ গ্রহণ করেছে। সরকারি সহায়তা/ত্রাণ গ্রহণকারী এ খানা/পরিবারগুলোর ৯৮ দশমিক ৪৪ শতাংশের আগস্ট মাসে এবং ৮২ দশমিক ৬৪ শতাংশের মার্চ মাসের গড় আয় ছিল ২০ হাজার টাকা বা তার কম।

বিবিএসের দাবি, এ থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, সরকারি সহায়তা/ত্রাণ বেশিরভাগ নিম্নআয়ের পরিবার/খানাগুলো পেয়েছে।

Advertisement

উত্তরদাতাদের পেশাগত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছরের মার্চ (১০ দশমিক ২৩ শতাংশ), এপ্রিল-জুলাই (৯ দশমিক ২২ শতাংশ) এবং সেপ্টেম্বর (১০ দশমিক ১৩ শতাংশ) মাসে কৃষিজীবীর সংখ্যা স্থিতিশীল রয়েছে।

মার্চ মাসে ব্যবসায়ীর (১৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ) সংখ্যা এপ্রিল থেকে জুলাই মাসে কমেছে (৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ)। তবে এ সংখ্যা সেপ্টেম্বর মাসে পুনরায় বৃদ্ধি পেয়েছে (১৬ দশমিক ৫১ শতাংশ)। একইভাবে দিনমজুরের সংখ্যা মার্চ মাসে ৮ দশমিক ২১ শতাংশ থেকে এপ্রিল-জুলাইয়ে ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ কমলেও সেপ্টেম্বরে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশে পেশাজীবীর সংখ্যা প্রায় মহামারির আগের অবস্থানে ফেরত এসেছে।

মার্চে বেকার/কর্মহীনের শতকরা হার ছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশ। যদিও এপ্রিল-জুলাইয়ে এ হার বৃদ্ধি পেয়ে ২২ দশমিক ৩৯ শতাংশ হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে এ হার দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

তবে বিবিএস বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশে একটি গতিশীল শ্রমবাজার বিদ্যমান রয়েছে, যা অত্যন্ত ইতিবাচক। অর্থাৎ বর্তমানে আমরা করোনা মহামারির অভিঘাত ক্রমান্বয়ে কাটিয়ে উঠছি।

পিডি/এসআর/এমএস