বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড উদ্ভাবিত করোনার টিকার বিষয়টি মার্কিন বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস বিষয়ক জার্নাল বায়োআর্কাইভে প্রকাশিত হয়েছে। স্বত্বাধিকার ঠিক রাখার জন্য করোনার টিকা উদ্ভাবনকারী বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কোনো জার্নালে প্রকাশের আগে বায়োআর্কাইভে তাদের প্রকাশনা করে থাকে। জার্নালে প্রকাশ করতে কয়েক মাস বাড়তি সময় লাগায় এখানে তারা প্রকাশনা করে থাকে, যাতে অন্য কেউ সেটার স্বত্ব দাবি করতে না পারে। বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেকও তাই করেছে।
Advertisement
বায়োআর্কাইভকে জার্নাল উল্লেখ করে কিছু গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করার পর এটি জার্নাল না পোর্টাল- এ সংক্রান্ত একটি বিতর্ক তৈরি হয়।
এ বিষয়ে রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরের লেকশোর হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন গ্লোব বায়োটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কাকন নাগ।
তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বায়োআর্কাইভে মডার্নার ভ্যাকসিন প্রকাশনা করেছে। ফাইজার-বায়োএনকেও এখানে প্রকাশ করেছে। এটি এখন পর্যন্ত কোনো পিআর রিভিউ জার্নালে পাবলিশ হয়নি। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনেরটাও এখানে প্রকাশিত হয়েছে। জনসনের ভ্যাকসিনও প্রথমে বায়োআর্কাইভে প্রকাশিত হয়েছে। এখান থেকে আমরা একটা জিনিস পরিষ্কার বুঝতে পারছি যে, যেগুলো হাই-ইমফরর্ট্যান্ট (খুবই গুরুত্বপূর্ণ) সেগুলোই কিন্তু এখানে প্রকাশ করা হয়। এটি কারও ফেসবুক নয়। এখানে পাবলিকেশনের জন্য কিছু নিয়ম আছে। এখানে স্ক্রিনিং কমিটি আছে। যারা হোস্টিং হারবারের গবেষণাগারের মাধ্যমে নিয়োজিত এক্সপার্ট। ওখানে জমা দেয়ার পরে তারা স্ক্রিন করেন। এরপর তারা সেটা কোয়ালিফাই মনে করলেই কেবল এখানে দেন।’
Advertisement
বায়োআর্কাইভের গুরুত্ব তুলে ধরে কাকন নাগ বলেন, ‘বায়োআর্কাইভে যে কারণে সবাই প্রকাশনা করে। সেটা হচ্ছে- ঘোষণাটি দিয়ে নিজের অস্তিত্বের জানান দেয়া। নিজের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করা। কারণ এটি আমাদের অরিজিনাল টেকনোলজি। যারাই অরিজিনাল টেকনোলজি নিয়ে এসেছেন, তারা সবাই আগে এই ঘোষণা দিয়েছেন। কারণ এই ঘোষণাটি দেয়ার জন্য একটি ওপেন প্লাটফর্ম দরকার, সেটি যদি আমরা একটি স্বীকৃত জার্নালে বা পিআর রিভিউ বলেন, সেখানে কয়েক মাসের দরকার। এই কয়েক মাসের মধ্যে এই প্রতিযোগিতায় ওই গ্রুপটি হেরে যেতে পারে।’
‘আমরা যেমন এখানে যে কাজটি করেছি, এটি অসম্ভব গর্বের বিষয়। আমরা দুনিয়ার সকল বিজ্ঞানী সকল প্রতিষ্ঠানকে হারিয়ে দিয়েছি, বাংলাদেশের বুকে দাঁড়িয়ে থেকে। এই গর্বটা যদি আমরা বায়োআর্কাইভে করতে না পারতাম, অন্য কেউ এর ভেতরে করে ফেলতেন, তখন সেটিকে নিয়েই আমরা আনন্দ প্রকাশ করতাম, প্রচারণা চালাতাম’, যোগ করেন কাকন নাগ।
বায়োআর্কাইভের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরে গ্লোবের সিইও বলেন, ‘এখানে প্রকাশের জন্য যথেষ্ট সাহসের দরকার হয়। কারণ এটি আমরা পাবলিকলি উন্মুক্ত করে দিয়েছি সবাইকে এখানে সমালোচনা করার জন্য। খুব সুখের বিষয়, এ পর্যন্ত আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে একটিও নেগেটিভ কমেন্ট পাইনি। আমরা সামাজিক যোগাযোগে বাংলাদেশি কমিউনিটির মাধ্যমে অনেক কথা শুনি। সেগুলো মুখের কথা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘চারদিনের ভেতরে আমরা ৬৯ নম্বরে চলে এসেছি ডাউনলোডে। অস্বাভাবিক একটি গর্বের বিষয়। সায়েন্টিফিক কমিউনিটির রেসপন্স অসম্ভব রকমের ভালো। রেসপন্স ভালো বলেই কিন্তু ডাউনলোড হচ্ছে এবং সেই স্কোর আমরা দেখতে পেয়েছি।’
Advertisement
পিডি/এফআর/এমএস