অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘ভাষা আন্দোলনের সময়ে আমাদের দেশে গণমাধ্যম ছিল না। তাই ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস নিয়ে কিছুটা সন্দেহ ও খটকা রয়ে গেছে।’ বুধবার সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমিতে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।‘ভাষার লড়াই ও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন’ নামক বইটির রচয়িতা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস। এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে এসময় আরো বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও কলামিস্ট কামাল লোহানী, বাংলা একাডেমির পরিচালক শামসুজ্জামান খান প্রমুখ।অর্থমন্ত্রী এ সময় আরো বলেন, ‘আমরা সম্ভবত বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন একটি ভাষার উত্তরাধিকারী। সে হিসেবে আমরা গর্বিত। ঐতিহাসিকভাবে আমাদের ভাষা স্বীকৃত, এটি অবশ্যই গর্বের।’তিনি গোলাম কুদ্দুসের লিখিত বইটিকে ভাষা আন্দোলন নিয়ে লিখিত বইগুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ বলে উল্লেখ করেন। এসময় ভাষা আন্দোলনে নিজের অংশগ্রহণ নিয়ে স্মৃতিচারণও করেন মন্ত্রী।সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের সময়ে সাংবাদিকদের অনেক ধরনের বাধা-চাপ ছিল। সে কারণেই তারা চাইলেও সবকিছু লিখতে পারেননি।’কামাল লোহানী বলেন, ‘যে ভাষার জন্যে আমাদের দেশের যোদ্ধারা রক্ত দিয়েছিলেন আমরা কি সে ভাষায় কথা বলি? দুর্ভাগ্য, কয়দিন আগে আমি বিদেশ গিয়েছিলাম। সেখানে দেখলাম আমাদের প্রজন্ম বাংলায় কথা বলতে পারলেও পরবর্তী প্রজন্ম আর পারে না।’তিনি আরো বলেন, ‘ভাষাযুদ্ধের সময়ে ইংরেজি কিংবা ভিন্ন কোনো ভাষায় বিলবোর্ডে কোনো লেখা থাকলে তা কাপড়ে ঢেকে দেয়া হতো। আর এখন বেশিরভাগ বিলবোর্ডে ইংরেজিতে লেখা। বাড়িগুলোতে নাম খোদাই করা ইংরেজিতে। আমরা যাচ্ছি কোথায়?’ভাষার লড়াই ও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন বইটিকে তিনি ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাসের বই বলে অভিহিত করেন। যদিও এসময় তিনি বইটিতে উল্লেখ করা কয়েকটি ইতিহাসের বিষয়ে তার দ্বিধার কথা জানান।বক্তারা বইটিকে দীর্ঘ পরিশ্রমের ফসল বলে উল্লেখ করেন। এসময় বক্তারা বইটির বিভিন্ন বিষয়ে তাদের প্রশ্ন তুলে ধরেন। কয়েকটি বিষয়ে তাদের মতানৈক্য ও দেখা যায়।বইটির লেখক গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘আমাদের বাংলা ভাষার ইতিহাসে নানা অসঙ্গতি রয়েছে। আমি বইটির পিছনে দীর্ঘ ছয় বছর ব্যায় করেছি। প্রায় ১০০টিরও বেশি বই পড়ে সত্যটা বের করে আনার চেষ্টা করেছি।’এমএইচ/বিএ
Advertisement