জেলহত্যাকাণ্ডের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ত্রাণ ও দুর্যোগমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, ‘খুনিরা জাতীয় চার নেতাকে যখন গুলি আর ব্রাশ ফায়ার করছিল, তখন মনে হচ্ছিল যেন জেলখানার দেয়াল ভেঙে পড়ছে।’জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এমন স্মৃতিচারণ করেন তিনি। শহীদ এম মনসুর আলী স্মৃতি সংসদ ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।মায়া বলেন, জাতীয় চার নেতার সঙ্গে আমাদেরও গ্রেফতার করা হয়েছিল। খুব কাছে থেকে দেখেছিলাম, সে দিনের নৃশংসতা। সেদিন জেলখানার পাগলা ঘুণ্টি আর খুনিদের বুটের শব্দে মধ্যরাতের নিরবতা ভেঙে যায়। পাখপাখালি আর কাকের ডাক সেদিন নগরবাসীকেও জাগিয়েছিল। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি আরো বলেন, পাগলা ঘুণ্টি বাজানোর কয়েক মিনিট পরেই খুনিরা কারাগারে প্রবেশ করে। আমাদের মাঝ থেকে জাতীয় চার নেতাকে এক এক করে ১ নম্বর কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা পাশের ২ নম্বর কক্ষে। সব কাছ থেকে দেখছিলাম। সে দিনের ঘটনা বর্ণনা করার ভাষা খুঁজে পাই না। কোনো জাতির জীবনে যেন এমন রাত আর না আসে। সে রাত ছিল আমাদের কাছে কিয়ামতের। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে চার নেতা নিজের জীবন বিলিয়ে দিতে সামান্য কুণ্ঠাবোধ করেননি উল্লেখ করে মায়া বলেন, জাতীয় চার নেতাকে যখন একটি কক্ষে নেয়া হচ্ছিল তখন আমরা ভয় পাচ্ছিলাম। কিন্তু চার নেতার মধ্যে সামান্য কুণ্ঠা কাজ করতে দেখিনি। তারা হাসতে হাসতে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতার আদর্শ ধরে রেখেই ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলে কোনো শক্তি জাতিকে পরাস্ত করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে মায়া বলেন, তিনি (খালেদা) মানুষ হত্যার পাপে জর্জরিত। এই পাপের খেসারত তাকে দিতে হবেই। কোনো বিবেকবান মানুষ বিএনপি করতে পারে না বলেও তিনি অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কামরুল হাসান খান, বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ডা. ইকবাল আর্সনাল প্রমুখ।এএসএস/একে/পিআর
Advertisement