নাশকতার অভিযোগে দায়ের হওয়া শতাধিক মামলায় অনেক আগে থেকেই বেশামাল হয়ে আছে খুলনা মহানগর বিএনপি। তার উপর সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এমনিতেই রয়েছে টালমাটাল অবস্থায়। সেই টালমাটাল অবস্থা থেকে চরম বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে দলের সাধারণ সম্পাদক পদে থাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. মনিরুজ্জামান মনিকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি। এখন যেকোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন তিনিসহ নগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, এই আশঙ্কা জেকে বসেছে নেতাকর্মীদের মনে।২০১৪ সালের পর খুলনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে শতাধিক মামলা দায়ের হয়। এসব মামলায় আসামি করা হয় তিন হাজার নেতাকর্মীকে। যাদের অধিকাংশই মাঠের কর্মী। তবে যেকোনো উপায়ে মামলায় জামিন না নিয়ে গ্রেফতার এড়িয়ে চলছিলেন নগর বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা। কিন্তু এখন যেকোনো সময় তাদেরকে গ্রেফতার করা হতে পারে এমন আলোচনা জোরালো হয়ে উঠেছে খুলনায়।সূত্রানুযায়ী, নাশকতার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় অনেকেই এখনো গ্রেফতার এড়িয়ে চলছেন। অনেকে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জেলে আছেন। কেউ কেউ জামিনও পেয়েছেন। এসব বিষয়ে খুলনা বিএনপি এমনিতেই টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু সেই টালমাটাল অবস্থার মধ্য পূণর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় দলে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। যা এক পর্যায়ে সংঘাতে রূপ নেয়। ফলশ্রুতিতে দলে পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠনও শুরু হয়। যা নেতাকর্মীদেরকে দোটানায় ফেলে দেয়। দল পড়ে বেকায়দায়।দলে বিভক্তি যখন প্রকাশ্যে চলে এসেছে তখন কাটা ঘায়ে নুন দেয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির সিটি মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি।গত ২ নভেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত সিটি মেয়র মনিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, বিপুল উৎসাহ নিয়ে সর্বশেষ সিটি নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীরা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকে পরাজিত করে মনিরুজ্জামান মনিকে মেয়র নির্বাচিত করেন। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে নেতাকর্মীরা তার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে থাকেন। আন্দোলন সংগ্রামের সময় খুলনায় উপস্থিত না থাকা, দলীয় কর্মকাণ্ডে সময় না দেয়া, ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সঙ্গে আতাতসহ বিভিন্ন অভিযোগই তাকে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। তবুও তিনি ছিলেন নগর বিএনপির একটি বিশাল শক্তি। কিন্তু বরখাস্ত হওয়ায় এখন সেই শক্তিও হারালো বিএনপি।সূত্র আরো জানায়, উল্লিখিত কারণে সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে দলের মধ্যে চাপা ক্ষোভ দীর্ঘদিন ধরেই বিরাজ করছে। কিন্তু মেয়রের পদ থেকে বরখাস্ত হওয়ায় এখন দলে তার অবস্থান একেবারেই নড়বড়ে হয়ে গেছে। এখন সাধারণ সম্পাদকের পদ ধরে রাখার জন্য তাকে লড়াই করতে হবে। একই সঙ্গে খুলনায় বিএনপি চরম বেকায়দায় পড়েছে। তবে নগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু জাগো নিউজকে বলেন, অবৈধভাবে সিটি মেয়রকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এই বরখাস্তের বিরুদ্ধে তিনি আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন বলেও জানান। তবে বরখাস্তের বিষয়টি দলের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেও জানান তিনি।আলমগীর হান্নান/এমজেড/পিআর
Advertisement